Sylhet Today 24 PRINT

গায়িকা থেকে নায়িকা

বিনোদন ডেস্ক |  ২০ মার্চ, ২০১৬

আশির দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে পা রাখেন দিতি। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক সোনারগাঁওয়ের পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের মেয়ে দিতি ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। দিতি ছাড়াও তার বড় ভাই মনির হোসেন ও পারভেজ দুজনেই গান গাইতেন। ছোট বোন নাসরিন এক সময় মডেলিং করতেন। আরেক ভাই আনোয়ার ছবি আঁকার সাথে জড়িত। সোনারগাঁওয়ের দিতির পরিবার  সাংস্কৃতিক পরিবার হিসেবে পরিচিত। সাংস্কৃতিক বলয়ে বেড়ে ওঠা দিতি ছিলেন সোনারগাঁওয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক প্রিয় মুখ।

১৯৭৪ সালে দিতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন সোনারগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ সোনারগাঁও জি আর ইনস্টিটিউশনে। এখানে পড়াশুনার পাশাপাশি দিতি নিয়মিত গান গাইতেন। মূলত গায়িকা হিসেবেই স্থানীয় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার পরিচিতি ঘটে। ১৯৭৯ সালে সোনারগাঁও জি আর ইনস্টিটিউশন থেকে এস এস সি পাশের পর দিতি পড়াশোনার সুবাদে চলে যান ঢাকায়। সেখানে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে গান গাওয়ার পাশাপাশি অভিনয়ে জড়িয়ে পড়েন।

এক সময় নায়িকা হিসেবে শক্ত অবস্থান দখল করেন বাংলা চলচ্চিত্রে। একের পর এক ব্যাবসা সফল ছবির মাধ্যমে দিতি জয় করে নেন দশর্ক হৃদয়।

১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রে দিতির আগমন ঘটে। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। কিন্তু ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘আমিই ওস্তাদ’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন আজমল হুদা মিঠু। এরপর দিতি প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন। সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী স্ত্রী’ ছবিতে অভিনয় করে প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালে আমজাদ হোসেনের ‘হীরামতি’ ছবিতে চিতত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়েই প্রেমে পড়েন দুজন।

পরবর্তীতে তারা দুজনে বিবাববন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮৭ সালে জন্ম নেন মেয়ে লামিয়া চৌধুরী আর ১৯৮৯ সালে জন্ম নেয় ছেলে দীপ্ত। তবে সোহেল চৌধুরীর সাথে দিতির সংসার স্থায়ী হয় নি, ভেঙ্গে যায়। পরে ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাত দুটার দিকে সোহেল চৌধুরী খুন হন বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে। পরবর্তীতে দিতি তার সর্বাধিক চলচ্চিত্রের জুটি ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করলেও সেই বিয়েও স্থায়ী হয়নি, ডিভোর্সের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে।

দিতি অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হল-‘হীরামতি’, ‘দুই জীবন’, ‘ভাই বন্ধু’, ‘উছিলা’, ‘লেডি ইন্সপেক্টর’, ‘খুনের বদলা’, ‘দুর্জয়’, ‘আজকের হাঙ্গামা’, ‘স্নেহের প্রতিদান’, ‘শেষ উপহার’, ‘চরম আঘাত’, ‘স্বামী-স্ত্রী’, ‘অপরাধী’, ‘কালিয়া’, ‘কাল সকালে’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘মুক্তি’, ‘কঠিন প্রতিশোধ’, ‘জোনাকীর আলো’, ‘তবুও ভালোবাসি’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’, ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’, ‘মাটির ঠিকানা’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ইত্যাদি।
বাংলা চলচ্চিত্রে অশ্লিলতা ছড়িয়ে পড়লে তিনি স্বেচ্ছায় বাংলা চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান। সর্বশেষ তিনি টিভি নাটকের সাথে জড়িত ছিলেন।

অসুস্থ হওয়ার আগে দিতি দুটি নতুন ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছিলেন। একটি 'লাইফ ইন এ মেট্রো' এবং অন্যটি 'মেঘে ঢাকা শহর'। পাশাপাশি তিনি বদিউল আলম খোকন পরিচালিত 'রাজা বাবু' ছবির কাজও করছিলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.