Sylhet Today 24 PRINT

অভিনয় ছেড়ে ধর্মে মনোযোগী হ্যাপী

বিনোদন ডেস্ক |  ১২ অক্টোবর, ২০১৫

চলচ্চিত্রের রুপালি জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন আলোচিত অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী। ধর্ম নিয়েই এখন তাঁর মগ্নতা। সম্প্রতি ফেসবুকে লিখেছেন তাঁর বদলে যাওয়ার গল্প। পাঠকদের জন্য তাঁর লেখাটি তুলে ধরা হলো :

মাত্র তিন দিনে এতকিছু পাবো কল্পনাও করতে পারিনি। সবই মহান আল্লাহ তায়ালার রহমত।

'দাদুবাড়ী গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম অন্তত দুই মাস আমার পছন্দের ঐ আলাদা পরিবেশটাতে থেকে আসবো। কিন্তু আম্মু অসুস্থ হয়ে পড়াতে দুই মাসের থাকার ইচ্ছা তিন দিনেই শেষ করতে হলো।

আমার বু (দাদী) আমাকে খুবই ভালবাসেন।ছোট বেলা থেকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছি।যখনই দাদীর কাছে যেতাম তখনই শিশুর মত আচরণ করতাম।এত বড় হয়েছি তবুও কিছুদিন আগে পর্যন্ত বাড়িতে গেলে আমার দাদীকে বলেছি কোলে তুলতে, খাবার মুখে তুলে দিতে,গোসল করিয়ে দিতে, ইচ্ছা করে ডেকে ডেকে বিরক্ত করার চেষ্টাও কম ছিল না কিন্তু কখনই তাকে রাগাতে পারি নি! এবার বাড়িতে গিয়ে দাদীকে খুব বেশি যন্ত্রণা দিতে পারি নি কারণ আমার খেলার সাথী বু (দাদী) অনেক অসুস্থ। চেহারাটা মলিন হয়ে গেছে।আমার বদলে যাওয়া দেখে অবাক না হয়ে অনেক খুশি হয়েছেন, দুটি রাতেই একসাথে এশার নামায আদায়ের পর আমাকে ধরে অনেক কেদেঁছে আর বলেছে " আমার পুত্নীটাকে আল্লাহ হেদায়েত দিয়েছে ,আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। এবার মরেও শান্তি পাবো। হে আল্লাহ, তুমি আমার পুত্নীটাকে মরার আগ পর্যন্ত এভাবেই রাখো" এসব বলে বলে অনেক কেদেঁছে।সত্যিকথা বলতে আমি জানিনা আমার বু এরকম অদ্ভুদভাবে কেন কেদেঁছে !তবে এটা বুঝেছি ,সেই চোখের পানিতে একটু হলেও খোদার মহিমা অনুভব করার আনন্দ ছিল।যে আনন্দ আমি খুব ভাল বুঝি,আল্লাহ আমাকে বোঝার সেই তৌফিক দান করেছেন।

আার চাচাতো বোনের বয়স মাত্র ১১ বছর।বাড়ীতে সবাই নামায পড়ে আমার ঐ বোন ছাড়া ,আল্লাহর রহমতে আমি তাকে নামাযের গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।এবং সে এখন পাচঁ ওয়াক্ত নামায আদায় করছে।আশা রাখি তার এই বুঝ অটুট থাকবে ইনশাল্লাহ!

আমি একা একা ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত গিয়েছি কিন্তু একটা লোকও আমার দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকায় নি, সবার দৃষ্টিতে ছিল সম্মান।কেন জানতে চান? আমি তো ঐভাবেই চলি যেভাবে ইসলামে নারীকে চলতে বলা হয়েছে ।আমার চোখ দুটোও ঠিক মত দেখা যাচ্ছিল না।আর যেহেতু অনেক দিন থাকার ইচ্ছা ছিল তাই কোরআন শরীফ নিতে ভুলি নি।আমার বুকের সাথেই সেই আসমানী কিতাব ছিল।কারও ক্ষমতা আছে আছে আমার ক্ষতি করার চিন্তা করার? আর ক্ষতি করা তো পরের কথা ।যার মনে আল্লাহর জন্য ভালবাসা থাকে কোন কিছুই তার কিছু করতে পারে না।উল্টো যে ক্ষতি করার কথা ভাবে সেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এটাই হচ্ছে ইসলাম আল্লাহর বিধান মানলেই শান্তি।

ঢাকা ফেরার সময় কাউন্টারে বসে থাকা অবস্থায় একটি বাচ্চা ছেলে তার মায়ের কথা বলে টাকা চেয়ে চেয়ে ঘুরছিল, আমার পাশে এসে বলল" আপু আপনি আমার মার জন্য দোয়া কইরেন" বলেই চলে গেল ।

আমি তিন দিনে অনেক কিছু পেয়েছি।অনেক কিছু।আলহামদুলিল্লাহ!'

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.