Sylhet Today 24 PRINT

ফের রাবির নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিলো আ.লীগ, উপ-উপাচার্যকে হত্যার হুমকি

রাবি প্রতিনিধি |  ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

আবারো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামীলীগ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা ও ১০টার নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেয় মহানগর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, রাবিছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এরআগে ২১ ডিসেম্বর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের আয়া ও মালি পদের নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দেয় আওয়ামীলীগ।

সকালের পরীক্ষায় বিবিলওগ্রাফার কাম রেফারেন্সসহকারী ২ জন ও ক্যাটালগার একজনের পদের বিপরীতে মোট ৭০ জন অংশ নেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পরীক্ষা দিতে ঢুকলেও নেতাকর্মীরা বের করে দেয়।

১০-১১টায় ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটরে ২০ পদের বিপরীতে ৩১০০ জনের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে তারা পরীক্ষা দিতে ঢুকতেই পারেনি। বিকেল ৩-৪টায় গ্রন্থাগার সাকারীসহ ৪ পদের বিপরীতে ১৫০ জনের পরীক্ষা অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো ফটকও বন্ধ করে দিয়ে সেখানে অবস্থান নেয় তারা। যেসব ভবনে পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে সেসব ভবনের গেট বন্ধ করে সামনে অবস্থান নেয় নেতাকর্মীরা। অনেকের এডমিডকার্ড ছিড়ে ফেলার অভিযোগও উঠে।  

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান বলেন, ‘একদল যুবক শ্রেণির মানুষ যারা ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান দিয়ে এসেছে।

এসে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। তাতে বোঝা যায় যে, আওয়ামীলীগের লোকজনই বন্ধ করে দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের বের করে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। পরীক্ষার্থীদের যেমন বাধা দিচ্ছে আবার যেসব শিক্ষক পরীক্ষা নেবেন তাদেরও বাধা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি যেনো পরীক্ষা নেওয়া যায়।’

উপ-উপাচার্য আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীই তো নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। সবাই দেখতেও পাচ্ছে তারা এসব কাজকর্ম করে যাচ্ছে, পরীক্ষা বন্ধ করে দিচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে তারা আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।’

তবে পরীক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি খারাপের সংবাদ শুনে আমরা সকালে যাই। পরিস্থিতি যেনোখা রাপ না হয় সেজন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে কোনো পরীক্ষার্থীকে বের করে দিইনি। এখন আমরা চলে এসেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থানে ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। এ সময়তিনিবলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়োগ না দিয়েজামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের চাকরি দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই আমরা এই নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের সঙ্গে আলোচনায় আসতে হবে, নয়তো আন্দোলন চলবে।’

এদিকে এই নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করতে রাবিউপ-উপাচার্য এবং আইসিটি সেন্টারের প্রশাসককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে এই দুই শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে অস্ত্র হাতে মহড়া ও হুমকি দেওয়া হয় বলে জানান তারা।    

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়ায় আমার বাড়িতে গিয়ে ৫০-৬০ জনের একটি দল আজকের পরীক্ষা বন্ধ করতে বলে। না করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।’

আইসিটি সেন্টারের প্রশাসক কে খাদেমুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘মোটরসাইকেলে করে ১০-১২ আমার বাড়িতে এসে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গেছে। তবে তাদেরকে চিনতে পারিনি।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.