Sylhet Today 24 PRINT

শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবালের প্রতি খোলা চিঠি

তৃতীয় চাওয়া এবং এক বাঙালির অনুনয়

জহিরুল হক বাপি |  ০২ জানুয়ারী, ২০১৬

প্রিয় শিশু সাহিত্যিক, প্রিয় মানুষ জাফর ইকবাল,
শ্রদ্ধা মেশানো ভালোবাসা আপনার জন্য। যদি সম্ভব হতো আমার আয়ুর কিছুটা আপনাকে দিয়ে দিতাম দেশে মঙ্গল চিন্তা করে। বাঙালি, বাংলাদেশি, বাঙালিয়ানা, সূফীজম, স্বাধীনতার চেতনা ইত্যাদি নিয়ে আজ আমরা কঠিন একটা অবস্থায় আছি। সুন্দরের বিরুদ্ধে জামাত-শিবির, বিএনপি কঠিন লড়াই করছে। খুব সূক্ষ্মভাবে শিকড়ে জীবাণু ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাদের মূল টার্গেট শিশুরা।

কত ধরনের প্রতিযোগিতা, শিশু পত্রিকা, সুশীল কত কি! এর বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি একমাত্র আপনি। আপনার লেখা পড়ে অনেক শিশু কিশোর স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদির পক্ষে দাঁড়িয়েছে। আবার অনেকে জামাতি প্ররোচনায় ডুবতে ডুবতে বেঁচে গেছে। আপনি আমার নমস্য। আপনার পরিবারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আপনার বড় ভাই শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন আহমেদের “তুই রাজাকার” শব্দ/সংলাপ যখন টিভিতে প্রচারিত হয় তখন আমি ছোটই। এত কঠিন, শক্তিশালী “তুই রাজাকার” আজও আমার মগজে গেঁথে আছে।

গণ-জাগরণের উত্তাল সময়ে আমরা অনেক শ্লোগান দিয়েছি তুই রাজাকার বলে। পাকিস্তান, রাজাকার নিয়ে আপনার অনেক কথা লিফলেট বানিয়ে আমরা কয়েক জন বিলি করেছি। আপনার বাক্য অনেক শিশু কিশোর তরুণদের মনোজগতে আলোড়ন তোলে। আপনার ভক্ত, বাঙালি হিসাবে আপনাকে এ চিঠি লিখলাম। আবেগে হয়ত বাক্য গঠন ভুল হতে পারে আশা করি আপনার সরল হাসির মতো সরল ভাবে ভুল ক্ষমা করে দেবেন।

গত ৩১ ডিসেম্বর গণ মাধ্যমে আপনার দশটি চাওয়া এসেছে। নতুন বছরে আপনি এগুলো আশা করেন। আপনার এ আশা অনেক শিশু কিশোর তরুণেরও চাওয়া হবে তা সহজেই বুঝি। আপনার “তৃতীয়” আশা নিয়ে আমার কিছু কথা ছিল। আশা করি ব্যক্তিগত ভাবে নিবেন না। আমাকে দয়া করে উদ্ধতও ভাববেন না।

আপনার তৃতীয় চাওয়াটির সার কথা : জামাত মুক্ত বিএনপি। বিএনপি জামাত ত্যাগ না করলে বিএনপি বিলীন হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

শ্রদ্ধেয়, আমার কথা আজ কেন বিএনপির জামাত ত্যাগের কথা আসছে কেন? এটা কি এখন প্রমাণিত না আসলে বিএনপি ছিল জামা আর জামাত শরীর। অন্ধকারে, দূর থেকে শরীর না দেখা গেলেও জামা স্পষ্ট বা অস্পষ্ট দেখা যায়। আমার এ ভাবনার পিছে ব্যাখ্যা আছে। এতদিন আমরা জামা দেখেছি এখন শরীর স্পষ্ট ভ্রান্তিহীন।

৭১ থেকে শুরু করি। সোয়াত জাহাজে জিয়ার অস্ত্র খালাস করতে যাওয়ার কথা অনেক বইতে পাওয়া যায়। সেটা বাদ দিলাম। জিয়া ২৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠকারী ১২/১৩ তম ব্যক্তি। সেই জিয়াকে বর্তমান বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক হিসাবে প্রচার করে। আমার মনে হয় না এটা শুধু রাজনৈতিক ফায়দা। ধীরে ধীরে আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক এবং অস্বীকার করার একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টা থেকে ঐ মিথ্যা প্রচার শুরু হয়ে ছিল। যার ফল মুড়ি, মুড়কির মতো চারপাশে দেখা যাচ্ছে।

