শাবি প্রতিনিধি | ২২ আগস্ট, ২০১৬
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: সামিউল ইসলামের বিরুদ্ধে থিসিসে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিভাগের এক সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর নাম বিথী দেবনাথ। তিনি লোক বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষা বর্ষের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক মো: সামিউল ইসলামের অধীনে থিসিস (চধফ-৬১১) কোর্স সম্পন্ন করে্ন।
বিথী দেবনাথ সনাতন ধর্মাবলম্বী হওয়ার পরও থিসিস পেপারে স্বীকারোক্তি অংশে “সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর” লিখতে বাধ্য করা হয় বলেও জানা গেছে।
থিসিস পেপারটিকে নিরপেক্ষ পরীক্ষকের মাধ্যমে পুনঃমূল্যায়ন করার জন্য বিভাগীয় প্রধানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে গত ৭ আগস্ট লিখিত দাবি জানিয়েছেন বিথী দেবনাথ।
লিখিত অভিযোগ পত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ¯স্নাতকোত্তর পর্যায়ে দুটি সেমিস্টারের সম্মিলিত ফলাফলে সিজিপিএ ৩.৫৫ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করলেও ১২ ক্রেডিটের থিসিসে (চধফ-৬১১) ইচ্ছাকৃতভাবে অপেক্ষাকৃত কম নম্বর দেয়া হয়েছে।
থিসিস মূল্যায়নের কোনো এক পর্যায়ে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বর্তমানে তিনি মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছেন বলেও অভিযোগ পত্রে উল্লেখ রয়েছে।
বিথী দেবনাথের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই শিক্ষক বিভাগের তার পছন্দের এক ছাত্রীকে শিক্ষক বানানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে কম নম্বর দিয়ে বঞ্চিত করেছেন।
বিথী আরও জানান, আমার থিসিস পেপারে একনলেজমেন্ট অংশে “সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর” লিখতে বাধ্য করা হয়েছিলো।
তবে এ ব্যাপারে শিক্ষক সামিউল ইসলাম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এই অভিযোগটি পুরোপুরি মিথ্যা, একনলজমেন্ট দেখার দায়িত্ব নয় আমার, আমি ভেতরের কন্টেন দেখেছি, একনলজমেন্টে কে কি লিখবে সেটা তার নিজের ব্যাপার।"
বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মোট ১০০ নম্বরের থিসিস রিপোর্টের ভাইভা, প্রেজেন্টেশন এবং এক্সটারনাল শিক্ষকের কাছে তিনি “এ মাইনাস” নম্বর পান। কিন্তু থিসিস পেপারের তত্ত্বাবধায়ক সামিউল ইসলাম এর জন্য বরাদ্দকৃত ত্রিশ শতাংশ নম্বরের মধ্যে কম নম্বর দেয়ায় তার রেজাল্ট “বি প্লাস” চলে আসে। ফলে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রথম স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে নেমে যান বিথী দেবনাথ। বিথী দেব নাথ স্নাতকে সিজিপিএ ৩.৪৫ পেয়ে প্রথম স্থান করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, সামিউল ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তখন তিনি শাহপরান হলের বি ব্লকের চতুর্থ তলায় শিবির নিয়ন্ত্রিত একটি কক্ষে থাকতেন। তৎকালীন শিবির সভাপতি আবদুর রব এর সাথে ক্যাম্পাসে বাইকে করে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বলেও জানান তিনি।
কিন্তু শিক্ষক হওয়ার পর আওয়ামীলীগ সমর্থিত শিক্ষক প্যানেলে (একাংশ) যোগদান করেন।
বিষয়টি নিয়ে সামিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কথা বলবেন না বলে জানান।
লোক প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, চূড়ান্ত ফলাফল এখনও প্রকাশিত হয়নি। শিক্ষার্থীর অভিযোগের বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান তিনি।