Sylhet Today 24 PRINT

চীনে আরও একটি নতুন ভাইরাসের সন্ধান, ছড়াতে পারে মহামারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ৩০ জুন, ২০২০

চীনের বিজ্ঞানীরা নতুন প্রজাতির এমন একটি ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন, বিশ্বজুড়ে যার আরেকটি মহামারি ছড়ানোর মতো সক্ষমতা রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শূকরের দেহে নতুন এই ভাইরাসটি খুঁজে পাওয়া গেছে, যা মানুষকেও আক্রান্ত করতে পারে। খবর বিবিসির।

নতুন এই ভাইরাস নিয়ে কাজ করা গবেষকরা উদ্বেগ প্রকাশে করে বলেছেন, পরবর্তী সময়ে এই ভাইরাসের মিউটেশন ঘটতে পারে যার মাধ্যমে এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং একটি বৈশ্বিক মহামারির সূচনা করতে পারে।

গবেষকরা আরও বলছেন, যদিও এই মুহুর্তে এটি 'কোনও সমস্যা না', কিন্তু মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটাতে অভিযোজিত হওয়ার মতো 'সমস্ত নির্দেশক ছাপ' এই ভাইরাসের মধ্যে রয়েছে এবং এটিকে এখন থেকেই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন

বিজ্ঞানীদের মতে, যেহেতু এটি সম্পূর্ণ নতুন ভাইরাস, সেহেতু মানুষের দেহে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকার কথা, আবার থাকলেও সেটা খুব সামান্য।

ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস এর সাময়িকীতে এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকা বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, শুকরের দেহে থাকা এই ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং শুকরের খামার ও ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা লোকজনকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

মহামারির অশনিসংকেত
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনতে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা যখন দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তখনও মহামারি ছড়ানোর সুপ্ত ক্ষমতা থাকা নতুন এই ভাইরাসটির গবেষণায় নিবিড়ভাবে কাজ করছেন একদল বিজ্ঞানী।

করোনার আগে সর্বশেষ যে মহামারির মুখোমুখি হয়েছিলো বিশ্ব তা ছিলো সোয়াইন ফ্লু। ২০০৯ সালে মেক্সিকো থেকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভাইরাসকে প্রথমদিকে যতোটা ভয়ংকর বলে ধারণা করা হয়েছিলো, ততোটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেনি তা। পরবর্তী সময়ে ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ওই ভাইরাসটি প্রায় নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

চীনে খুঁজে পাওয়া নতুন এই ভাইরাসটির সঙ্গে সোয়াইন ফ্লু'র বেশ কিছু মিল আছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই ভাইরাসে নতুন কিছু দিকও আছে।

ভাইরাসটি এখন পর্যন্ত বড় কোনো হুমকি হিসেবে আত্মপ্রকাশ না করলেও এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানী প্রফেসর কিন-চো চ্যাং ও তার সঙ্গে কাজ করা গবেষক দলের মতে, এখন থেকে এটার ওপরে অবশ্যই নজর রাখতে হবে।

তাদের মতে, G4 EA H1N1 নামের এই ভাইরাসটি মানুষের শ্বাসনালীতে আক্রমণ করে কোষ বিভাজন ঘটাতে সক্ষম।

চীনের কসাইখানা ও শুকরের খামারে কাজ করা কয়েকজন ব্যক্তির শরীরে সম্প্রতি ভাইরাসটির সংক্রমণের প্রমাণ পেয়েছেন এই গবেষকদল। তারা বলছেন, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত হওয়া ফ্লু ভ্যাকসিনগুলো কার্যকর নয়।

যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কিন-চো চ্যাং বিবিসিকে বলেন, "এই মুহুর্তে আমরা করোনাভাইরাসের মোকাবিলা এবং এ সংক্রান্ত গবেষণা নিয়ে একটা বিভ্রান্তিকর সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বর্তমান সময়ে অন্যান্য সুপ্ত অথচ ভয়ংকর নতুন ভাইরাসগুলো থেকেও আমাদের চোখ সরালে চলবে না।"

তিনি বলেন, "যদিও এই ভাইরাসটি এখনই কোনো সমস্যা করছে না, তবুও এটিকে এড়িয়ে যাওয়া আমাদের উচিত হবে না।"

এ বিষয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জেমস উড বলেন, "এই গবেষণার মাধ্যমে আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা সবসময়ই নতুন নতুন রোগবালাইয়ের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি এবং খামারে পালন করা সেইসব প্রাণী, বন্যপ্রাণীর তুলনায় মানুষ বেশিভাগ ক্ষেত্রে যাদের সংস্পর্শে যায়,  তারাও গুরুত্বপূর্ণ মহামারী ভাইরাসগুলোর উত্স হিসাবে কাজ করতে পারে।"

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.