Sylhet Today 24 PRINT

নির্বিঘ্ন-শান্তির নির্বাচন আয়োজনে প্রজ্বলিত হোক মাঙ্গলিক দীপশিখা

ইনাম আহমদ চৌধুরী |  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮

আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং সাংঘর্ষিক অবস্থার উদ্ভব হবে বলে অনেকেই ধারনা করছেন। বস্তুতপক্ষে  ইতোমধ্যে এর আলামতও দৃশ্যমান। তদুপরি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ তাদের কার্যক্রম দ্বারা অনেকক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন এবং গুম, গ্রেপ্তার, মামলা, হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিচারে।

সবচেয়ে শঙ্কার বিষয় নির্বাচনের এই বছরে তথাকথিত বন্ধুক যুদ্ধে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অভিশ্বাস্য রূপে বেড়েছে। আইন ও শালিস কেন্দ্রের হিসেবে এ বছর নভেম্বর পর্যন্ত বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৪০৬ টি, এর মধ্যে অন্তরীণাবদ্ধই রয়েছেন ৮৫ জন। গত বছরের তুলনায় যা চারগুণ বেশী।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও এবারের নির্বাচন অংশ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত। নির্বাচনে প্রার্থীরাও জেল-জুলুম থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। দলে দলে সংঘর্ষ হচ্ছে-আত্মঘাতী অন্তর্দ্বন্দেরও প্রকট প্রকাশ ঘটছে। রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গও চরম বিদ্বেষমূলক ডাহা আজগুবি মিথ্যাচার করতেও দ্বিধা করছেননা। এসব কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। সভ্য সমাজের রাজনীতি থেকে যা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করতে হবে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত নির্বাচনী পরিবেশ থেকে আমাদের নিষ্কৃতি পেতে হবে।

আজ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা, পরমতসহিষ্ণুতা , আইনের শাসন, সৌহার্দ্যমূলক সহবস্থানের দীক্ষা প্রতি মুহূর্তে পরাভূত হচ্ছে প্রলোভন ও পরাক্রম , ক্ষুদ্র স্বার্থবুদ্ধি, ক্ষমতা-লোভ বিদ্বেষ ও সহিংসতার প্রতিকারহীণ অপরাধে।  কিন্তু প্রকৃত পক্ষে বাংলাদেশের গণতন্ত্রী জনগণের তা মোটেই কাম্য নয়। মুক্তিযুদ্ধের মহান চেতনায় এদেশের মানুষ উদ্বুদ্ধ।

আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অঙ্গিকার, অসাম্প্রদায়িকতা, অর্থনৈতিক বৈষম্যহীনতায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো চরম রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা। অর্জিত হয়েছিলো সাফল্য, প্রজ্বলিত হয়েছিলো শান্তি , স্বাধীনতা ও প্রগতির মাঙ্গলিক দীপশিখা। অনির্বাণ সেই সংগ্রামী মহান লক্ষ্য থেকে মানুষ বিচ্যুত হবে না। এই সাধারণ নির্বাচন তা অর্জনেরই সুযোগ এনে দিয়েছে। আমাদের দৃঢ় আশা এবং জোরালো দাবী- নির্বাচন সব দলের সব প্রার্থীর জন্য সমান এবং সকলের নির্বিঘ্ন অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হোক।

এই প্রত্যয় নিয়ে এবং সদিচ্ছা তাড়িত হয়েই সম্প্রতি  মাননীয় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম। অগ্রজ প্রতিম মুহিতের মনোভাবও ছিলো অনুরূপ এবং আশ্বস্তপ্রদান মূলক।  আমার বিশ্বাস এ ধরনের প্রত্যয় ও তার প্রকাশ, সৌহার্দ্যমূলক আচরণ এবং সৌজন্যবোধ দেশে-বিশেষ করে বর্তমান সংকটাকুল নির্বাচন কালে একটি অনুকূলও উৎসাহ ব্যঞ্জক ঈপ্সিত পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে।
দুর্ভাগ্যবশত ঐ ঘটনাও কোন কোন মহলে বিভ্রান্তমূলক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার উদ্ভব করেছিলো। তবে দেখে আনন্দ ও সন্তুষ্টি লাভ করেছি যে-দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণ, বিশেষ করে সুশীল ও তরুণ সমাজ ঐ ধরনের সৌজন্যমূলক আচরণ ও মনোভাবের সপ্রসংস স্বীকৃতি জানিয়েছেন।

বস্তুতপক্ষে নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণের ইচ্ছা এই মনোবাসনা থেকেই সজ্ঞাত হয়েছিলো। যদিও আমি এই নির্বাচনে বর্তমানে অপারগ, আমার আশা ও বিশ্বাস সকলের নির্বিঘ্ন অংশ গ্রহণে এবং পারস্পারিক সাংঘর্ষিক অবস্থার অবর্তমানে প্রশাসনের আনুকূল্যে এই নির্বাচনে জনগণ তাদের মতামত সুচারু এবং বলিষ্ঠ ভাবে প্রকাশ করার সুযোগ পাবেন। এটাই হবে আমার প্রচেষ্টার সার্থকতা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.