Sylhet Today 24 PRINT

চিকুনগুনিয়া কী, যেভাবে প্রতিরোধ করবেন

ডা. এনামুল হক এনাম |  ২০ জুন, ২০১৭

চিকুনগুনিয়া কী
চিকুনগুনিয়া (Chikungunya) হচ্ছে ভাইরাসজনিত জ্বর, যা চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের সংক্রমণে হয়ে থাকে। চিকুনগুনিয়া একটি তানজানিয়ান শব্দ, এর আভিধানিক অর্থ “বেঁকে যাওয়া”। ১৯৫২ সালে আফ্রিকার মেকন্দ, মোজাম্বিক ও তানজানিয়া এলাকায় এই রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। এ রোগের কোনো প্রতিষেধক এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি।

কিভাবে ছড়ায়
‘চিকুনগুনিয়া’ মশাবাহিত রোগ। এটি এডিস মশা দ্বারা ছড়ায়, যা মানবদেহ থেকে মশা এবং মশা থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে থাকে। মানুষ এবং মশা ছাড়াও বানর, পাখি এবং ইঁদুরেরও রক্তে এই রোগের ভাইরাস পাওয়া গেছে।

কী ধরণের উপসর্গে জানবেন আপনি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত
এই জ্বরের লক্ষণগুলো অন্যান্য সকল ভাইরাল জ্বরের মতো, তিন থেকে সাতদিনের মত জ্বর থাকে। কোন ক্ষেত্রে জ্বর ১২দিনও স্থায়ী হতে পারে। জ্বরের সাথে অস্থিসন্ধিতে (হাড়ের জোড়ায়) তীব্র ব্যথা এই রোগের একটি স্বতন্ত্র উপসর্গ।

জ্বরের সাথে মাথাব্যথা, চোখ জ্বালাপোড়া, বমিভাব, শারীরিক দুর্বলতা, সর্দি-কাশি, রাশ ইত্যাদি থাকতে পারে।

অত্যধিক জ্বরের কারণে শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়বে, স্বাভাবিক হাঁটাচলায়ও কষ্ট হবে, অস্থিসন্ধির ব্যথা এত তীব্র হতে পারে যে হাত দিয়ে কিছু মুঠো করে ধরতেও কষ্ট হয়। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ফুসকুড়ি হতে পারে, রোগের শুরুতেই ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে তবে অনেক সময় রোগ শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন দিন পর জ্বর কমতে শুরু করলে ফুসকুড়ির আবির্ভাব হয়।

রোগ সনাক্তকরণ
রক্ত পরীক্ষা মাধ্যমে ভাইরাস উপস্থিতি, RT-PCR কিংবা সেরোলজি টেস্টের এ রোগ শনাক্ত করা যেতে পারে। রোগীর রক্তে ভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া এন্টিবডি দেখে এ রোগ সনাক্ত করা যেতে পারে। এতে অনেক ক্ষেত্রে ২ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

চিকুনগুনিয়ায় কী চিকিৎসা নেবেন
সর্বপ্রথম যেটা জরুরি তা হলো আপনি আতঙ্কিত হবে না।

৭ থেকে ১০ দিনের ভেতর জ্বর স্বাভাবিক নিয়মেই ভাল হয়ে যায়। জ্বরের জন্য সাধারণ প্যারাসিটামলই যথেষ্ট।

বেশি জ্বর হলে শরীর মুছে দিতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি, সরবত এবং অন্যান্য তরল জাতীয় খাবার খাবেন।

তবে আপনার চিকুনগুনিয়া হয়েছে এমন সন্দেহ হলে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষাসহ ঔষধ সেবন করবেন।

কিভাবে প্রতিরোধ করবেন
আপনার বা আপনার পরিবারে বা প্রতিবেশী কারো চিকুনগুনিয়া রোগ হয়েছে অর্থাৎ আপনার বাড়ির আশেপাশে চিকুনগুনিয়া রোগবাহী “এডিস” মশার উপস্থিতি আছে। মশা থেকে মশারী ব্যবহার করতে হবে।

এডিস মশা স্বচ্ছ জলাবদ্ধ জায়গায় বংশবৃদ্ধি করে, যেমন ফুলের টব বা টিনের কৌটায় জমে থাকা পানি, নষ্ট টায়ারে জমে থাকা বৃষ্টির পানি। বাড়ির আশপাশে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করতে এইসব স্থান পরিষ্কার করতে হবে এবং মশা মারার ঔষধ ছিটিয়ে দিতে হবে।

আরেকটি ব্যাপার লক্ষণীয় যে, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীকেও মশারির নিচে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে যাতে তাকে মশা না কামড়ায়। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তিকে মশা কামড়ালে অন্যদেরও একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.