Sylhet Today 24 PRINT

দৃশ্যমান দানবেরা আসলে বড় সাহেবদের রেপ্লিকা!

সত্যজিত চক্রবর্তী |  ০১ অক্টোবর, ২০২০

আন্দোলনের মাধ্যমে বিচার আদতে কোন বিচার নয়। এগুলাে হল জনপ্রিয়াচার। এ ধরণের অবস্থা বিচারকে সিলেক্টিভ করে তোলে। শাসক তখন জনসেন্টিমেন্টের মাধ্যমে যে কোন ঘটনা আড়াল করার সুযোগ পায়। সে হিসাবে প্রশাসন এবং বিচার বিভাগ সাজিয়ে নেয়। ফলে আপনি ধর্ষণের বিচার নিয়ে গেলেন গিয়ে দেখবেন সেখানে একজন ধর্ষক পুলিশ বা আদালতেও ধর্ষক বসে আছে। খুনের বিচার চাইতে গেলেন গিয়ে দেখলেন একশত খুন করে একজন অফিসার আপনার খুনের মামলা নিচ্ছে। দুর্নীতির জন্য বিচার নিয়ে যাবেন গিয়ে দেখবেন দুর্নীতির দায়ে তিনবার সাসপেন্ড হওয়া একজন আপনার অভিযোগ লিপিবিদ্ধ করছে। এজন্যই একজন শাহেদ বা ড্রাইভারের বা সিলেটের টিলাগড় এলাকার সন্ত্রাসীদের জন্ম হয়।

আপনি জানতে পারেন তার দ্বারা যত ক্ষতি হওয়া সম্ভব তার সবটুকু হয়ে যাওয়ার পর। এইসব ডামাডোলের আড়ালে এরা নীরবে বড় সাহেবদের কাজ করে যায় যখনি কুমীর হয়ে বড় সাহেবকে গিলতে আসে তখনি এরা ধরা পড়ে। না হলে পড়ে না। প্রথমে এরা শুরু করে বড় সাহেবের ছোট জনকে সুবিধা করে দেয়ার মাধ্যমে। বড়রা টাকা চান না, ছোটদের দিয়ে চাওয়ান। এরই মধ্যে কোন কোনটা প্রতিভার জোরে বড় সাহেবের সমান হয়ে যায়। পরে টোক্কর লাগে এতেই এরা ধরা পড়ে। আমরা দেখি কত বড় দানব, আসলে সে তার বড় সাহেবের রেপ্লিকা। বড় সাহেব আরো বীভৎস। সে মূলত বড়গাছ সাহেবের কলোম।

বিচারের যায়গা অভিযোগ জানানোর জায়গাটাই আসলে আপনি যা দেখেন তা নয়। এখানে বসা মানুষগুলাই যন্তরমন্তর যন্ত্রের প্রোডাক্ট এরা এখানে বসে যারা এদের নিজস্ব কোন মাথা নাই, তাদের আছে কেবল বাসনা আর সমস্ত মনজুড়ে একটা পেট। তাই শাহপরান থানার ওসির উপর অভিযোগ আসে যে ধর্ষকদের সাথে সমঝোতার চাপ ভিক্টিমকে দেয়ার। জননেতাদের নামে আসে জনবিরুদ্ধ কাজের অভিযোগ।

ফলে সরকার বিচারে সিলেক্টিভ হতে পারে। শুধু আইন তার চিহ্নিত শত্রুকে ঘায়েল করতে ব্যবহার করার সুযোগ পায়। আসলে এর বেশিরভাগই জাতির গঠনে বা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ না। ফলে ধর্ষক বা মানসিক অসুস্থ জাতি গঠনের সবগুলো রাস্তায় অনুদান দিয়ে আর ধর্ষককে ফাঁসি বা ক্রসফায়ার দিয়ে একটা নাটক দেখানো হয়।

জনগণের দিকে তাকান এদের বিশাল একটা অংশ আরব আগ্রাসনের শিকার এরা আরেকধরণের যন্তরমন্তর প্রোডাক্ট। স্বাধীনতার উনপঞ্চাশ বছরে এখনো তাদের আইডেন্টিটি নিয়ে সাব্যস্ত অবস্থায় পৌঁছাতে পারেনি। এখনো বাঙালির কালচার কি বলে ক্যাচাল করে। একটা দেশের শিক্ষা বা মৌলিক অধিকারের ব্যাপারগুলো কি ভাবে পাবে তা কোন উন্নত রাষ্ট্রে জনসন্তুষ্টির উপর ভিত্তি করে প্রণীত হয় না। আমাদের শিক্ষাগুলা জনকল্যান বা মানবউন্নয়নমূলক নয়। জনসন্তুষ্টিমূলক। যেকোন ভাবে জনঅসোন্তোষ এড়িয়ে যত বাঁধাহীন করা যায় তখতে থাকা। ফলে মাথাহীনেরা গড়ে উঠছে। ফলে ঘুষ, দুর্নীতি, ধর্ষণ, খুন, ক্রসফায়ার, মাদক, প্রতারণা, এগুলো চলমান থাকবে। সিলেক্টিভ বিচার হবে।

তবে এরকম ফাঁদ জনগণের জন্য পাতা মানে সরকারের নিজের জন্যও পাতা যেহেতু সরকার কোন ভিন্ন কিছু নয় এই দেশেরই নাগরিক এবং জনতা।। তাই মাঝে মাঝে ঝাড়সমেতো বাঁশ সরকারের উপরই গিয়ে পড়ে। বা পড়বে।
এই জাতি বিশ্বে ছড়ায়ে পড়ার কারণে বাঙালির মাথাহীন পেট আর অন্ডকোষ সর্বস্ব অবস্থা সকল জাতির চেনা হয়ে গেছে আরো যাবে।

কথা হলো বিশ্বে আপনার জাতি হিসেবে সম্মান কেবল কমতেই থাকবে কমতেই থাকবে। বিদেশের এম্বেসিতে বাঙালি শুনলে বড়সাহেবকে ল্যাংটা করে তল্লাশি করবে। চালান ভাইয়েরা চালিয়ে যান।

এসব অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় শুধু ঘটনার বিচার বা ক্ষতিপূরণ নয় এই ঘটনার পিছনের কারণগুলাকেও অঙুলি নির্দেশ করা। যেকোন নাটক যেমন মঞ্চস্থ হওয়ার আগে এর অনেকগুলো রিহার্সেল দেয় ঠিক তেমনি একটা সংগঠিত খুন বা ধর্ষণ  বাটপারি বা দুর্নীতি ঘটার আগে আগে তা অনেকগুলা বিচ্ছিন্ন ছোট বড় ঘটনার মধ্যে দিয়ে যায়। ভিক্টিমেরা বিচার দেয় বা কাঁদে কিন্তু এই সব বসে থাকা গর্দভ যন্তরমন্তর প্রোডাক্ট তা কৌশলে লুকিয়ে ফেলে। আর আপনার গোচরে আসে না। গোচরে আসে তখনি যখন ঘটনার প্রাবল্য এত বেশি থাকে যে তার সংঘটন উপায়ে পড়তে থাকে। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের উপচায়ে হলো এই সব প্রতিষ্ঠানকে জনআন্দোলনের বিষয়ে পরিণত করা।

সত্যজিত চক্রবর্তী : চিত্রশিল্পী।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.