Sylhet Today 24 PRINT

‘কর্মচারী যদি শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলে তো প্রশাসন কী করে?’

রাবি প্রতিনিধি |  ২২ মে, ২০১৭

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য, গায়ে হাত তোলার জন্য নয়। তারা যদি আমাদের গায়ে হাত তোলে তো প্রশাসন কী করে?

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কর্মচারী কর্তৃক শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে এমনই প্রশ্ন তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে তারা একটি প্রতিবাদী র‌্যালি বের করে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মানববন্ধনে মিলিত হয়।   

মানববন্ধনে রুবেল আরো বলেন, ‘আমরা কোন বিভাগের শিক্ষার্থী, কোন বর্ষের শিক্ষার্থী সেটা মুখ্য নয়, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এটাই মুখ্য। এই বিশ্ববিদ্যালয় টিকে আছে শিক্ষার্থীদের জন্য। সেখানে কর্মচারীরা কী করে এমন ঘটনা ঘটনোর সাহস পায়?’

দীপু কুমারের সঞ্চালনায় মাববন্ধনে মিম আক্তার বলেন, আমরা শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নই। আমরা বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক। কিন্তু আমাদের প্রাপ্য সম্মান শুধু নামেই দেওয়া হয়। শুধু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নয়, একজন ঝাড়ুদারও আমাদের অসম্মান করে কথা বলে। প্রশাসন শুধু প্রশাসন নামেই আছে, কাজে নেই। প্রশাসনের কাজ আজ শুধু খাতা-কলমে আবদ্ধ। তাই ক্যাম্পাস, রাস্তাঘাট, আবাসিক হল কোথাও আমাদের সম্মান রক্ষা করা হয় না, আমরা কোথাও নিরাপদ নই।

এ সময় ওমর ফারুক সরকার বলেন, আজ আমরা লজ্জিত, মর্মাহত, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও সামান্য একজন কর্মচারীর হাতে আমাদের লাঞ্চিত হতে হয়। এ ঘটনা নতুন নয়, বাস-রিকশা চালক, কর্মচারী থেকে শুরু করে বহিরাগত বিভিন্ন হামলার শিকার আমরা। বার বার এমন ঘটনা ঘটছে কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এ সময় কর্মচারী সুমনকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানাতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাদ্দাম হোসন বলেন, একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও সুমন কি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালাতে পারে? বহিরাগত গুন্ডাপান্ডাদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে উঠে কীভাবে শিক্ষার্থীদের মানহানি করে প্রশাসনের কাছ আমারা তার জবাব চাই।

শিক্ষার্থী এম এ শাকিল বলেন, মানিক ও রতনের ওপর হামলার চার দিন পার হয়েছে অথচ প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যদি প্রশাসন তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতো তাহলে এই রোদের মধ্যে আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হতো না। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় কোনো কর্মচারীর নয়।

আশিক মাহমুদ বলেন, কে এই সুমন? কোন শক্তির বলে সে শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলার সাহস পায়। এর পিছনে ইন্ধনদাতা কারা? আর প্রশাসনই-বা নীরব কেনো? প্রশাসনের উচিত শিক্ষার মান বৃদ্ধিও পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদান করা। প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা না করে পদত্যাগ করা উচিত।

মাজহারুল ইসলাম বলেন, যারা আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে তারা কি করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর হাতে লাঞ্চিত হয়। এর কি কোনো জবাব আছে! আমরা অতি দ্রুত এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এমন ঘটনা আরো অনেক ঘটেছে কিন্তু তার কোনো সুষ্ঠু বিচার করা হয়নি। বিচারহীনকার সংস্কৃতির কারণে বার বার শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হচ্ছে বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ফারসি বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.