Sylhet Today 24 PRINT

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি কোনো সমাধান নয়

আকাশ চৌধুরী |  ২৫ জানুয়ারী, ২০২২

২১ জানুয়ারি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন ভার্সনে শিক্ষাবিদ মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‌ আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি ভালো নেই' শিরোনামে লেখাটি মন দিয়ে পড়ি। লেখার সারমর্ম হচ্ছে তিনি যখন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে গেলেন তখন বর্তমান উপাচার্যকে তিন পৃষ্ঠার একটি চিঠি দিয়ে গিয়েছিলেন। এই চিঠিটি যদি তিনি পড়তেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পরিস্থিতি (উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন) হতো না। লেখায় এও বলা হয়েছে, যদি তিনি সেটি না পড়ে থাকেন, তাহলে এটা যেন পড়ে নেয়া হয় এবং অন্য শিক্ষকদেরও পড়তে বলা হয়। তিনি লিখেছেন, বর্তমান উপাচার্যকে তিনি যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা তিনি গ্রহণ করেননি। তার মতে, দলীয় কোনো উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া উচিত নয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য দুঃখবোধ করে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের এই মন্তব্যের সাথে আমি একমত। আমি এও একমত যে কেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ তার উপদেশ গ্রহণ করলেন না। এই লেখায় জাফর ইকবাল নিজেই বলেছেন যে আজকের বিশ্ববিদ্যালয় এ পরিস্থিতিতে আসবে তা তিনি আগেই জানতেন। তাই তার উপদেশ বর্তমান উপাচার্য গ্রহণ করলে হয়তো এমনটি হতো না। অন্যদিকে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির পদ দখলের কারণে হঠাৎ অশান্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। আমি জানিনা মুহম্মদ জাফর ইকবালের তিন পৃষ্ঠার ওই উপদেশে এমনটি ছিল কি-না।

আমরা সবাই এক সময় ছাত্র ছিলাম। আমরা কারো না কারো সন্তান। শিক্ষকরা ছাত্রদের সন্তানের মতোই আদর করে থাকেন। তবে ছাত্রদেরও উচিত পিতা-মাতাকে শ্রদ্ধা করা। পিতা-মাতা যদি কোনো ভুল করেন তা সন্তানের কাছে কোনো অপরাধ হয় না। কিছুটা অভিমান বা রাগ থাকতে পারে। এজন্য পিতা-মাতাকে বন্দি করে রাখতে পারি না। তাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারি না। এমনকি সন্তানকে পিতা-মাতার সাথে কোনো বিবাদ মিটিয়ে দেয়ার জন্য কোনো গুরুজন প্রস্তাব দিলে তাও প্রত্যাখ্যান করা সমীচীন নয়। তবে আমরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক আন্দোলনে তাই দেখেছি। ইতোমধ্যে আমরা সবাই জানি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কী ঘটেছে। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিষয়টি। আর এ থেকেই শিক্ষার্থীরা বর্তমান উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছে। তবে পুলিশ কেন কার নির্দেশে এই হামলা চালিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। যদিও উপাচার্য ও অনেক শিক্ষক বলেছেন, এই হামলায় উপাচার্যের কোনো নির্দেশনা ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রভোস্ট থেকে পরবর্তীতে উপাচার্য পর্যন্ত যখন এক দফা আন্দোলন শুরু হয়, তখন বিভিন্নজনই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান। আমরা অতীতেও তা দেখে এসেছি। আমরা এও দেখেছি, কিছু হলেই উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা হয়। বর্তমানেও তাই দেখছি। এমনও বলা হচ্ছে, বর্তমান উপাচার্যের একগুঁয়েমিসহ নানা কথা। এক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, এসব কথা এখন বলা হচ্ছে কেন? কারণ উনাকে তো দ্বিতীয়বারের মতো উপাচার্য করা হয়েছে। তখন তো প্রশ্ন তুলেননি। আর এখন এমন কি হলো যে তার উপাচার্য নিয়ে প্রশ্ন হচ্ছে। আমরা যদিও জানি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলার পর তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে। তো এই দাবির সঙ্গে অন্য প্রসঙ্গ তোলা কতটুকু যৌক্তিক তা জানি না। যদি যৌক্তিক হয়ে থাকে তা দ্বিতীয়বার যখন তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় তখনই প্রশ্ন তোলা উচিত ছিল। আর এই মুহূর্তে এসব আলোচনা করলে এর পেছনে রাজনৈতিক গন্ধই ছড়ানোর আশংকা থাকে।

