Sylhet Today 24 PRINT

বুকে ব্যথা, ধড়ফড়ানি, ঘেমে যাওয়া মানেই কি হার্টের রোগী?

ডা. মো. শফিউল ইসলাম খালেদ |  ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

প্যানিক অ্যাটাক এবং হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো প্রায় একই। তাই প্যানিক অ্যাটাককে অনেকে হার্ট অ্যাটাক হিসেবে গ্রহণ করে। এর প্রধান কারণ- উভয় ক্ষেত্রে ব্যক্তি বুকের ব্যথা অনুভব করে। তবে প্যানিক অ্যাটাক, হৃৎপিণ্ডের অসুখের মতো মারাত্মক নয়। তাই দুই অ্যাটাকের মধ্যে পার্থক্যটা জানাটা জরুরি।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
* বুকে ব্যথা বাড়তেই থাকে, কয়েক মিনিটের মধ্যে তীব্রতায় রূপ নেয়।
* বুক ভার হয়ে আসে এবং পুরো বুকে ছড়িয়ে পড়ে।
* বুক থেকে ব্যথা শরীরের অন্যান্য অংশে- হাত, পেট, পিঠ, কাঁধ, ঘাড় এবং চোয়ালে ছড়িয়ে পড়ে।
* শারীরিক পরিশ্রমের সময় বুকে ব্যথা হয়।
* শ্বাসকষ্ট

প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণ
* বুক ধড়ফড়
* বুকে ব্যথা অনুভব, যা ৫-১০ সেকেন্ডের জন্য থাকে।
* ব্যথা এক জায়গায় স্থায়ী হয়েছে বলে মনে হয়।
* ব্যথা সাধারণত আরও বাকি রয়েছে বলে অনুভূত হয়।
* ব্যথা উদ্বেগ দ্বারা অনুষঙ্গ হয়।
* পজিশনের পরিবর্তনে ব্যথা দুর্বল হয়।
* ব্যথা স্থানে চাপ দিলে ব্যথা বৃদ্ধি বা পুনরাবৃত্তি অনুভব হয়।

এছাড়া আরও কিছু লক্ষণ রয়েছে প্যানিক এবং হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে। উভয় ক্ষেত্রে লক্ষণ কাছাকাছি হলেও, হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে শারীরিক রোগ আর প্যানিক অ্যাটাক মানসিক রোগ। হার্টের সমস্যার ভয় থেকেই প্যানিক অ্যাটাকে ভোগে অনেকে। এছাড়া এ রোগে আক্রান্তরা হয়তো কোনো কারণ ছাড়া উদ্বিগ্ন হয়ে যায় এবং নির্দিষ্ট কোনো পরিস্থিতিতে পড়লে প্রচণ্ড আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা প্যানিক অ্যাটাকের রোগীদের তাই মানসিক বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসার সেবার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

বস্তুত প্যানিক ডিসঅর্ডার শরীরের কোনো রোগ বা সমস্যা নয়। এটি একটি মানসিক রোগ। দেখা যায়, রোগীরা সমস্যা নিয়ে বারবার বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন-ইসিজি, ইকো থেকে শুরু করে হার্টের এনজিওগ্রাম পর্যন্ত অনেকের করা হয়ে যায়। বিভিন্ন রকমের রক্ত পরীক্ষা তো আছেই। সে সঙ্গে অনেক সময় রোগী নিজেও বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করিয়ে নেন নিজের সমস্যাটি আবিষ্কারের জন্য।

কোনো পরীক্ষাতেই কোনো কিছু ধরা না পড়াতে অনেকে ভাবেন- ডাক্তার মনে হয় ঠিক মতো রোগটি ধরতে পারছেন না। কিংবা পরীক্ষাগুলোর রেজাল্ট হয়তো ঠিক মতো আসছে না। অনেক ডাক্তারও রোগীকে বলে দেন, ‘আপনার কোনো রোগ নেই’। আর এতে রোগী বা রোগীর আত্মীয়-স্বজন আরও বেশি দ্বিধার মধ্যে পড়ে যান।

ভাবেন- তাহলে এমন সমস্যা হচ্ছে কেন? এমনকি অনেকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পর্যন্ত চলে যান।

মনোচিকিৎসক এর সাথে যোগাযোগ এর মাধ্যমে এর সমাধানের রাস্তা পাওয়া যেতে পারে।চিকিৎসক এর পরামর্শ মত এনক্সিওলাইটিক মেডিসিন ২০/২১ দিনের জন্যে খাওয়া যেতে পারে।কিংবা এস এস আর আই গ্রুপের কোন মেডিসিন দীর্ঘ মেয়াদী ভাবে দেয়া হয়। সাথে উন্নত জীবন ধারণ করা উচিত। তার মধ্যে হাঁটা, ব্যায়াম, গান শোনা, পছন্দের ছবি দেখা, অপরিচিত নূতন কোথাও বেড়ানো অন্যতম।

  • ডা. মো. শফিউল ইসলাম খালেদ: এসোসিয়েট প্রফেসর অব সাইকিয়াট্রি, জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.