Sylhet Today 24 PRINT

সেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ’ আজ অনন্য উচ্চতার বাংলাদেশ

আনহার মিয়া |  ২৩ নভেম্বর, ২০১৮

রাজনৈতিক কারণে আমাদের দেশের এমন অনেকেই আছেন যারা সত্যটা মুখে স্বীকার করেন না। নিজে দেখেছি বর্তমান সরকারের সময় সুবিধাভোগীদের অনেকেই সেই সুবিধাটা অস্বীকার করতে! যেহেতু নির্বাচন সামনে কাজেই এই সংখ্যাটা হয়তো আরও বাড়বে!

আমাদের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা বাংলাদেশ যে সত্যিকারের এগিয়েছে সেটা তারা দেখতে পান না। দেখতে পান না বিশাল বিশাল উন্নয়নকাজ। তাদের কাছে সবকিছুই নেতিবাচক!

একটা অসচ্ছল মানুষকে শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা দিচ্ছেন সেটাকেও তারা ভালোভাবে নিচ্ছে না! বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, পঙ্গু ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা সহ এমন কিছু সুযোগ সুবিধা শেখ হাসিনা দেশের জন্য করেছেন, সেটাকে অনেকেই ভালোভাবে দেখছেন না।

মুক্তিযোদ্ধা ভাতার কথা নাইবা বললাম। কারণ মুক্তিযোদ্ধা শব্দটা শুনলে একশ্রেণির মানুষ আবার উশখুশ করেন, অস্বস্তিতে ভোগেন!

বাংলাদেশ এখন শুধু উন্নয়নের মহাসড়কে নয়, বাস্তবিকভাবে দেশ যে কতটা এগিয়েছে তা কল্পনাতীত। এমন কোন সেক্টর নেই, যে সেক্টরের উন্নয়ন হয় নাই। আগে খাদ্য ঘাটতি ছিল, দেশে মঙ্গা বলে একটা শব্দ ছিল। শেখ হাসিনা শুধু মঙ্গা দূর করেননি, আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা দেশ। নিজেদের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও খাদ্য সহায়তা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছি আমরা। আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র শেখ হাসিনার জন্য।

২০০৬/৭ সালে আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৩.৪ শতাংশ। সেটা এখন ৭.৩ শতাংশ। অনেকেই হয়তো কল্পনাও করতে পারছেন না কিভাবে সম্ভব হয়েছে? আপনি বা অন্য কেউ সেটা কল্পনা করতে না পারলেও এটাই সত্য এবং বাস্তবতা।

আমাদের রিজার্ভ এবং মাথাপিছু আয় এখন কত? সেটা জানতে আপনাকে আমাকে বেশি কষ্ট করতে হবে না। হাতে মোবাইল নেন, মুহূর্তেই সব তথ্য উপাত্ত পেয়ে যাবেন।

'এককালের তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারের অনন্য এক উচ্চতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে' সেটা নিয়ে তো কিছুই বলা হলনা?

আপনি বিশ্বাস না করতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ আজ সত্যি সত্যি বিশ্বের কাছে সমীহ জাগানিয়া এক নাম। জাতিসংঘ তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে বাংলাদেশকে রোলমডেল হিসেবে উপস্থাপন করে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত করে নিয়ে যায় তার সদস্য রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের এই অগ্রগতির কথা তুলে ধরার জন্য।

আপনি জানেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের সেরা ৫ সরকারপ্রধানের একজন; আপনি জানেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের সেরা ৩ সৎ সরকারের প্রধানের একজন। হয়তো জানেন? কিন্তু জেনেও সেটা মুখে বলেন না? এই না বলাটা আমাদের রাজনীতি হয়ে গেছে এখন! যা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য এবং দেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ।

আজ বিশ্ববাসী বাংলাদেশের সাথে শেখ হাসিনা নামটা সমীহ জাগানিয়া ভাবে উচ্চারণ করে।

শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বগুণে বাংলাদেশ ভারতের সাথে সমুদ্র বিজয় করে সমুদ্রে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশ সমমান সমুদ্র বিজয় করে সমুদ্রে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে।

অবাক হচ্ছেন, তাইনা? নাহ, অবাক হওয়ার কিছু নেই। এটাই শেখ হাসিনা এবং শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বের গুণাবলি। যার মাঝে অন্যকোন চিন্তাভাবনা নেই দেশ ও দেশের মানুষ ছাড়া। সারাক্ষণই ভাবনা দেশের মানুষের মঙ্গল কামনা।

পদ্মা সেতু দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই। আমাদের দেশকে এই কিছুদিন আগেও বলা হতো তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ। বিশ্বব্যাংক সহ দাতাগোষ্ঠী যখন সরকারবিরোধীদের প্ররোচনায় কথিত দুর্নীতির অভিযোগ আনলো একটা পয়সাও পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করে তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা ঘোষণা করলেন আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে হবে পদ্মা সেতু।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেই কথা রেখেছেন। পদ্মা সেতুর মতো বিশাল অবকাঠামো স্থাপনা আজ শেষের পথে। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে ফিরে আসতে চেয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন।

আজ আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সক্ষমতা অর্জন করেছি। সেটা একমাত্র শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই সম্ভব হয়েছে। অথচ এই কিছুদিন আগেও উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের জন্য দাতা সংস্থাগুলোর দিকে চেয়ে থাকতে হতো আমাদের।

কাজেই আমরা যদি গত ১০ বছরের বাংলাদেশের কথা চিন্তা করি, তাহলে আমরা সেখানে অন্য এক বাংলাদেশকে দেখতে পাবো। বিশ্ব দরবারের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক বাংলাদেশকে দেখতে পাবো।

আমি নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কাছে আহ্বান করবো, তারা যেনো সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশকে চিন্তা করে দেখে, তাহলে তারা তাদের ভোটাধিকার সত্যের আলোকে প্রয়োগ করতে পারবে এবং 'বাংলাদেশ যে উন্নয়নের মহাসড়কে' তার ধারাবাহিতা রক্ষা হবে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

আনহার মিয়া: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বালাগঞ্জ উপজেলা শাখা।
[প্রকাশিত লেখায় মতামত, মন্তব্য ও দায় লেখকের নিজস্ব]

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.