Sylhet Today 24 PRINT

‘হাওয়া’ সিনেমার প্রদর্শন নিষিদ্ধ চেয়ে আইনি নোটিশ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২২ আগস্ট, ২০২২

‘হাওয়া’ সিনেমায় একটি শালিক আটকে রাখার দৃশ্য নিয়ে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লংঘনের অভিযোগ এনে সিনেমাটি প্রদর্শন নিষিদ্ধে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২২ আগস্ট) সেন্সর বোর্ড বরাবরে এ নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।

নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে হাওয়া সিনেমাটির ছাড়পত্র বাতিল করে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের বাইরে প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পাশাপাশি সেন্সরবোর্ড পুনঃগঠন করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্য, আইনজীবী ও পরিবেশবিদদের সেন্সর বোর্ডের সদস্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে ভবিষ্যতে কোনো সিনেমার ছাড়পত্র দেওয়ার আগে চলচ্চিত্রটিতে যেন পূর্ণ খুনের দৃশ্য, অশ্লীল গালি এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর কোনো ধারার লঙ্ঘন না হয় সেই ব্যাপারে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে  ২৯ জুলাই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পাওয়া মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমায় ট্রলারে থাকা একটি খাঁচায় শালিক পাখি বন্দী অবস্থায় দেখা যায়। এক পর্যায়ে সেটিকে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে।

‘হাওয়া’  সিনেমার কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত এ ধরনের অপরাধের ফলে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে। এই দৃশ্য ধারণের জন্য বনবিভাগের কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। বন্যপ্রাণী হত্যা এবং খাওয়ার দৃশ্য দেখে মানুষ মনে করতে পারেন যে, এটা করা যায়। তারা এগুলো দেখে উৎসাহিত হতে পারেন। সিনেমা নাটকে ধূমপানের দৃশ্যে যেমন লেখা থাকে যে, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, কিন্তু হাওয়া সিনেমার ওই অংশে এই ধরনের কোনো বার্তা ছিল না।

ইতোমধ্যে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের চার কর্মকর্তা সিনেমাটি দেখে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮(১), ৩৮(২), ৪০ ও ৪৬ ধারা লঙ্ঘনের সত্যতা পেয়ে ১৭ই আগস্ট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

এছাড়া ‘হাওয়া’ সিনেমায় বেশ কয়েকটি খুনের দৃশ্য রয়েছে যা অতি ভয়ংকর। এছাড়া পুরো হাওয়া সিনেমায় নারী চরিত্রকে নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি অসংখ্য অশ্লীল গালি ব্যবহার করা হয়েছে। যা পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের দেখা মোটেও উচিত নয়। এহেন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। যা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অথচ হাওয়া সিনেমার কোথাও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের দেখা নিষেধ এই কথাটিও উল্লেখ নাই। এই ধরনের চলচ্চিত্র শুধু বাংলাদেশেই নয় বহির্বিশ্বেও প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন হলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে।

নোটিশে আরও বলা হয়, ‘হাওয়া’ সিনেমাটিতে ভায়লেন্স পূর্ণ খুনের দৃশ্য, অশ্লীল গালি এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮(১), ৩৮(২), ৪০ ও ৪৬ ধারা লঙ্ঘন হলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনকে হাওয়া সিনেমার বিতর্কিত দৃশ্যগুলো কর্তন বা আইন লঙ্ঘনের চিত্র সংস্কার করতে না বলে বরং হাওয়া সিনেমাটিকে দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ছাড়পত্র প্রদান করে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘনে এবং সমাজে নেতিবাচক প্রভাব তৈরিতে উৎসাহ দিয়ে সমঅপরাধ সংঘটিত করেছেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.