Sylhet Today 24 PRINT

বিয়ানীবাজারের আদা-জামির : দেশ-বিদেশে কদর বাড়ছে

শাবুল আহমেদ, বিয়ানীবাজার |  ০১ জানুয়ারী, ২০১৬

আদা-জামির। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে এ ফলের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় এর চাষাবাদ হলেও বিশেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ ফলের কদর সবচেয়ে বেশী।

দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের মানুষের খাবারে তালিকার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত সিলেট অঞ্চলের মানুষের খাবারের তালিকায় এটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে নিয়েছে। মূলত স্বজনদের মাধ্যমে তাঁরা বিদেশে বসেও এ ফলের স্বাদ নিতে পারেন।

মাছ-মাংস, ডালসহ বিভিন্ন রকমের তরিতরকারিতে পরিমাণগত ব্যবহার করা যায়। এতে করে খাবারের স্বাদ ও সুগন্ধ বেড়ে যায়। এছাড়া রোদে শুকিয়ে বেশী দিন রেখে এবং আচার করে পরবর্তীতে রান্নায় ব্যবহার করা যায়। তবে খাবার প্রক্রিয়া না জানায় দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠীর নিকট আদা-জামির এখনও অনেকটাই অপরিচিত নাম।

ফল-ফলদ তথা অর্থকরী ফসলের জন্য বিখ্যাত সিলেটের বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় এ ফলন হয়ে থাকে। বিশেষ করে উপজেলার টিলাবেষ্টিত ঐতিহ্যবাহী জলঢুপে আদা-জামিরের ফলন সবচেয়ে বেশী হয়। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি এই জলঢুপের আনারস ইতিহাসখ্যাত। কমলা চাষাবাদেও এ অঞ্চলের রয়েছে যথেষ্ট সুনাম।

বিশেষ করে শীত মৌসুমে, জাম্বুরা, কমলা, সাতকরা, আদা-জামির, শাসনি এসবের ফলন সবচেয়ে বেশী দেখা যায়। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাহিদা মেটায় এই মৌসুমি ফল। গাঢ় সবুজ রঙের গোলাকৃতি আদা-জামির প্রকারভেদে ৭০-১০০ টাকা হালি প্রতি বিক্রি হয়ে থাকে। ভরা মৌসুমে আদা-জামির উল্লেখিত দরে বিক্রি হলেও অন্য সময়ে তা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

পাহাড়ি এলাকায় আদা-জামিরের ফলন প্রচুর হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্টদের মতে, পরিকল্পিত চাষাবাদের মাধ্যমে এর উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

জলঢুপ পাটুলী এলাকার বাসিন্দা তরুণ উদ্যোক্তা মিসবাহ উদ্দিন বলেন, আগে আমাদের এলাকায় প্রচুর-পরিমাণে কমলা, আদা-জামিরের চাষাবাদ হতো কালের বিবর্তনে এর ফলন একেবারে কমে গেছে। বিশেষ করে টিলা কাটার ফলে এবং মাটির উর্বরতা হ্রাস পাওয়ায় চাষাবাদ ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। তিনি জানান- টিলা কাটা বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানোর সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে স্থানীয় চাষিরা এ ফলের চাষাবাদে আগ্রহ দেখাতে পারে।

বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের ছাত্রী জলঢুপ গ্রামের বাসিন্দা নাহিদা পারভীন বলেন, ‘আগে আমাদের বাড়িতে প্রচুর আদা-জামিরের গাছ ছিল কিন্তু হঠাৎ করে বিগত কয়েক বছর ধরে বেশীরভাগ গাছ মরে গেছে; যে কয়েকটি রয়েছে সেগুলোও বিলুপ্তির পথে।’

বৃক্ষরোপণে নতুন প্রজন্মের আগ্রহের অভাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই যদি এসব ফল-ফলদের চারা লাগাই তবে দেশীয় এ ফলের সু-খ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে দেশ এবং জাতি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.