Sylhet Today 24 PRINT

আর্থিক লেনদেনে আইন বিভাগের সভাপতি জড়িত, দাবি রাবি উপ-উপাচার্যের

রাবি প্রতিনিধি |  ০৩ অক্টোবর, ২০১৯

শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের সাথে আইন বিভাগের সভাপতি জড়িত দাবি করে ফোনালাপের ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদেরকে এ ব্যাখ্যা দেন তিনি। তবে উপস্থিত সাংবাদিকরা এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করলে বেশির ভাগ প্রশ্নেরই স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি।

সম্মেলনে শিক্ষক নিয়োগ চলাকালীন আর্থিক লেনদেন হয়েছে দাবি করে উপ-উপাচার্য একটি ব্যাংক হিসাব, লেনদেনের তথ্য ও একটি ফোনালাপ তুলে ধরেন। উপ-উপাচার্য দাবি করেন, ফোনালাপে কথোপোকথনটি চাকরি প্রত্যাশী নুরুল হুদা ও আইন বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ হান্নানের। ব্যাংক হিসাব দেখিয়ে তিনি বলেন, আইন বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ হান্নানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট এটি। নিয়োগের আগে এই একাউন্ট থেকে আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে। তবে ব্যাংক হিসাবপত্রে ছবির সাথে যুক্ত কোন সিল-স্বাক্ষর দেখা যায় নি।

আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে জেনেও কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘এসব বিষয়ে তদন্ত করা আমার দায়িত্ব নই। আমি গবেষণা, শিক্ষকতা করি।’

সংবাদ সম্মেলনে চৌধুরী মো. জাকারিয়া বলেন, ‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফোনালাপটি আংশিক, খণ্ডিত ও অসম্পূর্ণভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছে। যে ঘটনার সূত্র ধরে এই ইস্যু তৈরি হয়েছে তাহলো আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড ছিল ১৩ নভেম্বর ২০১৮। এর মাত্র ৯ দিন আগে ৪ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে আইন বিভাগের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি দুর্নীতির নথি আমার নজরে আসে। যা ইসলামী ব্যাংকে ২ লক্ষ টাকার একটি লেনদেনের রিসিপ্ট। সেই বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে আমি অনেকটা সাবলীল ভঙ্গিতে আমার নাম ও পরিচয় দিয়ে হুদার স্ত্রীর নিকট হতে টাকার উৎসটি জানার চেষ্টা করি।’ তবে স্বার্থান্বেষী মহল কারা তা নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমি যে রিসিটটা পেয়েছিলাম, সেটা ছিল ডিসেন্ট ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারীর নাম মোহাম্মদ হান্নান (আইন বিভাগের সভাপতি)। সেখানে মোহাম্মদ হান্নানের ছবি ও সহি-স্বাক্ষর রয়েছে। আমাকে ফাঁসিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর, আমি যখন প্রতিবাদলিপি দিয়েছিলাম, তারপর থেকেই গত ২ অক্টোবর হঠাৎ করে টাকা লেনদেনের সেই একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপ উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমার জামাতার নিয়োগের জন্য হুদার চাকরি হয়নি; যা সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ এসময় তিনি সামগ্রিক নিয়োগ-বাণিজ্যসহ আইন বিভাগের নিয়োগ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।

এদিকে উপ উপাচার্যের দাবির বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ হান্নান বলেছেন, ‘ওই একাউন্টটি একটি যুক্ত ও ব্যবসায়িক একাউন্ট। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ধার হিসেবে একটি একাউন্ট থেকে আমাদের ডিসেন্ট ট্রেডার্সের একাউন্টে টাকা আসে। কার্যক্রম হালনাগাদের কাজ চলছে জানিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের একাউন্টটি বন্ধ রেখেছিলো। পরে সেই টাকা ফেরত দেয়া হয়। চাকরির জন্য কেউ আমাকে টাকা দেয়নি। তবে নুরুল হুদার সাথে ব্যবসায়িক কাজে কথা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, উপ-উপাচার্য ব্যাংক একাউন্টের যে কাগজ দেখিয়েছেন তা অসম্পূর্ণ, ছবিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সিল-স্বাক্ষরহীন। এছাড়াও সে কাগজটি শুধু একাউন্টধারীই পেতে পারেন। উপ-উপাচার্য কীভাবে এই কাগজ পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.