Sylhet Today 24 PRINT

লিডিং ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষককে ‘নিয়মবহির্ভূতভাবে’ বরখাস্ত, আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৫ অক্টোবর, ২০২৩

রোববার সকালে লিডিং ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা

সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের দুই শিক্ষককে নিয়মবহির্ভূতভাবে বরখাস্ত করার অভিযোগ ওঠেছে। এই দুই শিক্ষককে পুনর্বহাল দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকালে দক্ষিণ সুরমার কামালবাজার এলাকার ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারারের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

শিল্পপতি রাগীব আলীর মালিকানাধীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কদিন ধরেই নানা অস্থিরতা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলাকে সরাতে একটি গোষ্ঠি মরিয়া হয়ে ওঠেছে। এই গোষ্ঠিই দুই শিক্ষককে নিয়মবহির্ভূতভাবে বহিস্কার করে বলে অভিযোগ ওঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বনমালী ভৌমিকের ইন্ধনে এসব হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

রোববার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন। এই সুযোগে ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়ে গত ১২ অক্টোবর স্থাপত্য বিভাগের প্রধান রাজন দাশ এবং শিক্ষক স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেনকে বরখাস্ত করেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, নিয়মবহির্ভূতভাবে দু’জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের অনতিবিলম্বে বহাল করতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত স্থাপত্য বিভাগের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এসব বিষয়ে জানতে বনমালী ভৌমিকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দুজন শিক্ষকের কিছু অনিয়ম নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, “দুই শিক্ষক যখন নোটিসের কোনো জবাব দিচ্ছিলেন না, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ বডির সিন্ডিকেট সদস্যদের যা মনে হয়েছে তারা তা করেছেন।

“এখন শিক্ষার্থীরা দাবি করছে, শিক্ষকদের পুনর্বহাল করতে হবে। কিন্তু এটা আমাদের এখতিয়ারের বাইরের বিষয়। এখানে যারা অথরিটি আছেন তারা এ বিষয়ে বলতে পারবেন। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিজে কথা বলার চেষ্টা করছি। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আমাকে সম্মান জানাতে হবে।”

এ বিষয়ে রাজন দাশ বলেন, “উপাচার্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা অবস্থায় নিয়ম নিয়মবহির্ভূতভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, ট্রাস্টি বোর্ডের নির্দেশে কাউকে নিয়োগ বা বরখাস্ত করা যায় না দাবি করে রাজন দাশ বলেন, “এ ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। গত আট মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয় নানা অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে।”

তিনি আরও বলেন, “ভুয়া অভিযোগে গত ১১ অক্টোবর আমাকে শোকজ করা হয়; শোকজের জবাব দেওয়ার জন্য আমি ১০ দিন সময় চেয়েছিলাম; কিন্তু সময় দেওয়া হয়নি। তারা জবাব দেওয়ার জন্য তিনদিন সময় দেন। শোকজের কাগজ ৯ তারিখে স্বাক্ষরিত হলেও আমি ইমেইল পাই ১১ তারিখ। এর এক দিন পরই (১২ অক্টোবর) আরেক মেইলে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বরখাস্ত আদেশ পাঠানো হয়।”  

শিক্ষক-স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেন বলেন, “ছাত্রদের কোর্স শেষ করার জন্য চার মাস সময় চেয়েছিলাম, তা আমাকে দেওয়া হয়নি। নিয়মবহির্ভূতভাবে এটা করা হয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ডের নির্দেশে এসব করা হয়েছে; বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নানা অনিয়ম রয়েছে।”

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.