Sylhet Today 24 PRINT

শিল্পী অরূপ বাউল ও তার ইপিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১২ মার্চ, ২০২১

বিখ্যাত কেউ মারা গেছেন, বিশিষ্ট কারো জন্মদিন, বিশেষ কোনো দিবস বা বড় কোনো ঘটনা- এরকম উপলক্ষ এলে এখন অনেকেই ঢুঁ মারেন অরূপের ফেসবুক দেয়ালে। কেন?- অরূপ ওই বিশেষ ব্যক্তি বা ঘটনা বা দিবস নিয়ে নতুন কোনো ডিজাইন তৈরি করেছেন কি না তা দেখার জন্য।

এরকম বিশেষ ইস্যুতে অরূপের করা শিল্পকর্মটি নিজের টাইমলাইনে দেওয়ার পরই তা ছড়িয়ে পড়ে আরও অনেকের ফেসবুক দেয়ালে। অনলাইনের ভাষায় যাকে বলে ভাইরাল হয়ে পড়া।

অনেকদিন ধরেই এমনটি হয়ে আসছে। বিশেষ ইস্যু মানেই ফেসবুকজুড়ে অরূপের ডিজাইন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অরূপের ইলাস্ট্রেশন নতুন কোনো বার্তা নিয়ে আসে, ছবি যেন অনেক কিছুই বলে দিতে চায়, বলে দেয়।

এতকিছু লিখে ফেলা হলো, কিন্তু এখনও তার পুরো নামটি বলা হলো না। এর বিশেষ কোনো প্রয়োজনও নেই বোধহয়। অরূপ বলতে যে এখানে অরূপ বাউলের কথা বলা হচ্ছে তা বেশিরভাগ পাঠক মাত্রই বুঝে গেছেন। বিশেষ ইস্যুকে তাৎক্ষণিক শৈল্পিক রূপে প্রকাশে অরূপ তো ইতোমধ্যেই নিজেকে আলাদা করে নিয়েছেন।

সিলেট অঞ্চল তো বটেই, সিলেটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে অরূপের শিল্পকর্মের দ্যুতি। এমনকি দেশের বাইরেও। আর সিলেটে কোনো একটা ঘটনার প্রতিবাদ বা কোনো ঘটনাকে উদযাপনের জন্য তো এখন অরূপের ডিজাইনেরই দ্বারস্থ হতে হয়।

নতুন নাটক হবে, পোষ্টার-লোগো ডিজাইন অরূপের। বড় অনুষ্ঠান হবে, মঞ্চসজ্জ্বা অরূপের। নতুন বই বের হবে- অরূপ তৈরি করবেন প্রচ্ছদ। কিংবা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বা ধর্ষণের প্রতিবাদ হবে, এটারও ব্যানার ডিজাইন করবেন অরূপ।  

ফলে অনেকদিন থেকেই এই নগরের প্রায় সব আনন্দ-বেদনা উদযাপনের সঙ্গী হয়ে ওঠেছেন অরূপ বাউল।

হঠাৎ করেই অরূপকে নিয়ে এতো কথা বলার কারণ নিজের শিল্প সৃষ্টি ও প্রচারে নতুন একটি আস্তানা গড়ে তুলেছেন তিনি। গড়ে তুলেছেন  'ইপিএস' নামে নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান।

অরূপের মতে, ইপিএস শুধুই গ্রাফিক ডিজাইন কিংবা বিজ্ঞাপনি সংস্থা নয়। এরচেয়েও বেশি কিছু। ভিন্ন কিছু।

ইপিএস প্রাঙ্গণে ঢুকলেই চোখে পড়ে দৃষ্টিকাড়া সব গ্রাফিটিকর্ম। এছাড়া কার্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরিধিও অরূপ গড়েছেন নিজ হাতে, যেখানে মনকাড়া সব ডিজাইন চোখে পড়বে। পুরো প্রতিষ্ঠানজুড়ে শিল্পের ছাপ। পরিমিতিবোধের ছাপ।

ইপিএস'র মাধ্যমে এখন নিজের শিল্পকর্ম আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চান অরূপ। বাণিজ্যিক থেকে অবাণিজ্যিক, সামাজিক থেকে সাংস্কৃতিক, প্রেম থেকে প্রতিবাদ, আনন্দ থেকে বেদনা- সকল আয়োজনেই নিজের সৃষ্টিশীলতার ছাপ রাখতে চান। বইয়ের পাতায় পাতায় ফুটিয়ে তুলতে চান নিজের সৃজনশীলতা।

নগরের জল্লারপার এলাকায় গড়ে ওঠা অরূপের ইপিএস ইতোমধ্যে সৌন্দর্যপিপাসু আগ্রহী নগরবাসীর নজর কেড়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে অনেকেও নিজেদের আয়োজনটুকু রাঙিয়ে তুলতে ইপিএস'র শরণাপন্ন হচ্ছেন।

অরূপ মূলত থিয়েটারকর্মী। গান-নাটকে সিলেটের মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন তারা। থিয়েটারে মঞ্চ, পোশাক আর নাটকের ডিজাইন করে করেই  ডিজাইনের প্রতি মোহ চলে আসে তার। এইসব করতে করতে হয়ে ওঠেন পেশা ও নেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার।

তরুণ গ্রাফিক ডিজাইনার অরূপ তার ডিজাইনের ভিত গড়েন মূলত সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিচিত্র সব নকশা দিয়ে। নিজের শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের লোগো, ব্যানার, মঞ্চ গড়তে গড়তেই নেমে যান এই মুক্তপেশায়। সৃজনীশৈলীর বাহাদুরিতে ক্রমেই নাম আর প্রশংসা কুড়ান। ব্যতিক্রমী আইডিয়া আর রঙের বিন্যাস দিয়ে নজর কেড়েছেন সবার।

শিল্পী অরূপের এবার উদ্যোক্তা অরূপ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার পালা। নিজের শিল্পকর্মের প্রতিষ্ঠান ইপিএস (www.epsads.com) নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পালা।

[প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ডিজাইনগুলো অরূপ বাউলের]

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.