Sylhet Today 24 PRINT

❛দেখিয়া-শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই...❜

অধ্যাপক ড. মো. আতী উল্লাহ |  ২৭ জুন, ২০২০

চলছে করোনা। সবাই আছি সমান বিপদে। এ মুহূর্তে কোন উদ্যোগকেই আমি ‘নাটক’ বলব না। তবে যারা বলছেন, ঐ যে কবির ভাষা: “দেখিয়া-শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি/ তাই যাহা আসে কই মুখে”। তাই, তাদেরকেও ধন্যবাদ, কারণ, তারা এগুলো নিয়ে চিন্তিত। এ রকম চিন্তাও সুফল আনবে।

সিলেটে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যু। ১৮ কোটি মানুষের ছোট্ট এই দেশে কে কাকে সামলাবে? পেটের দায়েই অনেকে বেরোয়। এদেরকে অভুক্তও রাখা যাবে না। তালা না ঝুললেও ‘লকডাউন’ আমরা এখন সকলেই বুঝি। এলাকাগুলোকে যত রঙ-এ-ই ভাগ করা হউক না কেন, সত্যিকারভাবে কোনটাই সঠিক এবং স্থায়ী হবে না, কারণ, অবস্থা মুহূর্তেই উঠানামা করছে।

জেলার দায়িত্বে আছেন ‘জেলা নির্বাহী অফিসার’ (’প্রশাসক’ শব্দ ঔপনিবেশিকতার ইঙ্গিত দেয়, একইভাবে ‘প্রশাসন’ও তাই; সুতরাং, ‘প্রশাসন’কে বলব ‘দায়িত্বশীলগণ’)। স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য, মাননীয় মেয়র, জেলা নির্বাহী অফিসার, এসপি এবং সিভিল সার্জন: এ ৫ জনই যথেষ্ট। কতিপয় উপযুক্ত সহযোগী নিয়ে এ ৫ জন সমন্বয় ও যোগাযোগ রেখে যে সিদ্ধান্ত যখনই দেবেন, তা-ই হবে ফাইনাল। আর, তড়িৎ অবগত করবেন ঢাকাকে, কারণ, আরও ভালো কোন সিদ্ধান্ত ঢাকা থেকে আসতেও পারে। কিন্তু আসার আগ পর্যন্ত তাদেরটাই বলবৎ থাকবে। সময়ক্ষেপণ চলবে না। বিপদের সময় বাদাবাদিও না। মাঠে নেমে যারা কাজ করবেন, উপস্থিত মুহূর্তে তাদের মানবিক ভুলও হয়ে যেতে পারে। সাথে সাথে বড়দের যাকে পান, জানাবেন। যথাসম্ভব সমন্বয়ের মাধ্যমে বড়(রা) যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আবারও ওটাই হবে চূড়ান্ত, নতুন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত।

‘লকডাউন’ লকডাউনই। ‘কঠোর’ বা ‘শিথিল’- কোন একটার সুযোগ থাকলেই পুরো ব্যবস্থাই ভেঙে যাবে। অবস্থা বুঝে খুব সীমিত আকারে, প্রমাণসহ, শুধু ছোট পিকআপ-ভ্যান-সিএনজি-রিকশা এবং পায়ে হাঁটা ছাড়া অন্য কিছুই চলবে না। কঠোর সময়বেঁধে দোকানপাট খুলবে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কারণ, মানুষকে তো না খেয়ে মরতে দেয়া যাবে না। আর, আড্ডা দেখলেই পুলিশ সদস্যগণ কঠোর হবেন, হওয়ার মত।

সকালে, বিকেলে, আজ, আবার কাল, সিদ্ধান্ত বদলাবে, আবার দায়িত্বশীল কেউ বলবেন, ‘আমি জানি না’, তা হবে না। উনাকে আবার কে জানাবে? মুহূর্তে মুহূর্তে ফোন করে জেনে নেয়াটাও উনার নিজেরই দায়িত্ব। ভিন্ন ভিন্ন কথা শুনলে পাবলিক বিভ্রান্ত হয়, হতাশ হয়, সরকারের প্রতি আস্থা কমে। মুহূর্তে সমন্বয়ের মাধ্যমে দায়িত্বশীল সবার উত্তর হবে এক।

কোন কোন পাথর কোয়ারি থেকে পাথর নেয়ার জন্য নাকি নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা থেকে জাহাজ/নৌকায় অনেক মানুষ আসছেন সিলেটে, পাথর নেয়ার জন্য। থাকছেন, বাজার করছেন, মসজিদে গিয়ে একত্রে নামাজ পড়ছেন, ঘুরে বেড়াচ্ছেন দৃশ্য দেখার জন্য। উপদ্রুত এলাকা থেকে হয়ত ইচ্ছা করেই সরে এসেছেন, যাতে আক্রান্ত না হন। তারা বড় ব্যবসায়ী। কিন্তু পাথর-এলাকার সুস্থ মানুষজনকে আতঙ্কের মধ্যে ফেলছেন।

হে দায়িত্বশীলগণ, ভেবে দেখুন, এটা কোন ধরনে লকডাউন? বিস্তার ঠেকাবেন কী করে?

অধ্যাপক ড. মো. আতী উল্লাহ : প্রতিষ্ঠাতা ও বিভাগীয় প্রধান, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.