Sylhet Today 24 PRINT

লাঙ্গলেই মঙ্গল, শোন হে গুণিজন!

বদরুল হোসেন |  ০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

সম্প্রতি লাঙ্গল টু লন্ডন শব্দত্রয় যত্রতত্র ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার খোরাক যোগাচ্ছে। প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়ছেন যখন যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটির একটি মহল, আরেকটি অংশ সেটি গায়েই মাখছেন না। এতে কমিউনিটিতে বিদ্যমান বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

আমাদের সমাজে বিভক্তির ধারা বেশ পুরনো। ইতিহাসের পাঠ ধরে যতটুকু পিছনে যাওয়া যায় সেখানেই দেখা যায় সমাজের একটি অংশ অন্যদের পিছনে লেগে আছে। বিষয়টা হয়তো এক নয়। তবুও মাতৃভাষাকে নিয়ে সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে  বিভক্তির কারণে মধ্যযুগের কবি আব্দুল হাকিম সমাজের একটি অংশের জন্মপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

লাঙ্গল আবহমান বাংলার এক চিরায়ত ঐতিহ্যের পরিচায়ক। খেটে খাওয়া মানুষের এক মহামূল্যবান হাতিয়ার। নিকট অতীতে লাঙ্গল চষেই জীবন পার করেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম। লাঙ্গল চষে যিনি চাষাবাদ করতেন তিনিই চাষি অভিধায় সিক্ত হতেন। এই চাষি পরিচয়টাও এক সময় মানুষের আত্মপরিচয়ের একটি অবলম্বন ছিল। একজন চাষি সাহায্যের জন্য কারো মুখাপেক্ষী ছিলেন না। নিজের কায়িক পরিশ্রমের উপরই ভরসা ছিল তার। চাষাবাদের ওপর যে উৎপাদন হত তা দিয়েই অনায়াসে বছর পার করে দিতে পারতেন একজন কৃষিজীবী মানুষ।

একটা সময় ছিল যখন প্রতিটি সম্পন্ন কৃষক পরিবারের ঘরের বারান্দার শোভা বৃদ্ধি করতো ঢেঁকি, লাঙ্গল, মই ইত্যাদি। সমাজ পরিবর্তনের ধারায় আর প্রযুক্তির বিকাশে এসব আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলা যায়। যে পরিবারে গরু-মহিষ, লাঙ্গল আর মই দেখা যেত তাদের সামাজিক অবস্থানও ততই মর্যাদা পেত। এ সমস্ত সম্পন্ন পরিবারের মানুষেরা তাদের বাড়িতে জায়গীর হিসাবে দূর-দূরান্তের স্কুল-মাদ্রাসার ছাত্রদের জায়গা দিতেন। সে সময়ের নব্য শিক্ষিতদের বেশিরভাগ মানুষই এই সব কৃষিজীবী সম্পন্ন পরিবারের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ আর্থিক প্রতিপালনে বড় হয়েছিলেন।

বদরুল হোসেন : স্কটল্যান্ডে রাজধানী এডিনবরায় একটি ব্যাংকে ঝুঁকি বিশ্লেষক হিসাবে কর্মরত
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত, মন্তব্য লেখকের নিজস্ব। সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত, মন্তব্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.