সিলেটটুডে ডেস্ক | ২৬ আগস্ট, ২০২১
ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আলোচিত সংগীতশিল্পী নোবেল সম্প্রতি একটি ছবি পোস্ট করেছেন।
তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদের ধারণা, এটি নোবেলের গাঁজা সেবনের ছবি।
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, নিজেই এই ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পর পুলিশ কেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
গোপালগঞ্জের ছেলে ২০১৯ সালে কলকাতার বহুল আলোচিত গানের রিয়েলিটি শো সা-রে-গা-মা-পাতে অংশ নিয়ে তুমুল আলোড়ন তৈরি করেন। পশ্চিমবঙ্গের অনেক প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে তিনি ফাইনালেও ওঠেন। তবে প্রথম হতে পারেননি।
এই সাফল্যে নোবেলের প্রতি মুগ্ধ ছিল দেশবাসী। কিন্তু এরপর তার একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ওঠে সমালোচনা। নোবেল কখনও এসব সমালোচনা গায়ে মাখেননি। উল্টো এক টেলিভিশন সাংবাদিককে ফোন করে গালাগাল এমনকি মারধরের হুমকি দেন।
বাংলা ব্যান্ডের কিংবদন্তি জেমসকে নিয়েও আপত্তিকর পোস্ট দিয়ে তুমুল সমালোচিত হন নোবেল। একপর্যায়ে তিনি ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি সেখানেই শেষ করেন।
এসবই গত ঈদুল ফিতরের আগে আগে। ওই ঘটনার পর নোবেল অনেকটা নীবর হয়ে যান।
এর মধ্যে বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পাহাড়ি ঝরনার পাশে নোবেল একটি মেয়েকে নিয়ে বসে আছেন, এমন একটি ছবি পোস্ট করেন। মেয়েটি কে, তার পরিচয় দেয়া হয়নি। আর তিনি ঠিক কী করছিলেন, সেটিও একেবারে স্পষ্ট না হলেও গাঁজার কলকি টানছেন, এমনটি ধারণা করছেন কেউ কেউ।
এই ধারণা হওয়াটা একেবারে অমূলকও নয়। কারণ ছবির সঙ্গে নোবেল যে একটি লাইন লিখেছেন, তা হলো, ‘গাঁজার নৌকা পাহাড়তলী যায়, ও মিরাবাই’।
এই লাইনটি একটি বহুল আলোচিত গানের পঙ্ক্তি।
মেয়েটি নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ নন, এটা নিশ্চিত। তিনি এই পোস্ট দেখে ক্ষেপেছেন ভীষণ।
নোবেলের পোস্টের দুই ঘণ্টা পরে সালসাবিল তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান দেন তার ক্ষোভের কথা।
তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি লজ্জিত এ রকম একটা দেশে জন্মগ্রহণ করে। অনুগ্রহপূর্বক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যেন আজ থেকে কোনো নেশাগ্রস্ত স্টুডেন্ট বা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার না করে অথবা শাস্তি না দেয়।’
নোবেল নেশা করছেন- এ বিষয়ে নিশ্চিত তার স্ত্রী। আর এমন একটি ছবি ফেসবুকে দেয়া মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
সালসাবিল লেখেন, ‘আমাদের দেশের ইনফ্লুয়েন্সাররা যেখানে নিজেদের নেশাগ্রস্ত ছবি আপলোড করে এটাকে একটি ট্রেন্ডে পরিণত করেছে এবং বাংলাদেশ প্রশাসন এ বিষয়ে কিছু করতে অক্ষম, সেখানে অন্য জনগণদের নেশা এবং মাদকদ্রব্য-সংক্রান্ত বিষয়ে হেনস্তা করার অধিকার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী আর রাখে না।’
সেই সঙ্গে সালসাবিল নারী নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করেছেন সেই স্ট্যাটাসে। লিখেছেন, ‘এমন একটি দেশে জন্মগ্রহণ করে সত্যি আমি লজ্জিত যে দেশে নারী নির্যাতন ছেলে মানুষের পুরুষত্ব প্রমাণের মাপকাঠি। এমনকি যে দেশে একজন স্বামীর কাছে স্ত্রী নিরাপদ না, গোপনে ধারণকৃত পারসোনাল মোমেন্টের ভিডিও দিয়ে স্ত্রীকে খুব সহজেই ব্ল্যাকমেইল করে রাখা যায় এবং তা সম্পর্কে বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইমও অবহিত।’
অভিনেত্রী পরীমনিকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এমন প্রশ্নও তোলেন সালসাবিল। তিনি লেখেন, ‘যে দেশে সম্মানিত ব্যক্তিগণ কিছু সাময়িক ফেইম অর্জন করা মানুষদের কোনোরকম চেকিং ছাড়াই এয়ারপোর্ট ক্রসিং-এর ব্যবস্থা করে দেয় এবং তারা নিজেদের ইচ্ছামতো ড্রাগস বাংলাদেশে নিয়ে আসে, সে দেশে পরীমনি কেন গ্রেপ্তার হবে?’
নেটিজেনদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির চোখে আমার এ স্ট্যাটাস পড়ে, দয়া করে উত্তর দিয়ে যাবেন।’
দেশের আইনশৃঙ্খলাবিহীন পরিস্থিতি নিয়ে হতাশ সালসাবিল লেখেন, ‘হঠাৎ মনে হয় যে এ রকম একটি আইনশৃঙ্খলাবিহীন দেশে জন্মগ্রহণ করাটাই নিজের জীবন দিয়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।’
এর গত ২৮ জুন নোবেল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। হয়তো আমরা মা-বাবা হতে চলেছি। আমি এবং আমার সহধর্মিণীর জন্য দোয়া করবেন।’
কিন্তু স্ট্যাটাস দেয়ার দুই দিন পর অর্থাৎ ৩০ জুন নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ জানিয়েছেন, তিনি সন্তানসম্ভবা নন।
সে সময় এই বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনার ঝড় চলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর মেহরুবা সালসাবিলের সঙ্গে বিয়ে হয় নোবেলের।