Sylhet Today 24 PRINT

কী আছে মডেল মসজিদগুলোতে

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৯ জুন, ২০২১

কথা ছিল সৌদি সরকার অর্থ সহায়তা দেবে বাংলাদেশের মডেল মসজিদগুলোতে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যায়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হননি। তাই প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে নির্মাণ হচ্ছে ৫৬০টি মডেল মসজিদ। এই মসজিদগুলোর মধ্যে ৫০টি উদ্বোধন করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন।

এই মডেল মসজিদ করতে ব্যয় হচ্ছে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। প্রতি জেলা, উপজেলা এবং উপকূল এলাকায় মসজিদগুলো তৈরি হচ্ছে।

যে ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হচ্ছে তার মধ্যে পাঁচটি জেলা পর্যায়ে এবং ৪৫ টি উপজেলা পর্যায়ে। তিন ক্যাটাগরির মসজিদের মধ্যে জেলা ও মহানগরে ৬৯টি এবং বাকিগুলো উপজেলা উপকূলীয় এলাকায়।

জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রতিটি মসজিদ তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা। উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পে সৌদি সরকারের অর্থায়নের কথা থাকলেও পরে তারা করেনি। এখন পুরো প্রকল্পটিই সরকারের অর্থে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন।

মসজিদগুলো ৪০ শতাংশ জমির ওপর জেলা পর্যায়ে চার তলা, উপজেলা পর্যায়ে তিন তলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চার তলা ভবন। মসজিদে একই সঙ্গে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে কাজ করবে। নারীদের আলাদা নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

উপজেলা পর্যায়ের মসজিদে ৯০০ এবং জেলা পর্যায়ের মসজিদে এক হাজার ২০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন।

মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রকল্পে নারী ও পুরুষের নামাজ আদায় ছাড়াও থাকছে ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, লাইব্রেরি, অটিজম কর্ণার, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার,ইসলামি গবেষণা ও দাওয়া কার্যক্রম, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, পর্যটকদের আবাসন, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন প্রভৃতি।

প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবর রহমান জানান,"বিশুদ্ধ ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত হবে এই মসজিদগুলো। পরিচালনা করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।'' তিনি আরও জানান," বিশ্বে কোনো মুসলিম শাসকের একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ এই প্রথম।”

নজিবর রহমান জানান, "এই মসদিগুলোতে ইবাদতের পাশাপাশি আরও অনেক সামাজিক কর্মকাণ্ড হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারের পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে। আর এই মসজিদগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিবন্ধিদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা এবং তাদের মসজিদে প্রবেশের জন্য আলাদা র‌্যাম থাকবে।”

মসজিদগুলোতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিসও থাকবে। মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ সাত হাজার জনবল নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ মনে করেন, এই মসজিদগুলো ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। কারণ বাংলাদেশে মসজিদগুলো ইবাদতকেন্দ্রিক। কিন্তু ইসলামে মসজিদের যে মূল ধারণা তা হলো ইবাদতের পাশাপাশি মসজিদগুলো সামাজিক কর্মকাণ্ডেরও প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। কিন্তু এখানে তা হয়নি। তিনি বলেন," মডেল মসজিদগুলো যে ধারণায় তৈরি হচ্ছে তাতে এগুলো সামাজিক কর্মকাণ্ডেরও প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত হবে। এখানে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও থাকবে। মানুষকে সহযোগিতার অনেক উদ্যোগ থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, মডেল মসজিদগুলোতে নিযুক্তরা সরকারি বেতন পাবেন। বাংলাদেশে অনেক মসজিদ আছে যার আয় অনেক। কিন্তু মসজিদ কমিটি ইমাম মুয়াজ্জিনদের সেরকম বেতন দেয় না। আবার অনেক মসজিদের অর্থিক অবস্থা খারাপ। ফলে এখন বেতনের ক্ষেত্রে একটি ভালো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

প্রসঙ্গত, প্রকল্পটি চলতি জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আরও দুই বছর সময় বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.