Sylhet Today 24 PRINT

শেখ রাসেল স্কুলের নির্মাণকাজে রাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি |  ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯

নির্মাণ কাজ বন্ধ, বসে আছেন শ্রমিকরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্কুলের ঠিকাদারদের কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু এই চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করেছে নির্মাণ কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শিকদার কন্সট্রাকশন।

শিকদার কন্সট্রাকশনের অভিযোগ, স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ গত ৩০ জুলাই শুরুর কয়েকদিন পর থেকেই চাঁদা দাবি করে আসছিলো ছাত্রলীগের নেতারা। গত আগস্ট মাসের প্রথমদিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার মমতাজউদ্দিন ডনের কাছে এই চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তিনি চাঁদা দিতে রাজি হননি।

সুপারভাইজার মমতাজউদ্দিন ডন বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যখন ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন, কিন্তু আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। তাদেরকে বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রীর ভাইয়ের নামে যে প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ চলছে, সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তারা এভাবে চাঁদা দাবি করতে পারে না। এরপর থেকেই তারা প্রতিনিয়ত কাজ বন্ধ করে রাখার জন্য হুমকি দিতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, ‘রোববার দুপুরে ছাত্রলীগের সহসভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্তসহ দুইজন নেতা এসে নির্মাণ কাজের দায়িত্বরত ম্যানেজার আশরাফুলকে তুলে নিয়ে যায়। তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে টাকা না দেয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ করে রাখার হুমকি দেয়।’

এ বিষয়ে ম্যানেজার আশরাফুল জানান, রোববার দুপুর ২টার দিকে ছাত্রলীগের সহসভাপতি বৃত্ত ও অন্য একজন নেতা এসে কাজ বন্ধ করতে বলে চলে যান। কাজ বন্ধ না করায় পরে আবার আড়াইটার দিকে এসে আমাকে গালাগালি করে ও কাজের মালামাল সরবরাহকারী আবু বাক্কারকে মারধর করতে উদ্ধত হয়। পরে তারা দুজন মোটরসাইকেলে করে আমাকে তুলে নিয়ে যান।

তিনি বলেন, তারা আমাকে ডিনস কমপ্লেক্সের পেছনে নিয়ে গিয়ে কাজ বন্ধ না করার কারণ জানতে চান। ৩০ লাখ টাকা দিতে না পারলে, কী পরিমাণ টাকা দিতে পারব সেই বিষয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বসে আলোচনা করতে বলেন। এসময় টাকা না দেয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার হুমকি দেন ওই দুই নেতা।

এদিকে, শেখ রাসেল স্কুলের নির্মাণ কাজ বন্ধের খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাংবাদিক। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে নির্মাণ শ্রমিকরা বসে রয়েছেন। সেখানে নির্মাণ শ্রমিকদের প্রধান মিস্ত্রি শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ছাত্রলীগের দুজন নেতা এসে আমাদের ম্যানেজারকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। তারা দীর্ঘদিন থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। কিন্তু চাঁদা না দেয়ায় তারা আজ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আজ বিকেলে একটি ঝামেলার ঘটনা শুনেছি। সেটি চাঁদাবাজি না অন্য কিছু, তা এখনো আমি জানি না।’

এদিকে, চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার দাবি, আমরা চাঁদাবাজির বিষয়ে কিছু জানি না। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোনো একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ ধরণের অভিযোগ ছড়াচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ ধরণের কোনো ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়।

প্রসঙ্গত, ১০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরি ভবনের সামে ১ দশমিক ৩ একর জায়গা জুড়ে এই স্কুল ক্যাম্পাসের চারতলা ভবন নির্মাণ কাজ চলছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.