Sylhet Today 24 PRINT

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ২০০ গবেষকের চ্যালেঞ্জ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ০৫ জুলাই, ২০২০

করোনাভাইরাস মহামারীতে ছয় মাসে বিশ্বজুড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যেই বাতাসে করোনাভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আনুষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন ২০০ জনের বেশি গবেষক।

নিউইয়র্ক টাইমস ও লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের শুধু দুটি ধরনের সংক্রমণ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে আশপাশের কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির কাছ থেকে শ্বাস-প্রশ্বাসের ফোঁটা (ড্রপলেট) শ্বাসের মাধ্যমে ঢুকে গেলে সংক্রমণ ছড়ায়। আরেকটি হচ্ছে দূষিত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করার মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা যুক্তি দেখান যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকায় ক্রমবর্ধমান প্রমাণকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। সংক্রমণের ক্ষেত্রে তৃতীয় যে আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সে বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অস্বীকার করে আসছে।

গবেষকেরা বলছেন, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, শ্বাস-প্রশ্বাসের ড্রপলেটের ক্ষুদ্র সংস্করণ বা অ্যারোসল কণা দীর্ঘ সময় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এটি কয়েক মিটার পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে। এটি যেসব ঘরে আলো-বাতাস কম বা বাসসহ অন্যান্য বন্ধ জায়গায় বেশি মারাত্মক হতে পারে। এমনকি এসব জায়গায় ১ দশমিক ৮ মিটার দূরত্ব রেখেও কোনো লাভ হয় না।

অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির বিজ্ঞান এবং পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক লিডিয়া মোরাউসকা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে তারা একটি খোলা চিঠি লিখেছেন, যাতে জাতিসংঘের এ সংস্থাকে এ ঝুঁকি সম্পর্কে যথাযথ সতর্ক করতে ব্যর্থ বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ওই চিঠিতে ৩২টি দেশের ২৩৯ জন গবেষক স্বাক্ষর করেছেন। আগামী সপ্তাহে একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এটি প্রকাশ হতে পারে।

সাক্ষাৎকারে গবেষকেরা বলেছেন, অ্যারোসল সংক্রমণ বা বাতাসে ভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি কয়েকটি বিস্তৃত সংক্রমণের ব্যাখ্যা করার একমাত্র উপায় হতে পারে। এর মধ্যে চীনের রেস্তোরাঁয় বা ওয়াশিংটনে শিল্পীদের মহড়ার সময় আগাম সতর্কব্যবস্থা নেওয়ার পরেও সংক্রমণের বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে অ্যারোসলের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি স্বীকার করা হলেও বলা হচ্ছে, এটি কেবল ইনটিউবেশনের মতো চিকিৎসা কার্যক্রমের সময় ছড়াতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ বেনডেট্টা অ্যালেগারাঞ্চি বলেন, মোরাউসকা ও তার গবেষক দল পরীক্ষাগারের তত্ত্বের ভিত্তিতে এ কথা বলছেন। তাদের মাঠপর্যায়ের কোনো প্রমাণ নেই। আমরা এ বিতর্কে তাদের অবদান ও মতামতকে সম্মান দিচ্ছি।

সাপ্তাহিক টেলিকনফারেন্সে ৩০ জনের বেশি আন্তর্জাতিক গবেষক দলের অধিকাংশই বাতাস থেকে সংক্রমণের বিষয়টি যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে সঠিক উপায়ে মাস্ক পরলে তা থেকে মুক্ত থাকা যাবে। এ ছাড়া ঘরে যথেষ্ট আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.