Sylhet Today 24 PRINT

ছেলেমেয়ে দেশে ফেরার পর এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্য

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৭ জুলাই, ২০২০

এন্ড্রু কিশোরের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছেন। মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা সিডনিতে গ্রাফিক ডিজাইন আর ছেলে জে এন্ড্রু সপ্তক মেলবোর্নে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়ছেন। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, দেশে ফিরলেই শেষকৃত্য হবে বলে জানিয়েছেন এন্ড্রু কিশোরের ভগ্নিপতি ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস।

বিপুল বিশ্বাস বলেন, ‘বাবার শরীরের অবস্থা খারাপ শোনার পর থেকেই তারা দেশের ফেরার চেষ্টা করছে। তবে এখনো তারা আসার জন্য টিকেট পায়নি। ওখানে তাদের পরিচিত কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা টিকেট পেয়ে যাবে বলে আশা করছি। তারা দেশের ফেরার পরেই এন্ড্রু কিশোরের শেষকৃত্যের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় বোনের বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

এন্ড্রু কিশোরের বাল্যবন্ধু ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান দীপকেন্দ্র দাশ। তিনি বলেন, ‘এন্ড্রু কিশোর তার বোনের বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।’

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ সকাল থেকেই এন্ড্রু কিশোরকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোরের ঘনিষ্ঠজন মোমিন বিশ্বাস। সন্ধ্যায় ফোন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোমিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘দাদা আর নেই।’

দুদিন ধরে এন্ড্রু কিশোরের অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। সকাল থেকে অবস্থার আরো অবনতি হয়। তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। ফলে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন



বরেণ্য এই শিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই নেতাই শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়েছেন। এই গুণী শিল্পীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের সর্বস্তরে গভীর শোক নেমে এসেছে।

ক্যানসারের চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ নয় মাস পর গত ১১ জুন সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন এন্ড্রু কিশোর। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১৮ সেপ্টেম্বর তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তাকে কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছিল। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে তাঁর চিকিৎসা হয়।

১৯৫৫ সালে এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।

বাংলা গানের কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ হিসেবেও পরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে তাঁকে বলা যেতে পারে এক মহাসমুদ্র। কয়েক দশক ধরে সেই সমুদ্রে সাঁতার কেটে চলেছেন শ্রোতারা। ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমারই ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘চোখ যে মনের কথা বলে’সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান রয়েছে তাঁর।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.