Sylhet Today 24 PRINT

পড়তে এসে যদি ছিনতাইয়ে পড়তে হয়!

ফায়েজুর রহমান সৈকত |  ০৪ জানুয়ারী, ২০১৬

রোববার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ফেরার পথে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমির পাশে টিবিগেট এলাকায় কৃষি অনুষদ লেভেল-১ সেমিস্টার-২ এর শিক্ষার্থী মিস সিলেট এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি মাহমুদা আশরাফি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছে। ছিনতাইকারীরা তার ট্যাব, টাকাসহ প্রয়োজনীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনতাই করেছে। এবং সবচেয়ে বড় ও আতঙ্কের ব্যাপার হলো ছিনতাইকারীদের আঘাতে সে কপালে, হাতে আর পায়ে নাকি প্রচণ্ড ব্যথাও পেয়েছে। এবং এটি অবশ্যই কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

এর আগেও এবং প্রায় নিয়মিতভাবেই ক্যাম্পাস ও তার আশেপাশে এসব ঘটনা ঘটে চলছে। আমি কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করতে চাই। বেশ কিছু বছর আগে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী শহর থেকে রিকশা করে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে তাদের একজনের কাছ থেকে হাত ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং সে রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে আঘাত পায়।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইটের সামনের টিলায় ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের এক শিক্ষার্থীকে ছিনতাইকারীরা হাতে ছুরিকাঘাত পর্যন্ত করে। তার কাছ থেকে দামী মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তার কিছুদিনের মাথায়ই শাহ সুফির মাজার সংলগ্ন এলাকায় আড্ডা দেবার সময় কৃষি অনুষদের দুই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে দামী মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

তারও কয়েকমাস আগে ইকোপার্কের ভেতরে কৃষি প্রকৌশল অনুষদের এক শিক্ষার্থী আর তার বন্ধুকে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে তাদের থেকে দামী মোবাইল ফোন এবং টাকা পয়সা ছিনতাই করা হয়। এছাড়াও সম্প্রতি এক ভর্তি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে পনের হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়।

গতমাসে বালুচর এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার বাসা থেকে লাখ টাকার স্বর্ণালংকার এবং নগদ অর্থ ডাকাতি করা হয়।

এখন কথা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে শিক্ষার্থীরা যদি ভয়ে বাইরে বেরুতে না পারে তবে শিক্ষার সঠিক মান নিশ্চিত হবে কিভাবে। আমাদের দেশে এই বয়সেও শিক্ষার্থীদের কাজ করার কোন সুযোগ থাকেনা। তাই তাদেরকে প্রতিমাসে চলার জন্য পরিবার থেকে তাদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ হাত খরচ হিসেবে আনতে হয়। দুদিন পর পর যদি এভাবে ছিনতাই, ডাকাতি, ছুরিকাঘাত চলতে থাকে তবে শিক্ষার্থীরা ভালমতো পড়া লেখা করবে কিভাবে; স্বাধীনভাবে টিকে থাকাই যেখানে কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে!

এইসব ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও অসহায়। যেহেতু বালুচর কিংবা তৎসংলগ্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আছেন তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই দ্রুত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যেন এব্যাপারে পরামর্শ করা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এব্যাপারে অভিযোগ করা হয় যেন তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিশেষভাবে নজরদারির ব্যবস্থা করে।

শিক্ষা নিতে এসে যদি
জখমই হয়ে যাই
ভালমতো পড়ব কেমন
কি যে করি হায়!

ফায়েজুর রহমান সৈকত : শিক্ষার্থী।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.