Sylhet Today 24 PRINT

সালাতুত তাসবিহ পড়ার নিয়ম, গুরুত্ব ও ফযিলত

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী |  ১৯ মার্চ, ২০২৪

সালাতুত তাসবিহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। যে নামাজে বারবার ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ তাসবিহটি পড়া হয়, তাকে সালাতুত তাসবিহ বলেন।

জীবনে অনন্ত একবার ফজিলত পূর্ণ এ নামাজ পড়া আবশ্যক। এ নামাজের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাচাকে সুসংবাদ দিয়েছিলেন।

হাদিসটি আমলের নিয়তে তুলে ধরা হলো-
সালাতুত্ তাসবীহ হলো, এক সালামে ৪ রাক’য়াত সালাত; যার মধ্যে মোট ৩০০ বার নিম্নের তাসবীহ পাঠ করতে হয়।

বাংলা উচ্চারণ: সুব্হানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

সালাতের মাঝে তাসবীহ পাঠের নিয়ম: (চার রাক‘য়াতের প্রতি রাক‘য়াতে)
১. সূরা ফাতিহা পড়ার পূর্বে (প্রথম রাক’য়াতে ছানা পড়ার পরে) ১৫ বার

২. সূরা ফাতিহা এবং অন্য সূরা পড়ার পরে রুকুতে যাওয়ার পূর্বে দাঁড়ানো অবস্থায় ১০ বার

৩. রুকুর তাসবীহ শেষ করে রুকু অবস্থায় ১০ বার

৪. রুকু থেকে দাঁড়িয়ে রব্বানা লাকাল্ হামদ বলার পরে হাত ছাড়া অবস্থায় ১০ বার

৫. প্রথম সিজদার তাসবীহ শেষ করে সিজদারত অবস্থায় ১০ বার

৬. প্রথম সিজদা থেকে উঠে বসে অর্থাৎ দুই সিজদার মাঝে বসা অবস্থায় ১০ বার

৭. দ্বিতীয় সিজদার তাসবীহ শেষ করে সিজদারত অবস্থায় ১০ বার

উক্ত নিয়মানুযায়ী মোট ৪ রাক‘য়াত সালাত আদায় করতে হবে। প্রতি রাক‘য়াতে উক্ত তাসবীহ ৭৫ বার করে মোট (৭৫x৪) = ৩০০ বার পাঠ করতে হবে।

প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের সাথে দরূদ শরীফ পাঠ করা উত্তম । এরপর আল্লাহু আকবার বলে দাড়িয়ে উক্ত নিয়মে বাকি ২ রাক‘য়াত সালাত শেষ করতে হবে।

হাদিস শরীফের আলোকে সালাতুত্ তাসবীহ আদায়ের গুরুত্ব:
পবিত্র হাদিস শরীফে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (দ.) তার আপন চাচা হযরত আব্বাস (রা.) কে এভাবেই প্রত্যেক দিনে একবার অথবা প্রত্যেক সপ্তাহে একবার অথবা প্রত্যেক মাসে একবার অথবা প্রত্যেক বছরে একবার অথবা জীবনে একবার হলেও অবশ্যই এই সালাত আদায় করার জন্য জোরালোভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।

সালাতুত তাসবীহ এর ফযিলত:
প্রিয় নবী (দ.) বলেছেন, উক্ত নিয়মে ৪ রাকা’আত নামাজ আদায় করলে তার জীবনের আগের-পরের, পুরাতন-নতুন, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, ছগীরা-কবীরা, গোপন-প্রকাশ্য সকল গুনাহ আল্লাহ তা‘য়ালা মাফ করে দিবেন। (সুনানুত তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ, বায়হাক্বী শরীফ)

তাও যদি না পারেন তবে প্রতিমাসে একবার পড়বেন। তাও যদি না পারেন তবে প্রত্যেক বছর একবার পড়বেন। আর তাও যদি না পারেন তবে জীবনে অন্তত একবার পড়বেন। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, বাইকাকি দাওয়াতুল কবিরের বর্ণনা করেছেন, তিরমিজি হজরত আবু রাফে হতে এ হাদিস বর্ণনা করছেন এবং মিশকাত)

সুতরাং অগণিত অসংখ্য নিয়ামাত ও কল্যাণ প্রদানের মাস পবিত্র রমজানে সালাতুত তাসবিহ পড়ে গোনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ গ্রহণ ঈমানদারের একান্ত কর্তব্য।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে আমল করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক ও কলামিস্ট।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.