Sylhet Today 24 PRINT

‘শিক্ষাব্যয় এক টাকাও বৃদ্ধি করলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে’

রাবি প্রতিনিধি |  ০৪ এপ্রিল, ২০১৭

শিক্ষাব্যয় পাঁচগুণ বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্র ফেডারেশনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা। সেই সঙ্গে দাবিগুলো মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবিগুলো তুলে ধরা হয়।

তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- ইউজিসির কৌশলপত্র বাতিল করতে হবে, শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে, ক্যাম্পাস থেকে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার করতে হবে ও অবিলম্বে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফেডারেশনের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তমাশ্রী দাস বলেন, ‘আগামী বাজেটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের বেতন পাঁচ গুণ বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী তা একদম অবাস্তব। সঙ্গত কারণেই দেশের ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আমরা তার এই ঘোষণাকে ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি এবং এক টাকাও বৃদ্ধি করার পাঁয়তারা করলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্কট তুলে ধরে তমাশ্রী দাস আরো বলেন, ‘দেশের মানুষের টাকা মানুষের সুশিক্ষা প্রদানের কাজে ব্যবহৃত হবে। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সেখানে বিবেচনায় আসবে না। কিন্তু সরকার সে পথে হাটেন নি। বিশ্বব্যাংক ও ইউজিসির ২০ বছর মেয়াদী কৌশলপত্রে বর্ণিত পথে হাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। টাকা যার, শিক্ষা তার এই নীতি গ্রহণে করে ক্রমাগত বাড়াচ্ছেন শিক্ষাব্যয়।’

এ বিষয়ে এই নেত্রী আরো বলেন, ‘সরকার চলছেন বিশ্বব্যাংকের ইশারায়। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ আর ইউজিসি মিলে শিক্ষাকে একটি লাভজনক ব্যবসায়িক খাত হিসেবে দেখিয়ে ২০ বছর মেয়াদী একটি কৌশলপত্র হাজির করেছেন। তারা চান, ২০২৪ সাল নাগাদ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজ খরচে চলবে এবং আয়ের উৎস হিসেবে নির্ভর করতে হবে শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর।’ অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য এই কৌশল বাস্তবায়নেরই একটি পদক্ষেপ বলেও উল্লেখ করেন তমাশ্রী।

বর্তমান সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রের ব্যর্থতা তুলে ধরে তমাশ্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধি, সান্ধ্যকোর্স, সান্ধ্যআইন, ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজী, যৌন হয়রানি, ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রাখাসহ শিক্ষা বিধ্বংসী সব কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদদ যুগিয়েছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি কিংশুক কিঞ্জল বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষার্থী অল্প কিছু টাকা বাড়ানোর পক্ষে কথা বললেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী এর বিপক্ষে রয়েছে। যারা বাড়ানোর পক্ষে কথা বলছেন তারা জানেন না, এখানে এক টাকা বাড়ানো হলেও সেই টাকা শিক্ষার্থীদের কোন কাজে আসবে না। টাকাগুলো মন্ত্রী-আমলাদের পকেটেই ঢুকবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধির বক্তব্য সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এরপরও যদি শিক্ষাব্যয় এক টাকাও বৃদ্ধির পাঁয়তারা করা হয় তবে আমরা প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো বসে আন্দোলনের রুপরেখা তৈরি করবো। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দ্রুত বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো।’

ছাত্র ফেডারেশনের রাবি শাখার সদস্য আলী সম্প্রীতির সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন মোড়ল, রাজনৈতিক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মহব্বত হোসাইন মিলন ও সদস্য রাশেদ রিমন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.