Sylhet Today 24 PRINT

একুশের দিনে সিকৃবিতে পাখির জন্য ভালোবাসা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

“ভোরের কুয়াশা ভেদ করে সকালের প্রাকটিক্যাল ক্লাসে গিয়ে মনোযোগের সাথে স্যারের লেকচার শুনছি। হঠাৎ পিছনের দিকে শোরগোল- যেন বাঘের আগমন! কিন্তু এ কি! কি সুন্দর শালিক! সাইফুল, জুনেদের দিকে চেয়ে দেখি চোখে কি উজ্জ্বল আভা। আমার অবস্থা নাই বললাম। ক্লাসের শেষে তিন পাগলারই এ কি ভাবনা- “শালিক কেন ক্লাসে? নিশ্চয়ই বাসার অভাব?” আমরা আমাদের ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিব- সব সৃষ্টির মাঝে ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে।

নির্বাচন করলাম ভালোবাসার দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি । গাছে গাছে কলসি বেঁধে দেব। এভাবেই গত বছর থেকে শুরু হয় ভালোবাসা দিবসে “পাখির জন্য ভালোবাসা”- বলছিলেন মনজুর কাদের চৌধুরী।

“কিন্তু এবার ভার্সিটির ক্লাস থাকায় ১৪ই ফেব্রুয়ারি না করে একুশে ফেব্রুয়ারিতে একুশটি কলস লাগাব বলে সিদ্ধান্ত নেই।”—যোগ করলেন জুনেদ।

“তোমার আশপাশ হোক প্রাণীদের অভয়াশ্রম”-এ প্রতিপাদ্যে গত দুই বছরের মতো এবারও কিছু বিশেষ পাখি যেমন : ময়না কিংবা কুঠুরিতে বাস করা পেঁচা দের আবাসের জন্য ক্যাম্পাসে গাছে গাছে হাড়ি বেধে দিয়েছে ক্যাম্পাসের এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার বিষয়ক সংগঠন প্রাধিকারের সহযোগিতায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদের ১৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। দিনে দিনে পাখিরা হারিয়ে যাচ্ছে। হারাচ্ছে তাদের আবাস। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় মানুষই পাখিদের আবাসভূমি নষ্ট করছে। আমরাও দিন দিন প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি । বাড়ছে মানুষের বসবাসের ঝুঁকি ।

এ অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা প্রাধিকার সংগঠক মনজুর কাদের চৌধুরী বলেন –“যে পাখি ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে খাদ্য বা ফসল উৎপাদনের নিশ্চয়তা দিত , আজ এরা বিলুপ্তির পথে। আমরাও রাসায়নিক কীটনাশক নির্ভর হয়ে পড়ছি । যে কীটনাশক পোকা মাকড়ের মেরে ফেলে … সেটা কি আমাদের ক্ষতি করছে না?? আমরা উচ্চতর জীব বলে প্রভাব কম। ” অপর উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম বলেন- “গাছের সংখ্যা দিনে অনেক কমে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল থাবা আমাদের উপর দিয়ে যাবে যদি সচেতন না হই । সবাই মিলে গাছ না লাগাই”।


এ প্রোগ্রামের অপর উদ্যোক্তা জুনেদ আহমদ বলেন– “আমরা চাই আমাদের প্রকৃতি সুন্দর থাকুক। যেমনি সুন্দর হয়েছিল আমাদের মাতৃভাষা , কিছু মানুষের আত্মত্যাগের কারণে । মহান মাতৃভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছিলেন তাদের শ্রদ্ধার্থে আমাদের এ কাজ উৎসর্গ করলাম।” নিজেদের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গাছে নানা আকারের মাটির কলস বেঁধে দেয়া হয়। পানি ও বাতাস নিষ্কাসনের জন্য কলসগুলোতে কয়েকটি ফুটো করে দেন তারা। ভালোবাসা দিবসের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসের একুশটি গাছে একুশটি কলসি বাঁধেন উদ্যমী তরুণের দলটি।

তরুণ দলটিতে উপস্থিত ছিলেন — ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও প্রাধিকার সদস্য সৌরভ , সুজন সর্দার , তুহিন , মামুন , শুভ ,বিশ্বজিৎ ,পলাশ ,সাহরুল ,রাকিব ,উজ্জ্বল , লিটন , সানি , হাসিব ,আবির , ইমরান , মজিদ , পলাশ , সুজন , কলি ,প্রান্ত , নাহিদ , মেশকাত , চামেলী , পপি , সুস্মিতা , সান্দ্রা , তানিয়া , মুক্তা , রাজন , সুবির ,বিনায়েক , ফয়েজ , সাইদুল ,রাজু , শতাব্দী ও প্রনজিত । ২১ তম ব্যাচের রিফাত , রাহি সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট জেলা শাখার সেক্রেটারি আব্দুল করিম কিম ও সদস্য বদরুল আলম।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.