Sylhet Today 24 PRINT

বিশ্বের সব চেয়ে বড় কাঠবিড়ালি \"মালয়ান\" আছে রেমা-কালেঙ্গায়

রিপন দে, মৌলভীবাজার |  ৩১ মার্চ, ২০১৯

ছবিঃ জাহিদুল ইসলাম

বাংলাদেশে মোট ৮ প্রজাতির কাঠবিড়ালি আছে তার মধ্যে সব থেকে বড়  মালয়ান কাঠবিড়ালি, মালয়ান কাঠবিড়ালিকে বলা হয় বিশ্বের সবচে বড় কাঠবিড়ালি। মালয়ান বড় কাঠবিড়ালি দেখতে সাধারন কাঠবিড়ালির মত নয়। আকৃতিতে অন্যান্য কাঠবিড়ালির তুলনায় এরা বেশ বড়। বিশাল লম্বা লেজ আর বড় বড় কান দেখলে মনে হতে পারে বানর জাতীয় কিছু। সংকটাপন্ন প্রজাতি এই কাঠবিড়ালির দেখা মিলে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বনে।

এদের ইংরেজিতে নাম Black giant squirrel বা Malayan giant squirrel বৈজ্ঞানিক নাম Ratufa bicolor। মালয়ান কাঠবিড়ালির দেহের দৈর্ঘ্য মাথাসহ প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার। আর লেজ ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। প্রচলিত আছে বাংলাদেশের শুধু একমাত্র হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের  বিরল এই প্রানীর দেখা মিলে। তবে  বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে অন্য বনেও আছে  তবে তা সংখ্যায় এত কম যে খুব সহজে দেখা যায়না।

আইইউসিএন এই কাঠবিড়ালিকে সংকটাপন্ন প্রজাতি হিসেবে সনাক্ত করেছে।  ক্রমাগতভাবে বন ধ্বংস, বনের প্রাকৃতিক প্রতিবেশ ব্যবস্থা বিনষ্ট করা, বনের পুরনো এবং দীর্ঘদেহী বৃক্ষগুলো উজাড়, বনে নতুন করে বসতি স্থাপন, দীর্ঘদিন ধরে বনে বাস করা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষরা বন্যপ্রাণীদের গোপনে শিকার বা হত্যা করার কারণে মালয়ান কাঠবিড়ালির অস্তিত্ব এখন সংকটের মুখে।

বনের পরিবেশ রক্ষা না করতে পারলে এরা অচিরেই হারিয়ে যাবে। একটি পূর্ণবয়স্ক কাঠবিড়ালি সব মিলিয়ে দেড় মিটারের মত লম্বা এবং প্রায় দুই কেজি ওজন হতে পারে। এদের মাথা, কান, লেজসহ পৃষ্ঠদেশ কালো বা মেরুন বর্ণের এবং পেটের দিকটা সাদা হয়। গাছের মগডালে ডালপালা ও পাতা দিয়ে বাসা তৈরি করে থাকে। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রজনন মৌসুম। বাংলাদেশের পাশাপাশি চীন, নেপাল, ভারত, মায়ানমার, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালেয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া এই দেশগুলোর গহিন বনে মালয়ান কাঠবিড়ালির দেখা মেলে। মূলত তৃণভোজী এই কাঠবিড়ালির খাদ্য তালিকায় রয়েছে বুনো ফল, বীজ ও কচি পাতা।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরেফিন খান জানান, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঠবিড়ালি। বাংলাদেশে কেবল রেমা-কালেঙ্গাতেই পাওয়া যায়। তিনি আরো জানান, এই প্রাণীটি প্রাকৃতিক বনেই থাকে, তাই এখনই বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী না হলে মালয়ান কাঠবিড়ালি হারিয়ে যাবে আমাদের দেশ থেকে।

জাবির প্রানিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মনিরুল এইচ খান জানান, আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে মৌলভীবাজারের আদমপুর বনবিটে একটি মালয়ান কাঠবিড়ালি নিজের চোখে দেখেছেন, অন্য বনে এদের অবস্থান থাকলেও সাধারনত দেখা যায়না তবে দেশে একমাত্র রেমা কালেঙ্গা বনে এদের সহজে দেখা মিলে এবং এই বনে এদের অবস্থা ভাল ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.