Sylhet Today 24 PRINT

তৃতীয় সমাবর্তন উপলক্ষে শাবি সাজছে নতুন সাজে

শাবি প্রতিনিধি |  ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জল্পনা-কল্পনাকে ছাড়িয়ে দীর্ঘ ১৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) তৃতীয় সমাবর্তন। বহুল প্রতীক্ষিত এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ জানুয়ারি।

ইতোমধ্যে সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের এককিলো রোড, গোলচত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন, বিভিন্ন একাডেমিক ভবন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, সারিবদ্ধ গাছ-গাছালি ও দৃষ্টিনন্দন জায়গাগুলো রঙের বাহারে সাজতে শুরু করছে।

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, শিক্ষা ও গবেষণায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা থাকলেও সমাবর্তন আয়োজনের দিক থেকে অনেকটা চ্যালেঞ্জে ছিল এ প্রতিষ্ঠান। ১৯৯১ সালে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর পর দীর্ঘ ২৮ বছরে মাত্র দু'টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের গাছে রং করা হচ্ছে।

১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন আয়োজন করেছিলেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক এম হাবিবুর রহমান। এই সমাবর্তনে গ্রাজুয়েটদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহম্মেদ। এর নয় বছর পর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ সমাবর্তনের আয়োজন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। সমাবর্তনে সনদপত্র দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ।সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে রং করা হচ্ছে।

এরপর থেকে গত ১২ বছরে দু’জন উপাচার্য তাদের মেয়াদ পূর্ণ করে অবসরে গেলেও কোনো সমাবর্তন পাননি শিক্ষার্থীরা। এসময় থেকে সমাবর্তনের স্বপ্নে দিনের পর দিন গুনেছেন গ্রাজুয়েটরা। তবে, এবার এ প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে তৃতীয় সমাবর্তনের মাধ্যমে।

১৯৯১-৯২ থেকে ২০০০-০১ সেশন পর্যন্ত মোট ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা মাত্র দু'টি সমাবর্তন পেয়েছেন। এর পরের ব্যাচগুলোতে প্রায় ২৫ হাজারের মতো সমাবর্তন প্রত্যাশী গ্রাজুয়েট রয়েছে। জায়গা স্বল্পতা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করলে একইসঙ্গে সবাইকে সমাবর্তন দেওয়া প্রায় অসম্ভব।

এবারের সমাবর্তনে ২০০১-০২ থেকে ২০১০-১১ সেশন পর্যন্ত মোট ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন পাবেন। এর পরের সমাবর্তনে ২০১১-১২ সেশন থেকে অন্যান্যদের সমাবর্তন দেওয়া হবে।সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের এককিলো রোডের পাশের গাছে রং করা হচ্ছে।

সমাবর্তনে রেজিস্ট্রেশন করা ২০০৪-০৫ সেশনের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মিজাহারুল ইসলাম বলেন, সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করার স্বপ্ন প্রতিটি গ্রাজুয়েটেরই থাকে। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি সমাবর্তনের সেই  মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য।

তিনি আরও বলেন, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী, পুরনো বন্ধুবান্ধব, সিনিয়র-জুনিয়রদের সঙ্গে সেই প্রিয় ক্যাম্পাসে একত্রিত হয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি। ক্যাম্পাসে কাটানো এককিলো, শহীদ মিনার, নিউজিল্যান্ড, শাহপরান হল, বঙ্গবন্ধু হলের স্মৃতি এখনো টানে। এক কথায় দারুণ একটি মিলনমেলার অপেক্ষায় আছি। এ সমাবর্তনের মাধ্যমে আমাদের জীবনে আরেকটি নতুন গল্পের সূচনা হবে।

সমাবর্তনে রেজিস্ট্রেশন করা ২০০৬-০৭ সেশনের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন চন্দ্র দাশ বলেন, বহুল প্রত্যাশিত অনুষ্ঠিতব্য এ সমাবর্তন নিয়ে সব সিনিয়র-জুনিয়র সাস্টিয়ানদের মতো আমিও অনেক আনন্দিত। অধীর অপেক্ষায় অপেক্ষমাণ সেই কাঙ্ক্ষিত ক্ষণের জন্য। সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসের এককিলো রোড়ের পাশের গাছে রং করা হচ্ছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়ে প্রত্যেকের একটি আশা থাকে সমাবর্তনের মাধ্যমে তারা তাদের অর্জিত সার্টিফিকেট নেবেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে সমাবর্তন আয়োজন করায় অনেকটি চ্যালেঞ্জ ছিল। তবুও সমাবর্তন আয়োজনের জন্য চেষ্টা করেছি। ফলে দীর্ঘদিন পর তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তৃতীয় সমাবর্তনের পর একই বছর ডিসেম্বরে চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এরপর থেকে প্রতিবছর সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবর্তন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষার্থীদের সমাবর্তনে অংশ নিতে গত ১ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন সময় নির্ধারিত ছিল। এ সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করেছে সাড়ে পাঁচ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি সমাবর্তনে অংশ নেবেন অধিভুক্ত কলেজ, বিএসসি নার্সিংয়ে স্নাতক, এমবিবিএস, বিডিএস, এমফিল ও পিএইচডি  অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা।

আসন্ন তৃতীয় সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন দেশবরেণ্য খ্যাতনামা লেখক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.