Sylhet Today 24 PRINT

শৈশব চুরি হওয়া শিশুদের গল্প ‘অমল হল পিটারপ্যান’

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

সন্ধ্যা ৭টা। পিয়ানো আর পাখির কিচির-মিচির সুরে আকাশ থেকে মঞ্চ থেকে নেমে আসলে একদল পরী। উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের গোলাপ ফুলের শুভেচ্ছা দিয়ে চলে যায় পরীর দল। চোখ জুড়ানো এই দৃশ্যের কয়েক সেকেন্ড পরই আসে যন্ত্রণা দায়ক এক দৃশ্য। বড় বড় বই, ব্যাগের বোঝা নিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করছে একদল শিশু। কোচিং, গৃহশিক্ষক, মায়ের বকুনি খেয়ে পড়তে পড়তে শৈশব হারানো শিশুদের যন্ত্রণাদায়ক অভিব্যক্তি ছুঁয়ে যায় উপস্থিত দর্শদেরও। এ যেন বর্তমান সময়ের বেড়ে উঠা শিশুদের চিত্র। শিশুদেরকে ডাক্তার, আইনজীবী, প্রকৌশলী বানানো স্বপ্নে বিভোর মা বাবারা কিভাবে শিশুদের শৈশব চুরি করছেন তাই দৃশ্যমান হতে লাগলো ধীরে ধীরে। বলছিলাম ‘অমল হল পিটারপ্যান’ নাটকের প্রথম দৃশ্যের কথা।

মঙ্গলবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি) সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হয় ‘পাঠশালা’ সিলেটের নাটক ‘ অমল হল পিটারপ্যান’। নাহিদ পারভেজ বাবুর রচনায় নাটকটি নির্দেশনা দেন হুমায়ন কবির জুয়েল। আজ ছিল নাটকের ৫ম মঞ্চায়ন।



এই নাটকের মূল ভাষ্য ছিল বর্তমান সময়ের শিশুদের যান্ত্রিক জীবন যাপন ও সেখান থেকে মুক্তির উপায়। নাটকে অমলের মত হিজলগাছ দেখার আক্ষেপ যে বর্তমান সময়ের শিশুদের রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।  অমলকে যখন স্কুল থেকে ফিরে আবার কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য মা তাড়া দেন। তখন অমলের চোখে ঘড়ির টিক টিক শব্দকে শত্রু মনে হয়। কিন্তু অমলের কল্পনার রাজ্যে যখন পরী টিনকার বেল তাকে নেভার ল্যান্ডে নিয়ে যায় তখন ঘড়িকেই তার মিত্র মনে হয়। অমল ঘর পালানো, পথ হারানো প্রকৃতির দলের ছেলে মেয়েদের সমস্যা সমাধান করে দেয় একটি ঘড়ির মাধ্যমে। জলদস্যু হুককে পরাজিত করে অমলের আবির্ভাব হয় পিটারপ্যান রূপে।



নাটকের শেষে অমল, টিনকার বেল আর প্রকৃতির দলের ছেলে মেয়েরা হুককে পরাজিত করার মাধ্যমে নিশ্চিত করে আর কোনো শিশুর শৈশব চুরি হবে না। ঘড়ি বা সময়কে শত্রু নয়, মিত্র মনে করে সমন্বয় করতে পারলে আর কোনো যন্ত্রণা থাকবে না।

নাটকটি পরিবেশনায় মঞ্চে ছিল ঐশিকা দাস, জয়িতা জেহেন প্রিয়তী, রোহিত দত্ত চৌধুরী সীমান্ত, সৈয়দা রাইদাহ্ সাবাহাত দিয়ানাহ্, পারমিতা দেব মিতা, রওনক জাহান ওয়ারা, পরশ চৌধুরী, অংশুমান দে, তপশ্রী চক্রবর্তী অর্পা, প্রত্যাশা চৌধুরী শ্যামা, রোহিত কান্তি কর, অর্পিতা দে, মহাশ্বেতা দেব পুরকায়স্থ শর্শ ও তৃষাণ দেব প্রয়াস।



নেপথ্যে আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন নির্দেশক হুমায়ন কবির জুয়েল, আলোক প্রক্ষেপণ ছিলেন চম্পক সরকার, সহযোগি তিথি খান, মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন রিপন চৌধুরী ও রুশো চৌধুরী, আবহ সংগীত পরিকল্পনায় ছিলেন নাটকের লেখক নাহিদ পারভেজ বাবু, আবহ সংগীতে ছিলেন সামান্তা ঘোষ, রূপসজ্জায় ছিলেন আনোয়ার হোসেন রানা, সুমন রায় ও শিপলু রাহাত, মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় ছিলেন শান্তনু সেন তাপ্পু, এনামুল হক সামি ও প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী সানি, প্রযোজনা অধিকর্তা ও পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন নাজমা পারভিন।     

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.