Sylhet Today 24 PRINT

চিকিৎসা না দিলে মামলা করা যাবে ডাক্তার ও হাসপাতালের বিরুদ্ধে

এম এ সালেহ চৌধুরী |  ০১ এপ্রিল, ২০২০

বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে হাসপাতালে রোগী ভর্তিতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনেক হাসপাতালেই রোগীদের ভর্তি নিতে অনীহা প্রকাশ করছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরুচ্ছে। সম্প্রতি করোনা সন্দেহে চিকিৎসা না পেয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কোথায় ভর্তি করা হয়নি।

চিকিৎসা অভাবে মৃত্যুবরণ করছেন অনেক রোগী। এ অবস্থায় বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ডাক্তার বা হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

১.
চিকিৎসা সেবা পাওয়া যে কোন নাগরিকের অধিকার। কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া খুবই দুঃখজনক বিষয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বিএমডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিৎ। আর ভুক্তভোগীরাও এ ক্ষেত্রে বিএমডিসিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিতে পারবেন।

২.
এছাড়াও ডাক্তাররা রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বা অবহেলা করলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরি অর্ডিন্যান্স ১৯৮২ অনুযায়ী তদন্ত করবে। ১১ ধারা অনুযায়ী তদন্ত করে ১৩ ধারার বিধান মতে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল এবং প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন।

৩.
তদুপরি কারো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন। সেইসঙ্গে বিএমডিসি অভিযোগের প্রমাণ পেলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট-২০১০ অনুযায়ী ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিল করতে পারে। চিকিৎসায় অবহেলা করলে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় মামলা করা যাবে। এছাড়া ভুক্তভোগী ক্ষতিপূরণের জন্য সিভিল কোর্টে এবং ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার আইনেও অভিযোগ দায়ের করতে পারবে বলে জানান তিনি।

৪.
বর্তমান অবস্থায় বিভিন্ন দেশে অবসরে যাওয়া চিকিৎসকরাও রোগীদের সেবায় এগিয়ে এসেছেন। সরকারের কথা না শুনলে ডাক্তারদের নেতারা এসময় ভূমিকা রাখতে পারে। আর ডাক্তাররা চিকিৎসা না দিলে তাদের বিরুদ্ধে বিএমডিসিতে অভিযোগ দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া যাবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সবারই উচিৎ এগিয়ে আসা।

৫.
বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫ (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা পাওয়া নাগরিকের অধিকার। যা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। কোন ডাক্তার যৌক্তিক কারণ ছাড়া চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মেডিকেল প্রাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরি অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সুযোগ রয়েছে। বিএমডিসি অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারেন। এছাড়া সিভিল কোর্ট এবং ভোক্তা অধিকার আইনেও ক্ষতি পূরণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে ডাক্তারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

  • এম এ সালেহ চৌধুরী: অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, সিলেট।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.