যুদ্ধ চলাকালীন জিয়াউর রহমানের কোন বীরত্বগাঁথা পাওয়া যায় না। বরং তিনি একমাত্র সেক্টর কমান্ডার এবং ফোর্স কমান্ডার যার বিরুদ্ধে মুজিব নগর সরকার শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেয় মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে। জিয়া চাকরী জীবনের প্রথম অংশে ছিলেন গোয়েন্দা কর্মকর্তা । তিনি ৭১-এও কি তা ছিলেন? না হলে তার স্ত্রীর জন্য কি ভাবে ক্যান্টনম্যান্টে লোক পাঠাতো? কি ভাবে সেই বাহক আবার সুস্থ ফিরে আসে? মুক্তি যুদ্ধের সময় তার কোন বড় অপারেশন নাই কেন?! বেগম জিয়াকে বন্ধিকারী এবং ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর এক জন জানজুয়া মারা গেলে বেগম জিয়া পৃথিবীর ইতিহাসে যা ঘটেনি তাই করে। বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় নরকবাসী হয় নরপশু জানজুয়া। সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙ্গে জানজুয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পাঠায় বেগম জিয়া। যে ব্যক্তি বেগম জিয়ার উপর অত্যাচার করেছে বন্ধী রেখে তার মৃত্যুতে বেগম জিয়ার শোক প্রকাশের পর প্রশ্ন উদয় না হওয়াটা অস্বাভাবিক মনে হয় আমার কাছে।

এবার ৭১ থেকে ৭৫ পর্যন্ত জিয়ার কিছু কার্যক্রম নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করি। জিয়া বাকশালের সদস্য পদের জন্য আবেদন করেছিলো । আবার অন্য দিকে বাকশাল বিরোধী জাসদের সাথে ছিল তার কঠিন সখ্য! রক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে অপ-প্রচারের মূল হোতা হিসাবে জিয়াকে ধরা হয়। এর মূল কারণ ছিল শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে সেনা বাহিনীকে ক্ষেপানো।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জিয়া জড়িত। এ কথা মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামীরা আসামী হওয়ার আগেই বিভিন্ন জায়গায় বলেছে। কালো চশমা পরা জিয়া বেশির ভাগ সময়ই ভূত চরিত্র। বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে পাকিস্তান, সি.আই.এ, হোয়াইট হাউস সরাসরি জড়িত আজ অনেক ধরনে তথ্য প্রমাণে উঠে আসছে। জন্মের কয়েক বছর পর থেকেই পাকিস্তান আসলে দেশ নাই এটা একটা ক্যান্টনম্যান্ট। উর্দি পরা, উর্দি ছাড়া, জঙ্গি পোশাকে বিভিন্ন ধরনের সেনা বাহিনীর দেশ। আমেরিকা এদের সরাসরি মদদ দাতা। মুক্তিযুদ্ধে সময় থেকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা আমাদের শত্রুভাবাপন্ন রাষ্ট্র। আমেরিকার লাঠি পাকিস্তান। আর আজ পর্যন্ত এ দেশে পাকিস্তানের দৃশ্যমান লাঠি কারা? বিভিন্ন তথ্য প্রমাণে স্পষ্ট এ দেশে পাকিস্তানের লাঠি ছিল জিয়া। ৭৫ পরবর্তী কয়েকটি উদাহরণ দেই।

বিভিন্ন নাটকের পর জিয়া বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে প্রেসিডেন্ট হয়। এরপরই জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সম্মানের সাথে পুনর্বাসন করে। প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেপুটেশানে এবং পরবর্তীতে বিসিএস ফরেন ক্যাডার ভুক্ত করে বিভিন্ন দূতাবাসে আসন দেয়। বাহ! কি চমৎকার! একটি সদ্য স্বাধীন হওয়া জাতির জনককে যারা নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে তাদেরকেই বিদেশে পাঠানো হলো সেই জাতির মুখপাত্র হিসাবে বিদেশে। এতে কি প্রমাণিত হয় না জিয়া বাঙালির বিরুদ্ধে ছিল? ধরলাম হয় না। কিন্তু এত টুকুতো প্রমাণিত হয় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যাচার করেনি।

জিয়া সংসদে পঞ্চম সংশোধনী পাশ করে। এর ফলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের পথ সাংবিধানিক ভাবে বন্ধ হয়। প্রিয় মানুষ, প্রিয় সাহিত্যিক আপনি কি একবার ভাববেন – খুনিদের বিচার করা যাবে না এমন আইন পৃথিবীর আর কোথাও হয়েছে কিনা? আপনি কি একবার ভাববেন খুনিদের বাঁচানো জন্য কেন এই আইন করা হয়ে ছিল? এটা কতটা মানবতা, সভ্যতা বিরোধী?

