Sylhet Today 24 PRINT

ব্রিটেনে ফিরতে পারবে না আইএসফেরত শামীমা

জুয়েল রাজ, লন্ডন  |  ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আইসিএস ফেরত শামীমা বেগম তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আইনী অধিকার  হারিয়েছেন। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার রায় দিয়েছে যে তাকে তার মামলা করতে দেশে ফেরত দেওয়া উচিত নয়।

এই সিদ্ধান্তকে সরকার বিজয় হিসাবে দেখছেন, কারণ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসাবে সরকার শামীমাকে ব্রিটেনে আসতে দিতে রাজী নয় বলে আদালতে আবেদন করেছিল।

শামীমাকে ব্রিটেনে নিষিদ্ধ  ঘোষণা দিয়ে বিচারপতি লর্ড রেড বলেছেন, 'সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতিক্রমে স্বরাষ্ট্রসচিবের সকল আপিল মঞ্জুর করে এবং শামীমা বেগমের ক্রস আবেদন খারিজ করে দেয়। তবে, শামীমা বেগম তার নাগরিকত্ব হরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তার আবেদনটি এখনও চালিয়ে যেতে পারেন, কিন্তু সেটি ব্রিটেনে এসে লড়ার আর সুযোগ নাই।

মানবাধিকার সংগঠন লিবার্টি, যেটি শামীমা বেগমের হয়ে মামলা লড়েছিল, লিবার্টি বলছে, সুপ্রিম কোর্টের রায় ‘একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক নজির’ স্থাপন করেছে।

লিবার্টির আইনজীবী রোজি ব্রিজহাউস বলেন, একটি গণতান্ত্রিক সরকার এইভাবে কারো নাগরিকত্ব  বাতিল করতে পারে না। যদি কোনও সরকারকে সুষ্ঠু বিচারের মৌলিক সুরক্ষাগুলি ব্যতীত,  নিষেধাজ্ঞার মতো চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়, তবে এটি একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক নজির স্থাপন করে।

সরকারের নিরাপত্তা পরিষেবাগুলি সিরিয়া থেকে শত শত লোকের নিরাপদে ফিরে আসার ব্যবস্থা করেছে। তবে শামীমা বেগমকে উদ্দেশ্য মূলক ভাবে, লক্ষ্য  হিসাবে সরকার বেছে নিয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি ন্যায়বিচারের কাজ করে না, এটি সন্ত্রাসবিরোধী কৌশল ব্যর্থ কৌশল এবং আইন-আদালতকে  অবহেলা করার অন্য একটি উদাহরণ- বলছে লিবার্টি।

বিজ্ঞাপন



উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি সাবেক হোম সেক্রেটারী সাজিদ জাভিদ শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন। সাবেক হোম সেক্রেটারির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে নাগরিকত্ব ফিরে পাবার দাবিতে আপিল করে শামীমার পারিবার। গত বছর জুলাই মাসে কোর্ট অব আপিলের এক রায়ে বলা হয়েছিল, ন্যায্য এবং কার্যকর আপিলের একমাত্র পথ হবে যদি শামীমাকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে এনে শোনানিতে অংশ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।

এরপর গত নভেম্বরে কোর্ট অব আপিলের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে হোম অফিস। হোম অফিসের যুক্তি হল, শামীমা ব্রিটেনে ফিরলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আরো ঝুঁকির মুখে পড়বে।

টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনালগ্রীন একাডেমির ছাত্রী শামীমা বেগম, খাদিজা সুলতানা এবং আমিরা আবাসি ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি গেটউইক এয়ারপোর্ট থেকে তুরস্কের ইস্তান্বুল হয়ে সিরিয়ার রাক্কায় পৌঁছান। তখন যাদের বয়স ছিল যথাক্রমে ১৬, ১৬ এবং ১৫। শামীমার বাকী দুই বান্ধবী নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিফিউজি ক্যাম্প আল জোর থেকে টাইমসকে দেওয়া এক স্বাক্ষাতকারে ব্রিটেনে ফেরার আকুতি জানিয়েছিলেন শামীমা বেগম। তখন তিনি ৯ মাসের সন্তান সম্ভাবা ছিলেন। তবে মার্চেই তার নবজাতকের মৃত্যু হয়। এর আগে তার আরো দুটি সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আইএস যোদ্ধা ড্যাচ স্বামীর সঙ্গে ২০১৭ সালে রাক্কা থেকে এই ক্যাম্পে আশ্রয় নেন তিনি। শামীমার বয়স বর্তমানে ২১ বছর।

টাইমসের সঙ্গে স্বাক্ষাতকারে ব্রিটেনে ফেরার কথা প্রকাশের সাথে সাথেই সাবেক হোম সেক্রেটারি সাজিদ জাভিদ শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.