Sylhet Today 24 PRINT

বারবার ছাত্রী লাঞ্ছনা ও নির্যাতনে জড়িয়ে পড়ছে শাবি ছাত্রলীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১১ এপ্রিল, ২০১৭

ছাত্রীর উপর হামলা, লাঞ্ছনা, যৌন হয়রানিতে বারবার জড়িয়ে পড়ছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) ছাত্রলীগ নেতাদের নাম। এমন অভিযোগে শাস্তিও ভোগ করতে হয়েছে একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকে। তবু দমানো যাচ্ছে না তাদের।

দেশজুড়ে তোলপাড় হওয়া কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের উপর হামলাকারী বদরুল আলমও ছিলেন শাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তারকে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে কোপানো হয়। এ ঘটনায় আদালতে দোষি সাব্যস্ত হয়ে শাস্তি ভোগ করছেন বদরুল।

শুধু খাদিজা নন, শাবি ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে লাঞ্ছিতের অভিযোগ রয়েছে আরো কয়েকটি। ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি গণিত বিভাগের এক ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের নামে যৌন হয়রানী করে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এ ঘটনায় জড়িত কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন রাজু, সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী অসীম বিশ্বাস, গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, মাহমুদুল হাসানকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি আরেক ছাত্রলীগ কর্মী রাহাত সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী যৌন হয়রানি অভিযোগ করে।

সর্বশেষ গত ৮ এপ্রিল সিলেট নগরের পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠে। ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগে জানায়, তাকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছুঁড়ে ও থাপ্পড় মারে ছাত্রলীগ কর্মী সমাজকর্ম বিভাগের মাহমুদুল হাসান রুদ্র এবং পরিসংখ্যান বিভাগের এস এন সাজ্জাদ রিয়াদ।

পরবর্তীতে সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাওয়ায় ও ছবি তোলায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাবি প্রেসক্লাবের সহসভাপতি,সকালের খবরের প্রতিনিধি সৈয়দ নবীউল আলম দিপু ও সাধারণ সম্পাদক,অবজারভারের প্রতিনিধি সরদার আব্বাস আলীর উপর হামলা চালায় ১০/১৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী।

এসব অভিযুক্তদের প্রায় সকলেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিবন চক্রবর্তী পার্থের অনুসারী বলে জানা গেছে। কেবল ছাত্রী লাঞ্ছনা ও যৌন হয়রানিই নয়, গত বছরের ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ফাও খেতে না পেয়ে একটি রেস্টুরেন্টে ভাংচুর চালায় পার্থের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মোশারফ হোসেন (রাজু), সহ-সম্পাদক প্রিতম দাশ জনি, স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অসীম বিশ্বাস ও সদস্য উজ্জল সাহা। পরে রাজুকে ১৭ অক্টোবর সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, সব অভিযোগ সত্য নয়। কয়েকটি অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত ৮ এপ্রিলের ঘটনারও যদি প্রমাণ থাকে তবে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মুনশী নাসের ইবনে আফজাল বলেন, সবগুলো অভিযোগই তদন্তাধীন আছে। এর আগে একজনকে শাস্তি দেওয়াও হয়েছিল। আমরা সবগুলো অভিযোগই খতিয়ে দেখছি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.