জিয়ার আমলে সামরিক বাহিনীতে ১৯-২০ টি ক্যুর ইতিহাস পাই। তখন ইতিহাস প্রকাশ, খবর প্রকাশ সবই ছিল জিয়ার নিয়ন্ত্রণে। যাই হোক জিয়ার আমলের সে সব ক্যুর তেমন কোন কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও এতটুকু পাওয়া যায় যে সেই সময় খুন, নিহত, মৃত্যুদণ্ড পেত মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসাররা। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি, শাস্তি প্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার, কালো চশমা পরা জিয়ার এত রাগ ছিল কেন?

জিয়াউর রহমান সংবিধান থেকে “ধর্মনিরপেক্ষতা” বাদ দিয়ে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” এবং 'সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর আস্থা আর বিশ্বাস” মূলনীতিতে স্থাপন করে। যা শত ভাগ পাকিস্তানি এবং জামাতি দর্শন। সংবিধানের ১২ নং অনুচ্ছেদকে বাদ দিয়ে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির পথ তৈরি করে জিয়া। এই সব পাপের ফল আমি, আপনি সকলেই ভোগ করছি । জিয়ার স্বভাবের সাথে পাকি আর্মিদের শত ভাগ মিল দেখিয়ে দেই। পাকি আর্মি মদের গ্লাস হাতে নিয়ে ইসলাম রক্ষার পরিকল্পনা করতো, ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করেছে বলে অনেককে শাস্তি দিত। জিয়াও তেমন। সংবিধানে ধর্ম ঢুকানো জিয়া বাংলাদেশে প্রথম মদের লাইসেন্সের প্রচলন করে। উন্মুক্ত করে দেয় অশ্লীল নাচ, গান।

জিয়া বিখ্যাত সব রাজাকার নিয়ে তার দল তৈরি করে। কুষ্টিয়ার বিখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজ জিয়ার প্রধান মন্ত্রী হয়। ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করে রাজাকার, আলবদর, আল-শামস, বিহারীদের জেল থেকে ছেড়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী জিয়ার এমন রাজাকার, পাকিস্তানপ্রেমিদের প্রতি সহমর্মি হওয়ার কারণ কি? গোয়েন্দা বাহিনীতে “আন্ডার কভার এজেন্ট” “ডবল এজেন্ট” বলে একটা কথা আছে। মুক্তিযোদ্ধা হত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসিত করা ব্যক্তিকে ডবল এজেন্ট বা আন্ডার কভার এজেন্ট হিসাবে সন্দেহ করলে কাউকে দোষ দেওয়া যাবে? বরং সন্দেহ না করলে তাকে অসাবধান বলা যাবে। এখানে আরও উল্লেখ করা যায় জিয়ার দলের বর্তমান মহাসচিব ফখরুল ইসলামের বাবা ছিল ঠাকুরগাঁয়ের রাজাকার শিরোমণি “চোখা মিয়া রেজাকার”। ১৯৭৬-২০১৬ পরম্পরা।

১৯৭৬ সালে জামাতের নেতা মাওলানা রহিমের নেতৃত্বে জামাত ও কয়েকটি দক্ষিণপন্থী ইসলামী দলের নেতারা একত্রিত হয়ে "ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে । ১৯৭৮ সালে ১১ জুলাই গোলাম আযম পাকিস্তানি পাসপোর্টে তিন মাসের ভিসা নিয়ে অসুস্থ মাকে দেখতে বাংলাদেশে আসে । তিন মাসের ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পরও গোলাম আযম বাংলাদেশে অবস্থান করে এবং দেশজুড়ে দলকে জামাত-ই-ইসলামকে সংগঠিত করতে থাকে। এর ফল স্বরূপ ১৯৭৯ সালের ২৫, ২৬ ও ২৭ মে তারিখে ঢাকায় তিন দিনের সম্মেলনে "জামাতে ইসলামী বাংলাদেশ’ দলের প্রকাশ্য আত্মপ্রকাশ ঘটে ।১৯৮০ সালের ৭ ডিসেম্বর জামাতের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্বাস আলী খান বলে, "১৯৭১ সালে দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য যা করেছি ঠিকই করেছি । ভারতীয় আগ্রাসন থেকে জনগণকে হেফাজত করার জন্য কাজ করেছি’’। এর প্রতিবাদ করলে জামাতের ক্যাডাররা রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভাঙচুর করে। এরপর ২৯ মার্চ ১৯৮১ তারিখে আব্বাস আলী খান সংবাদ সম্মেলনে আবারো বলে " ১৯৭১ সালে আমরা যা করেছি তা ঠিকই করেছি এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের কনসেপ্ট সঠিক ছিলনা’’।

