Sylhet Today 24 PRINT

নতুন সিদ্ধান্তে সরকার, আফগান পরিচয়পত্রে থাকবে মায়ের নামও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ছবি : সংগৃহীত

আফগানিস্তানে নারীদের নাম যেন থেকেও নেই, অদৃশ্য। এখানে মেয়েদের পরিচয় শুধুই— কারও মা, কারও মেয়ে, কারও বোন কিংবা কারও স্ত্রী। এমনকি বিয়ের কার্ড বা কবরেও থাকে না তাদের নাম। কিন্তু এবার থেকে এই নিয়মেই পরিবর্তন আসতে চলেছে।

আজ থেকে তিন বছর আগে হেরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, ২৮ বছর বয়সি লালে ওসমানি নামের এক আফগান তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তোলেন ‘হোয়্যার ইজ মাই নেম’।

ওসমানির তোলা সেই প্রশ্নের জবাব অবশেষে মিলেছে। গত সপ্তাহে জনগণনা আইন সংশোধন করেছে আফগান সরকার। তবে এখনও পার্লামেন্টে নতুন এই আইন পাশ হওয়া বাকি। গ্রীষ্মের ছুটির শেষে পার্লামেন্ট চালু হলেই এই আইন পাশ হবে বলে আফগান গণমাধ্যমের সূত্রে জানা যায়।

আফগান তরুণীর দাবি ছিল, জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার পাশাপাশি মায়ের নামও থাকতে হবে।

ওসমানির সেই প্রশ্নে ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সরব হন দেশবিদেশের লোক। ওসমানি প্রশ্ন তোলেন, ‘দেশের জনগণনা আইন বিশেষ করে সেই সব মেয়েকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য, যারা স্বামীবিচ্ছিন্না, যারা যুদ্ধে স্বামীকে হারিয়েছেন কিংবা যাদের স্বামী নিখোঁজ। সম্পত্তির অধিকার কিংবা অভিভাবকত্ব, সব কিছুতেই কেন বঞ্চিত থাকবেন তারা? কেন বাবার অনুপস্থিতিতে মা তার সন্তানের পাসপোর্ট পর্যন্ত করাতে পারবেন না?’

বিজ্ঞাপন

অনেকেই ওসমানির পাশে দাঁড়ান, বিরোধিতাও করেন অনেকে। কারণ যে দেশে মেয়েদের নাম মুখে আনাও ‘অশালীন’, সে দেশে পরিচয়পত্রে মেয়েদের নাম ‘সমাজবিরোধী’।

আফগান পার্লামেন্টের ২৫০ সদস্যের মধ্যে ৬৮ জন নারী। কিন্তু তাদের অনেকেই এখনও সন্তানের ‘অভিভাবক’ হতে পারেননি। স্বামীর অনুপস্থিতিতে ব্যাঙ্ক থেকে টাকাও তুলতে পারেন না তারা!

যুদ্ধবিরতি, মার্কিন সেনা সরানো ইত্যাদি বিষয়ে শীঘ্রই তালিবানের সঙ্গে শান্তি-বৈঠকে বসতে চলেছে আফগান সরকার। তার মাঝে এই আইন সংশোধন নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। পাঁচ বছরের শাসনে মেয়েদের পড়াশোনা, চাকরি, সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল তালিবান। আফগান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উইমেন নেটওয়ার্ক’-এর চেয়ারপার্সন মেরি আকরামির কথায়, ‘ওসমানির চেষ্টা এবং সরকারের পদক্ষেপ— দুই-ই উল্লেখযোগ্য। মেয়েরা এখানে জন্ম থেকে পর্দার আড়ালে, মৃত্যুর পরেও আড়ালে থেকে যায়।’

তবে আইন সংশোধন, আর সমাজ সংশোধনে অনেক পার্থক্য। আইনে পরিবর্তন এলেই যে মানুষ মন থেকে তা মেনে নিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে, এমনটা নাও হতে পারে। ইরফান তালাশ নামে এক স্কুল পড়ুয়ার বিদ্রুপ, ‘এটাই যেন আফগানিস্তানের একমাত্র সমস্যা ছিল!’ আন্তর্জাতিক কূটনীতি বিশেষজ্ঞ নাসরাতুল্লাহ হকপালের বক্তব্য, ‘এ সব আসলে ইউরোপ আর আমেরিকাকে খুশি করার কৌশল।’

সূত্র: রয়টার্স

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.