Sylhet Today 24 PRINT

অব্যবহৃত ডাটা পরের মাসে ফেরত

ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বেশ কিছ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ।

সিলেটটুডে ওয়েব ডেস্ক |  ১২ মার্চ, ২০১৫

ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাহকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বেশ কিছ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) । এরমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে
নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য কেনা ইন্টারনেট বা ডাটার ব্যবহার শেষ না হলেও কোনও চিন্তা নেই। পরের মাসে 'আগের মাসের অব্যবহৃত ডাটা' গ্রাহকের নতুন প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।

অন্যদিকে মোবাইল ফোনের সিম একটানা ৯০ দিন (৩ মাস) বন্ধ (অব্যবহৃত) থাকলে স্বয়ংক্রিভাবে তা অকার্যকর হয়ে যাবে। একটানা ৭৩০ দিন বন্ধ থাকলে সংশ্লিষ্ট সিমের মালিক তার সিমের মালিকানা হারাবেন। ফলে সিমটি অপারেটরা নতুন সিম হিসেবে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার একটি নির্দেশনা জারি ক‌‌‌রেছে। এ নির্দেশনার ফলে অন্তত ইন্টারনেট বিষয়ে গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে।

বর্তমানে মোবাইল অপারেটরগুলোর কাছ থেকে কেনা ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্যাকেজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার না হলে অব্যবহৃত ডাটা বাদ হয়ে যেত। এখন গ্রাহক যদি এক মাসের জন্য ১ গিগাবাইটের প্যাকেজ কেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুররোপুরি শেষ করতে না পারে এবং ডাটা থেকে যায় (ধরা যাক ২৫০ মেগা) তাহলে পরের মাসে নতুন প্যাকেজের সঙ্গে তা যোগ হয়ে যাবে। অন্যদিকে সিম বন্ধ থাকার ব্যাপারেও মোবাইল অপারেটরদের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না। এবার এ বিষয়ক অপারেটরদের দাবিরও একটি সুরাহা হলো।

বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লে. ক. মোহাম্মদ জুলফিকার স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনাকে বলা হয়েছে 'ডিরেক্টিভস অন সার্ভিস অ্যান্ড ট্যারিফ-২০১৫।' নির্দেশনাটি প্রযোজ্য সব সংস্থার প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন কার্যালয়ে নির্দেশনার কপি পৌঁছেছে। অপারেটরটির চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেইন নির্দেশনা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মোবাইল অপারেটর রবির মুখপাত্র মহিউদ্দিন বাবর জানান, কমিশনের জারি করা নির্দেশনা মেনে চলবে রবি। রবি একটি গ্রাহকবান্ধব মোবাইল অপারেটর উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যা করলে গ্রাহকের কল্যাণ হয় আমরা তাই-ই করব।'

এর আগে নির্দেশনার খসড়া তৈরি এবং চূড়ান্ত করতে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে কমিশন।

নির্দেশনায় ডাটার (ইন্টারনেট) ব্যাপারে বলা হয়েছে, অব্যবহৃত ডাটা পরের মাসে কেনা প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে এবং পরের মাসে 'আগের মাসের অব্যহৃত ডাটা'  ব্যবহার হবে। ওই ডাটা শেষ হলে তবেই নতুন ডাটা ব্যবহার হতে থাকবে।

আরও বলা হয়েছে ১০০ মেগার নিচে ১ বার, ১০০-৫০০ মেগার মধ্যে ২ বার এবং ৫০০ মেগার বেশি প্যাকেজের ডাটার ক্ষেত্রে গ্রাহককে ৩ বার নোটিফিকেশন পাঠানোর ক্থা। বিশেষ করে বেশি ডাটার ক্ষেত্রে প্রথমবার মোট ডাটার ৫০ ভাগ এবং দ্বিতীয়বার ৮০ ভাগ ডাটা শেষ হলে গ্রাহককে নোটিফিশেন পাঠাতে বলা হয়েছে। ডাটা শেষ হলেও নোটিফিকেশন দিতে হবে এবং ডাটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ইন্টারনেটের ব্যবহার চালিয়ে যেতে গ্রাহককে জানাতে হবে কীভাবে চার্জ ধরা হবে।

এদিকে মোবাইল সিম একটানা ৯০ দিন অব্যবহৃত অবস্থায় থাকলে স্বয়ংক্রিভাবে তা অকার্যকর হয়ে যাবে। তবে ৩৬৫ দিনের মধ্যে রিচার্জ করলে সিমটি অাবার সক্রিয় হবে। কিন্তু ৭৩০ দিনের আগে সিমটি পুনরায় চালু করতে চাইলে ন্যূনতম ১০০ টাকা চার্জ দিয়ে চালু করা যাবে। তবে তা সিমটির নিবন্ধন থাকা সাপেক্ষে করা যাবে।

একটানা ৭৩০ দিন সিম বন্ধ থাকলে সিমটি অপারেটরা 'নতুন সিম' হিসেবে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। ওই সিম বিক্রির আগে অপারেটরকে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সিমের (মোবাইল নম্বর) তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এ ছাড়াও ৩টি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে, কাস্টমার কেয়ারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও গ্রাহককে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

এ ছাড়াও কোন অপারেটর নতুন কোনও প্যাকেজ বা সেবার প্রমোশন করতে চাইলে তার মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ৩ দিন এবং সর্বোচ্চ ৬০ দিন। তবে কমিশনের কাছে আবেদন করে ওই প্রমোশনের মেয়াদ ১৫ দিন পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে (২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর) প্রমোশন করলে (প্যাকেজের) সে ক্ষেত্রে কমিশনের কাছে আলাদা করে আবেদন করতে হবে।

মাইগ্রেশনেও কোনও চার্জ নেওয়া যাবে না উল্লেখ করে নির্দেশনায় বলা হয়েছে গ্রাহক প্রি-পেইড থেকে পোস্ট পেইড বা পোস্ট পেইড থেকে প্রি-পেইড সেবায় যেতে চাইলে কোনও ধরনের মাইগ্রেশন চার্জ আরোপ করা যাবে না।

মোবাইলে রিচার্জ ও মেয়াদের ‌‌ক্ষেত্রে ৭টি ধাপ তৈরি করা হয়েছে। এতে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা রিচার্জে সেবার মেয়াদ ন্যূনতম ১০ দিন এবং এক হাজার বা তদুর্ধ্ব পরিমাণ টাকার রিচার্জের সেবার মেয়াদ ৩৬০ দিন ধরা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গ্রামীণফোন '৫ বছর ধরে বন্ধ' এমন মোবাইল সিম নতুন করে বাজারে ছাড়ে গত বছর। সে সময় এ বিষয়ে কমিশনের কোনও নির্দেশনা ছিল না। অপারেটরটি কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে সিম বিক্রি শুরু করে। সে সময় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে সিমের মালিকানা হারানো এবং অধিক মূল্যে সিম বিক্রি অভিযোগ ওঠে অপারেটরটির বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে কমিশনের নির্দেশে অপারেটরটি সিম বিক্রি বন্ধ করে।

এই নির্দেশনা জারির ফলে 'দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ সিমের' বিষয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.