জিয়া শর্ষিণার পীর, রাজাকার মওলানা আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ স্বাধীনতা পদক দেয়। এসব কি অনিচ্ছাকৃত? মোটেও না। জিয়া ক্ষমতায় বসে নাই। তাকে বসানো হয়েছে পরিকল্পনা করেই। জিয়ার আমলের বিএনপি আর আজকের বিএনপির ভিতর কি কোন পার্থক্য দেখাতে পারবেন প্রিয় মানুষ, প্রিয় লেখক জাফর ইকবাল? জিয়া বানিয়ে ছিল প্রধান মন্ত্রী। আর খালেদা জিয়া বানিয়ে ছিল সমাজ কল্যাণ আর কৃষি মন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট শাসিত ব্যবস্থা থাকলে তবে হয়তো মুজাহিদ এ দেশের প্রধান মন্ত্রী হতো। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি এমন কিছু নাই যে করে নাই। জামাতের হয়ে কথা বলেছে বিএনপি। গণ-জাগরণের সরাসরি বিরুদ্ধাচারণ করে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই। মদের লাইসেন্স প্রদানকারী জিয়ার সকল কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট যে এ দেশে জামাতে এন্টি ডোর ছিল জিয়া। জামাতকে বাচাতে তার প্রতিষ্ঠিত দল আজ প্রায় বিলীন হতে বসেছে।

অতি প্রিয় জাফর ইকবাল ( আপনাকে স্যার/স্যার বলতে ইচ্ছা করে না, পরিচয় না থাকা স্বত্বেও স্বজন মনে হয় বলে) আপনি কি একটা বিষয় লক্ষ করেছেন বিএনপি গত কয়েক বছরে তাদের আদর্শ (?!), সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য তেমন কিছুই করেনি। তারা বারবার আঘাত করেছে আমাদের স্বাধীনতার চেতনার উপর। তারা বারবার আঘাত করেছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার উপরে। তাদের সব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধীর বাঁচানোর জন্য। বিএনপি যেন জামাতের বুলে প্রুফ জ্যাকেট।

বিএনপি জামাতকে ছাড়ার পথ কোথায়?! শরীর জামা ছাড়তে পারে। জামা শরীর ছাড়তে পারে না। বিএনপিকে কোন ভাবে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি বলা যাচ্ছে না তাদের প্রতিষ্ঠার পরবর্তী কার্যক্রম এবং তাদের জম্ম অবস্থা বিবেচনা করেই। মাননীয় জাফর ইকবাল আপনার তৃতীয় চাওয়া অনুযায়ী অনেকেই ভাবতে পারে বিএনপি স্বাধীনতার স্বপক্ষের দল । রাজনৈতিক বিবেচনায় জামাতের সাথে সখ্য গড়েছে। এতে জামাত-বিএনপি সাময়িক ফায়দা নিয়ে বেশ কিছু কিশোর, তরুণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ পাবে। যেমন তারা সুযোগ নিয়ে ছিল খেলার মাঠে। খেলার সাথে রাজনীতি মিশাবেন না বানী দিয়ে এ দেশে কয়দিন আগেও স্টেডিয়ামে পাকিস্তানী পতাকা উড়েছে। এ দেশের জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের কেউ কেউ কয়দিন আগেও ভাঙ্গা ভাঙ্গা উর্দুতে সাক্ষাৎকার দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আপনি যখন দশটি চাওয়া বা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন তার কয়েক দিন আগেই বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। এরফলে অনেকই বিভ্রান্ত হচ্ছে।

প্রিয় জাফর ইকবাল,
আপনি কি আপনার দশটি চাওয়া থেকে তৃতীয় চাওয়াটি বাধ দিতে পারেন? একজন বাঙালি হিসাবে, আপনার একজন পাঠক হিসাবে, ভক্ত হিসাবে, গণজাগরণ কর্মী হিসাবে বিনীত অনুরোধ আপনার ঐ চাওয়ার সাথে বিএনপি স্বাধীনতা পক্ষের শক্তি এটা জায়েজ হয়ে যাচ্ছে। সেটা যদি জায়েজ হয় তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নাজায়েজ হয়।

জহিরুল হক বাপি
ব্লগার, অনলাইন একটিভিস্ট এবং মুক্ত চলচ্চিত্র নির্মাতা
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত, মন্তব্য লেখকের নিজস্ব। সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত, মন্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.