Sylhet Today 24 PRINT

কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির জন্মদিন আজ

বিনোদন ডেস্ক |  ২৯ মে, ২০১৬

কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির ৬৪তম জন্মদিন আজ। চলচ্চিত্রের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র নিজের মেধা ও অভিনয় দক্ষতা দিয়ে চির-ভাস্বর হয়ে আছেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতে। অভিনয়গুণে কোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। 

১৯৫২ সালের ২৯ মে হুমায়ুন ফরীদি ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন। ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পেরিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মূলত ওই উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

টিভি নাটকে হুমায়ুন ফরীদি আলোচনায় আসেন শহিদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্মিত ‘সংশপ্তক’ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে। নাটকটিতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন তিনি। এরপর দীর্ঘ সময় তিনি ছোটপর্দায় সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন।

হুমায়ুন ফরীদি অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে নিখোঁজ সংবাদ, হঠাৎ একদিন, পাথর সময়, সংশপ্তক, সমুদ্রে গাংচিল, কাছের মানুষ, মোহনা, নীল নকশার সন্ধানে, দূরবীণ দিয়ে দেখুন, ভাঙনের শব্দ শুনি, কোথাও কেউ নেই, সাত আসমানের সিঁড়ি, সেতু কাহিনী, ভবেরহাট, শৃঙ্খল, জহুরা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, প্রতিধ্বনি, গুপ্তধন, সেই চোখ, অক্টোপাস, বকুলপুর কতো দূর, মানিক চোর, আমাদের নুরুল হুদা প্রভৃতি।

১৯৯০-এর দশকে হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। সেখানেও তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বলা হয়ে থাকে যে, শুটিংয়ের সময়ে অন্যান্য অভিনেতার তুলনায় দর্শকেরা হুমায়ুন ফরীদির দিকেই আকর্ষিত হতো বেশি। বাংলাদেশের নাট্য ও সিনেমা জগতে তিনি অসাধারণ ও অবিসংবাদিত চরিত্রে অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস, দহন, লড়াকু, দিনমজুর, বীর পুরুষ, বিশ্বপ্রেমিক, আজকের হিটলার, দুর্জয়, শাসন, আঞ্জুমান, আনন্দ অশ্রু, মায়ের অধিকার, আসামি বধূ, একাত্তরের যিশু, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, ভালোবাসি তোমাকে, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, প্রবেশ নিষেধ, ভণ্ড, অধিকার চাই, মিথ্যার মৃত্যু, বিদ্রোহী চারিদিকে, মনে পড়ে তোমাকে, ব্যাচেলর, জয়যাত্রা, শ্যামল ছায়া, দূরত্ব, কী যাদু করিলা, মেহেরজান প্রভৃতি।

সৃজনশীল কর্মযজ্ঞের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করে।

২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এই অনবদ্য অভিনেতা বাংলাদেশকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে চলে যান মৃত্যুলোকের ওপারে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.