Sylhet Today 24 PRINT

টেস্টের জন্য এত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কোথায়?

সুমন পাল |  ১০ এপ্রিল, ২০২০

করোনার সন্দেহভাজন রোগীর কাছ থেকে স্যাম্পল কালেকশন এবং ল্যাবে বসে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেন যারা মেডিকেল টেকনোলিজিস্ট। এই স্যাম্পল কালেকশন ও রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ডাক্তাররা বুঝতে পারেন রোগীর রেজাল্ট পজিটিভ নাকি নেগেটিভ।

দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর অনেকেই বলছে ১০০/১৫০/২০০ টেস্টে কি এমন ধরা পড়বে? করোনার রোগী সঠিক তথ্য পেতে ১০০০০ পরীক্ষা করতে হবে তাহলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। তাদের জানা দরকার যে এই মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ গত ১২ বছর ধরে বন্ধ। টেস্টটা তাহলে করবে কারা? কীভাবে এত পরীক্ষা হবে? কারা করবে নার্স, ডাক্তার?

ডাক্তার পরীক্ষা করেন না তারা পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক সরকারের উপর মহল থেকে শুরু করে অনেক আমলারা মেডিকেল টেকনোলজিস্টের এই পেশা সম্পর্কে জানেন না, জানতে চান ও না। তারা জানেন না ডাক্তার, নার্সের পর মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আরও একটা মহান পেশা যাদের ছাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থা চালানো সম্ভব হয় না।

অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার সরকারের উপর মহল থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিবসহ বড় বড় ডাক্তাররা তাদের বক্তব্যে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ভুলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ভুল নামে ল্যাব টেকনিশিয়ান বলে সম্বোধন করছেন। কাউকে তার প্রাপ্য সম্মান না দেওয়া খুব লজ্জার। ডাক্তার রা রোগীর কাছে না গেলেও মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা ঠিকই রোগীর দেহ থেকে স্যাম্পল কালেকশন করছেন। বাস্তবিক অর্থে মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। যারা গেজেটেড মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হওয়া সত্ত্বেও তাদের ডাকা হয় ল্যাব টেকনিশিয়ান বিষয়টা অবশ্যই কোন যুক্তি দিয়ে বোঝানো যাবে না।

এখন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের অভাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা হতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। জেলা উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা কোথাও একজনও নেই। ১২ বছর নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় হাজার হাজার পাস করা ডিপ্লোমা মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আজ বেকার। যাদের অনেকের সরকারি চাকরিতে যোগদানের বয়স চলে গেছে।

উচ্চ শিক্ষার নাম করে বিএসসি ইন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কোর্স সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চালু করা হয়েছে। বাস্তবতা হল সরকারিভাবে যার কোন পোস্টই নাই। হাজার হাজার গ্রাজুয়েশন শেষ করা বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজিস্টও বেকার। এমন প্রহসন আর কতদিন।

এখনো সময় আছে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের দ্রুত নিয়োগ দিন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলে একজন ডাক্তারের জন্য ৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দরকার, কিন্তু সেখানে ৫ জন ডাক্তারের জন্যও ১ জন টেকনোলজিস্ট নাই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে নিয়োগ দিলে নির্ভুল রিপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে, একই সঙ্গে সাধারণ জনগণ সঠিক চিকিৎসা পাওয়ার পথে এগুবে।

এরপরেও দেশের এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ও বিএমটিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সংগঠনের সকলকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাই মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নতুন নতুন নিয়োগসহ বিএসসি মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নতুন পদ সৃষ্টির জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছি।

  • সুমন পাল: সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদ, সিলেট জেলা শাখা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.