Sylhet Today 24 PRINT

শাপলা বিলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ দেশি-বিদেশি শিল্পী-পর্যটক

শোয়েব উদ্দিন, জৈন্তাপুর |  ১২ জানুয়ারী, ২০২০

সিলেটের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত পান-পানি-নারী খ্যাত জৈন্তাপুর উপজেলা। সিলেটের বিলগুলোও কিন্তু বেশ নামকরা। জৈন্তাপুর উপজেলা সেরকমই একটি জায়গা। এ উপজেলায় প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে ভরপুর। জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবির হাওর, কেন্দ্রীয় বিলসহ রয়েছে চারটি বিল। বিলগুলোকে কেন্দ্র করেই নাম করা হয়েছে ডিবির হাওর।

লাল শাপলা বিলের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের সবুজ পাহাড়ের পাদদেশ ঝর্ণা বেষ্টিত লাল শাপলার বিল। রাম সিংহের বিল এখন রূপ নিয়েছে লাল শাপলার রাজ্যে। স্বচ্ছ পানির উপরে লাল শাপলা ফুলের বড় এক প্রাকৃতিক স্বর্গ সৃষ্টি করে দাঁড়িয়ে আছে। আর লাল শাপলা রাজ্যের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকসহ সিলেট থেকে প্রকাশিত সব কয়েটি দৈনিক পত্রিকা এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ধারাবাহিক কয়েকটি প্রামাণ্য অনুষ্ঠান সম্প্রচার করার পর থেকে ডিবির হাওর এলাকার ৪টি বিল বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে পর্যটন স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক চিত্রশিল্পী মো. খায়রুল ইসলামের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রদর্শনীতে শাপলা বিলের ছবি প্রদর্শন করা হয়। ফলে জৈন্তিয়ার লাল শাপলার রাজ্যকে পর্যটন স্থান হিসাবে বাংলাদেশের মানচিত্রে দখল করে নেয়।

গত ১০ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লাল শাপলার বিলগুলোকে জল রঙের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর নিকট রঙ-তুলির আঁচড়ে লাল শাপলার রাজ্যের চিত্রকর্ম তৈরি করেন জার্মান চিত্রশিল্পী ক্লাউডিয়া, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিকালচার বিভাগের লেকচারার জুনায়েদ মোস্তফা, রাশেদ কামাল রাশেদ নিজ নিজ রঙ-তুলির আঁচড়ে জৈন্তাপুরের লাল শাপলার রাজ্যের বিভিন্ন চিত্রকর্ম ধারণ করেন।

রাশেদ কামাল রাশেদ বলেন, আপনাদের মাধ্যমে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই এই বিলগুলোর বিভিন্ন অংশে অবৈধ ভাবে দোকান, লাল শাপলা ধ্বংস করে বিলের জমি দখল করে ফসলী জমি তৈরি করা হচ্ছে দ্রুত অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে বিল গুলোকে রক্ষা করতে প্রশাসনের এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, অন্যথায় লাল শাপলার বিল অচিরেই তার সৌন্দর্য বিলীন হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, অচিরেই আমার ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে লাল শাপলার বিলে চিত্রকর্মের ওপর প্রশিক্ষণের জন্যে নিয়ে আসব।

জার্মানের চিত্রশিল্পী ক্লাউডিয়া জানান, বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যমত আকর্ষণীয় স্থান এটি। লাল শাপলায় অতিথি পাখি, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত বিষয়টি অকল্পনীয় লেগেছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সিলেটের লাল শাপলার পর্যটন স্থানটি অন্যতম। স্থানটি দেখে বিভিন্ন ভাবে ১০টি চিত্রকর্ম তৈরি করেছি, যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে তুলে ধরবেন বলে জানান তিনি।

ক্লাউডিয়া আরও বলেন, বিলে যাতায়াতের রাস্তাটির সংস্কার ও বিল এরিয়ায় অবৈধ স্থাপনা সরালে এটি আরও আকর্ষণীয় হত।

জৈন্তাপুর পুরার্কীতি ও পর্যটন উন্নয়ন সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করি বিলের লিজ বাতিল, পুরাকীর্তি সংরক্ষণ এবং লাল শাপলা বিলের প্রকৃত এরিয়া নির্ধারণ করে বিলটি সংরক্ষণ। কিন্তু বিলের লিজ বাতিল করা হলেও অজ্ঞাত কারণে বিলের এরিয়া নির্ধারণ করা হয়নি। ফলে প্রভাবশালী ভূমিখেকো চক্রের সদস্যরা বিলের প্রায় ২শত বিঘা জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ ও লাল শাপলা নষ্ট করে ফসলী জমিতে রূপান্তর করছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.