আমি বিশ্বাস করি, প্রথমবার নিয়োগের মেয়াদে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে ভালো কিছু করেছেন বিধায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে দ্বিতীয়বারের মতো নিয়োগ দেন। আর তখন তাকে সবাই স্বাগত জানিয়েছিলেন। তিনি যদি দ্বিতীয় দফার মেয়াদে এ পদে অযোগ্য হতেন তাহলে সবার প্রতিবাদ করার কথা ছিল। কিন্তু সেসময় তা করা হয়নি। বরং দৈনিক সংবাদের এক খবরে (২২ জানুয়ারি ২০২২) বলা হয়েছে, শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মানুবর্তিতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বুদ্ধি, প্রশাসনিক কাজে গতিশীলতা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা, আবাসন ও পরিবহন সংকট নিরসনে উদ্যোগ প্রভৃতি কার্যক্রমে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এমনকি করোনাকালীন সবার আগে অনলাইন ক্লাস ও মানবিক কর্মকাণ্ডেও প্রশংসিত হয়েছে। যদিও কেউ কেউ দলীয়করণের মাধ্যমে একতরফা ভাবে স্বার্থ আদায়ের চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন!

সংবাদপত্রের খবরে জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে হলের সমস্যা নিয়ে আবাসিক ছাত্রীরা আলোচনা শেষে রাতে হল প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ লিজাকে ফোন দিয়ে জরুরি দেখা করতে বলেন। কিন্তু বিষয়টি তাৎক্ষণিক তিনি গুরুত্ব দেননি। ওইদিন রাতে প্রভোস্টের ‘অশোভন আচরণের’ প্রতিবাদে হল প্রভোস্ট বডির অপসারণসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে দীর্ঘ চার ঘণ্টা অবস্থান নেয় ছাত্রীরা। রাত আড়াইটায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরতদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। ১৪ জানুয়ারি দুপুরে ছাত্রীদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করে। উপাচার্য তাৎক্ষণিক দাবি মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নে একমাসের সময় চান। কিন্তু উপাচার্যের এই আশ্বাসে তারা সন্তুষ্ট না হয়ে হল প্রভোস্ট বডির পদত্যাগ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর এ দাবিতে উপাচার্যকে কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা, পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটে। প্রভোস্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ান জাফরিন আহমেদ লিজা। তবে এরপরই শুরু হয় উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, উপাচার্য তাদের পুলিশ দিয়ে হামলা-গুলি করিয়েছেন। অন্যদিকে, পুলিশ বলছে, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গুলি করা হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে সবকিছু করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রও বলছে, উপাচার্য পুলিশকে অ্যাকশনে যাওয়ার কোনো নির্দেশ দেননি। যাই হোক হয়েছে, এ ঘটনায় সরকার থেকে শুরু করে সবাই উদ্বিগ্ন। আমরাও ধিক্কার জানাই শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার। তবে প্রতিটি জিনিসেরই একটি শেষ থাকে। যেকোনো ঘটনা সমাধানের জন্যই আলোচনা বা সংলাপ হয়। একতরফা কিছু হতে পারে না। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি এতো দরদ দেখানো বা তাদের সাথে অন্যদের আচরণে এতো কষ্ট পাওয়ার মধ্যে তাদের ব্যবহারেও কষ্ট পেয়েছি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ অনেকের তরফ থেকে বলা হচ্ছে ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ করেছে। আমরা সব সময় শিক্ষার্থীরা ভুল করলেও তাদের ক্ষমার চোখে দেখি। কারণ তারা শিক্ষার্থী। অনেক সময় বলা হয়, ওরা আর কী বুঝে, ওদের তো এখনও বুঝার বয়স হয়নি। মা-বাবা লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছে। তবে হ্যাঁ, মা-বাবা যে লেখাপড়া করতে পাঠিয়েছে তা তাদেরও বুঝতে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। একটি জিনিস লক্ষণীয় যে দেশের সবাই যখন তাদের প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছে, ঠিক তখন রাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী তাদের সমস্যা শোনার জন্য প্রতিনিধি দল পাঠালেন। আবার তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসার আহবান জানালেন। আন্দোলনরতরা ঢাকায় শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করবে বলে তা আবার প্রত্যাখ্যান করে নেয় সহপাঠীদের অনশনের কথা বলে।
আন্দোলন-দাবি আদায় তো এভাবে হতে পারে না। এমন হলে তো যিনি উপাচার্য পদে আসবেন ঠুনকো কোনো ঘটনায় বার বার তার পদত্যাগের দাবি উঠবে। আজ দেশের শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আমরা গিয়ে বসতে পারি না। তাকে কথা দিয়ে কথা রাখি না! কেন? এর পেছনের নেপথ্য কী তা সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে। ফলে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা আমার জানা নেই। শুধু এতটুকুই বলা যায়, কোনো গোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করে তোলার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। আমরা সবাই জানি যে, একজন উপাচার্য রাষ্ট্রীয় অনেক কাজসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিটি বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট লোকজন রয়েছেন। সেখানে কিছু হলেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তোলা ঠিক নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক তথ্যে জানা গেছে, ঘটনার দিন উপাচার্য পুলিশকে অ্যাকশনের কোনো নির্দেশ দেননি। আর যদি এ ধরনের কিছু ঘটেও থাকে তার জন্য তদন্ত আছে। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনতে ডেকেছেন। এতে তারা কর্ণপাত করেনি। এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেও তো আগামীতে কেউ রাষ্ট্রপ্রধান বা শিক্ষামন্ত্রীসহ অন্য কিছু হতে পারেন। যাই হোক, অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনার জন্য পদত্যাগ কি সঠিক সমাধান? ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে, কেউ কেউ বলছেন, উপাচার্য বহিরাগত (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)। তাহলে কি ধরে নেয়া যায় বহিরাগত হওয়ার কারণেই কি পদত্যাগের নামে আন্দোলন? কে বহিরাগত এবং কে এলাকার এটা কোনো কথা নয়। কথা হলো- প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড ঠিকভাবে হচ্ছে কি-না। আর তা যদি না হয় সবারই উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে উপাচার্যকে সুপরামর্শ দেওয়া। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কখনো ক্লাস বর্জন করা ঠিক নয়।

আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে শিক্ষকদের মধ্যে যে দলাদলি তা শিক্ষাব্যবস্থাকে ঠেলে দিচ্ছে বিপর্যয়ে। ব্যক্তিগতভাবে মতাদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থে দলাদলি কাম্য নয়। বিরোধী শক্তিগুলো সুযোগের অপেক্ষায় থাকার কারণেই এ অবস্থা বলা যায়। প্রতিষ্ঠানটির পূর্বসূরিদের ইঙ্গিতেই এমনটি হচ্ছে। নয়তো ঘটনার সময় যদি উপাচার্য পুলিশকে অ্যাকশনের নির্দেশ না দিয়ে থাকেন, সেখানে পদত্যাগের কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে এটা আমরাও চাই। তা যদি না থাকে সেজন্য পরিকল্পিত ও সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। পদত্যাগ কোনো সমাধান দিতে পারবে না। উপাচার্যকেও আরও সতর্ক থেকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর মুহম্মদ জাফর ইকবালের কাছে অনুরোধ থাকবে, আমরা জানি শিক্ষার্থীরা আপনাকে খুব ভালোবাসেন। আমরাও আপনাকে শ্রদ্ধার জায়গা থেকে দেখি। আপনি ওদের উদ্দেশ্য আরেকটি লেখা লিখবেন, যেভাবে আপনি ওদের স্নেহ ও ভালোবাসেন-ওরাও যাতে গুরু বা বড়দের সম্মান করে। আর এমনটি হলে কোনো আলোচনা বা সংলাপে শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবকেও ওরা আর নাকচ করবে না।

আকাশ চৌধুরী: বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক সংবাদ

 

এই বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.