Sylhet Today 24 PRINT

টাইমের প্রভাবশালীদের তালিকায় কে এই মেরিনা তাবাসসুম

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী টাইমের ২০২৪ সালের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় আছেন বাংলাদেশের স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম।

উদ্ভাবক ক্যাটাগরিতে তালিকায় স্থান পাওয়া মেরিনা স্থাপত্যশিল্পে দেশে-বিদেশে পরিচিত মুখ।

টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালীদের তালিকায় স্থান পাওয়া মেরিনা তাবাসসুমকে নিয়ে আগ্রহ স্বাভাবিকভাবেই।

কে এই মেরিনা তাবাসসুম
১৯৬৮ সালে ঢাকায় জন্ম মেরিনা তাবাসসুমের। তার বাবা ছিলেন একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তার পরিবার ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন। বাংলাদেশে এসে তার পরিবার ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।

মেরিনা হলিক্রস বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং কলেজে পড়াশোনা শেষ করে, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্য বিভাগে ভর্তি হন।

১৯৯৪ সালে সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরের বছর ১৯৯৫ সালে মেরিনা স্থপতি কাশেফ চৌধুরীর সঙ্গে মিলে স্থাপত্য ফার্ম আরবানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ফার্মটি প্রায় ১০ বছর ধরে বেশ কয়েকটি প্রকল্প নকশা করেছিল।

এরপর ২০০৫ সালে তিনি নিজের ফার্ম আর্কিটেক্টস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে প্রধান স্থপতি হিসেবে কাজ শুরু করেন।

সেই বছরই মেরিনা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পরিদর্শন অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।

এছাড়া তিনি এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন, সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সম্মেলনে বক্তৃতা ও উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন।

কী কারণে প্রভাবশালীদের তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম?
সুলতানি আমলের স্থাপত্য রীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১২ সালে নির্মিত ঢাকার বায়তুর রউফ মসজিদের নকশা করেছিলেন মেরিনা তাবাসসুম।

মসজিদে গম্বুজ ব্যবহার না করে ব্যতিক্রমী স্তম্ভ এবং মাটির প্যালেট ব্যবহার করেছিলেন। তবে মসজিদটির সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে ছাদ ও দেয়ালের ছিদ্র দিয়ে মসজিদের ভেতরে আলো প্রবাহের বিষয়টি। অসাধারণ এই নকশা তাকে এনে দেয় স্থাপত্যে সম্মানজনক পুরস্কার ‘আগা খান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার’।

মসজিদটির জন্য স্থপতি হিসেবে ২০১৮ সালে জামিল পুরস্কারও পেয়েছিলেন।

এ ছাড়া ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত ভূগর্ভস্থ স্বাধীনতা জাদুঘর নির্মাণে দুজন নকশাবিদের মধ্যে তিনি একজন।

কম্পোর্ট রিভেরি, অবকাশ বাড়ি, যশোরের পানিগ্রাম ইকো রিসোর্ট এবং বাংলাদেশের উপকূলবর্তী চরগুলোর জন্য বাড়ি নির্মাণে ভূমিকা রাখেন।

শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরেও কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন মেরিনা। তার অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ২০২১ সালে আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড লেটারস অ্যাওয়ার্ডসের সোয়ান পদক পান।

২০২২ সালে লিসবন আর্কিটেকচার ট্রিয়েনালে মিলেনিয়াম লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হন তিনি।

আর এই ধারাবাহিকতায় এ বছর টাইমের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন তিনি।

মেরিনা তাবাসসুম সম্পর্কে যা বলছে টাইম:
কেন বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন মনে করা হচ্ছে সে প্রসঙ্গে টাইম ম্যাগাজিন উল্লেখ করেছে, ‘পুরস্কারপ্রাপ্ত স্থপতিরা সাধারণত ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে কাজ করেন, পরোপকারের জন্য নয়। মেরিনা এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ভবন নকশার ক্ষেত্রে তিনি এমন এক পদ্ধতি সময়ের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন, যা বরাবরই স্থানীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। আমাদের গ্রহ যেসব বিপদের মুখোমুখি, সেসব নিয়ে তার চিন্তার প্রতিফলনও তার কাজে প্রকাশ পায়।’

টাইম ম্যাগাজিনের জন্য হার্ভার্ড স্কুল ফর ডিজাইনের ডিন সারাহ হোয়াইটিংয়ের লেখা তাবাসসুমের প্রশংসাপত্রে বলা হয়েছে, ‘তাবাসসুমের নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার প্রমাণ তার ভবনগুলোতেও দেখা যায়। পৃথিবীর সম্পদ ভোগকারী একজন হিসেবে তার সৃষ্টির যত্ন নেন।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.