হাসান নাঈম, শাবি প্রতিনিধি | ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
সবুজ টিলা, তার মাঝে সারি সারি বৃক্ষের সমারোহ, এতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে দেশের সর্ব্বোচ উঁচুতে অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার। এই শহীদ মিনারকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার দর্শনার্থীদের চলে নিয়মিত আড্ডা, গান আর কবিতা। আবার মাঝে মাঝে এটি হয়ে উঠে সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, ইউনিভার্সিটি সেন্টারের পাশ ঘিরে ৫৮ ফুট উঁচু টিলার উপর ৬ হাজার ৮শ’ ৮৬ বর্গফুট জায়গা নিয়ে নির্মিত এই শহীদ মিনারের নান্দনিক সৌন্দর্য যে কাউকেই মুগ্ধ করে তোলে। এই শহীদ মিনারের অন্যতম আকর্ষণ হলো ৯৯টি ধাপের সুদীর্ঘ সিঁড়ি। যা মোট তিনটি ফ্লাইটে বিভক্ত। সিঁড়ি পেরিয়ে উপরে উঠতেই চোখে পড়বে সৌন্দর্য বর্ধিত বৃত্তাকার দেয়াল। এর পরেই মূল বেদীতে উঠার জন্য আরও সাত ধাপের ছোট সিঁড়ি পার হতে হয়।
২০০১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে সেই বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। শহীদ মিনারটির নকশা ও নির্মাণ করেন স্থপতি মহিউদ্দিন খান।
১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করা শাবির নিজস্ব কোনো শহীদ মিনার ছিল না। সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস পালন করতো। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী শহীদ মিনারটি তৈরি করা হয়।
শহীদ মিনারের গাঁ-ঘেঁষেই রঙিন ছাতা টাঙ্গিয়ে বানানো হয়েছ ফুচকা ও চটপটির দোকান। সেখানে প্রতিদিন এসে ভিড় জমায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা। গুনে গুনে ৯৯টি সিঁড়ি পাড়ি দিয়ে সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠতেই শরীর ক্লান্ত হয়ে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে। এরপর অবাক করা দৃশ্য! এতো উঁচুতে গাছ ও পাখিদের ভিড়ে এতো সুন্দর শহীদ মিনার আসলো কোত্থেকে? এখান থেকেই দেখা যায় পুরো ক্যাম্পাসকে। এই দৃশ্যটি সবচেয়ে ক্যাম্পাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হয় শহীদ মিনারটির স্থাপত্যশৈলীকে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শহীদ মিনারের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে আমাদের উপাচার্য মহোদয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেক সচেতন তাই আমাদের পরিকল্পনা আছে সামনের দিকে এটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার জন্য।