ডা. মোহাম্মদ সাঈদ এনাম | ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
ছবি: সংগ্রহ
সম্প্রতি অনলাইন নিউজে ভারতে গো-মূত্র পানের হিড়িক পড়ার খবর বেশ প্রচার পাচ্ছে। যারা গ্লাসের পর গ্লাস ঢুক ঢুক করে পান করছেন তাদের ধারনা গো-মূত্র পানে, জ্বর, গ্যাস্ট্রিক আলসার, খিঁচুনি, লেপ্রসি, ক্যান্সারের মতো রোগ সেরে যায়। আর মনে প্রাণে এটা বিশ্বাস করে লিটারে-লিটার গো-মূত্র কিনে পান করার হিড়িক পড়ে গেছে ভারতের সর্বত্র।
কী আছে এই গো-মূত্রে?
আসলে গো-মূত্র আর মানব মূত্রের উপাদান প্রায় একই। শতকরা ৯৫% ভাগ পানি, কিছু মিনারেলস যেমন সোডিয়াম, পটাসিয়াম, কিছু হরমোনাল মেটাবলাইটস। যে গো-মূত্র পানের হিড়িকে বাজারে মূত্রের দাম দুধের দামের তিন গুন সেটা সাধারণ গো-মূত্র নয় কিন্তু। এটা হলো গর্ভবতী গাভীর মূত্র। গরু গর্ভবতী থাকায় তাতে নাকি এসব রোগের উপশমকারী উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। তাই দুধ রেখে দলে দলে গ্লাসে গ্লাসে গো-মূত্র পানের হিড়িক পড়েছে।
যদিও ভারতের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বার বার বলেছেন এর কোন সায়েন্টিফিক ভিত্তি নেই তবুও স্রেফ বিশ্বাস বলে এই লংকাকাণ্ড ঘটে চলেছে ভারতে। কে শুনে কার কথা, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।
অনেক আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ বলছেন ভিন্ন কথা। যেহেতু ধরণিতে গাছগাছালিতে সব রোগের উপাদান বিদ্যমান, আর গরুর প্রধান খাদ্য সবুজ ঘাস, তাই তাদের হাইপোথিসিস, গো-মূত্রে গাছ গাছালির ভেষজ গুনাগুণ থাকাটাই স্বাভাবিক।
কোথায় কোথায় গো-মূত্র পান হয়?
গো-মূত্র পান যে কেবল ভারতেই তা কিন্তু নয়। এই কর্মটিতে মুসলিম প্রধান দেশ নাইজেরিয়া এবং বৌদ্ধ প্রধান দেশ মায়ানমারও অগ্রগামী।
গো-মূত্রে ক্যান্সার, খিচুনি, লেপ্রসি, পেপটিক আলসার এর উপশম হয়েছে কিনা খবরটি নিশ্চিত করে না গেলেও, গো-মূত্র পানের বিষক্রিয়ায় অনেক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।