Sylhet Today 24 PRINT

মিঠুন-দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ০৮ মে, ২০২১

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের উত্তাপ এখনও রয়েছে। নির্বাচন-পরবর্তী সংঘর্ষ-সহিংসতাও অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। সঙ্গে চলছে মামলা। নির্বাচনী প্রচারে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এ ছাড়া বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে তৃণমূল। কলকাতা ও পুরুলিয়ায় বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি মামলা করেছে দলটি।

এদিকে এবারের নির্বাচনে আদিবাসী এলাকায় ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। নাগরিকত্ব আইন-২০১৯ এবং এনআরসির ভয়েই বিজেপি থেকে আদিবাসীরা মুখ ফিরিয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতারা। খবর এনডিটিভি ও পিটিআইর।

বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার মানবাজার এলাকার বোরো থানায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন পুরুলিয়ার তৃণমূল নেতা সুজিত কুমার মাহাত। তার অভিযোগ, ২৩ মার্চ পুরুলিয়ার বান্দোয়ান বিধানসভার প্রচারে এসে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বোরো হাটতলা ময়দানে বিজেপির জনসভায় মমতাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, বারমুডা পরুন দিদি। মমতা আহত হওয়ার পর এ ধরনের মন্তব্য করার প্রতিবাদে ঘটনার দেড় মাস পর এই মামলা হলো।

গত ১০ মার্চ মমতা পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বিভিন্ন মন্দিরে পূজা দিয়ে ফেরার সময় আহত হন। এরপর থেকে হুইলচেয়ারে নির্বাচনী প্রচারে নামেন তিনি। এতে দিলীপ কটাক্ষ করে মমতার উদ্দেশে এ মন্তব্য করেন।

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার কলকাতার মানিকতলা থানায় বলিউড তারকা মিঠুন চক্রবর্তী ও দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা হয়েছে। এখানে অভিযোগ করা হয়েছে, মিঠুন চক্রবর্তী ও দিলীপ ঘোষ নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তৃণমূলকে হেয় করেছেন। রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত করেছেন। ভোটে হিংসার প্রশ্রয় দিয়েছেন। উত্তর কলকাতার যুব তৃণমূল কংগ্রেস মানিকতলা থানায় এই অভিযোগ এনে এফআইআর করে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, মিঠুন অভিনীত ছবির ডায়ালগ আউড়িয়ে সাধারণ মানুষকে উস্কানি দিয়েছেন। তৃণমূলকে হেয় করেছেন। আবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের সময় কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় বলেছিলেন, জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।

এদিকে বিধানসভার নির্বাচনের ফল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মারা যান ১৪ জন। এর মধ্যে বিজেপির ৯ জন, তৃণমূলের চারজন এবং আইএসএফের একজন। এ ছাড়া রাজ্যব্যাপী নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারে তৃণমূল নেতা ও সাবেক বিধায়ক উদয়ন গুহর ওপর হামলা হয়েছে। তার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উদয়ন গুহ এবার তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে পরাস্ত হন। অন্যদিকে, শুক্রবার কোচবিহারের দিনহাটায় বিজেপির এক নেতার গাড়ি ভাঙচুর করেছে তৃণমূল। হামলাও হয়েছে দুই বিজেপি নেতার ওপর।

অন্যদিকে, ২০১৯ সালের লোকসভায় বিজেপি ভোট পেলেও পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী এলাকা ফের ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে গেছে। নাগরিকত্ব আইন-২০১৯ এবং এনআরসির ভয়েই বিজেপি থেকে আদিবাসীরা মুখ ফিরিয়েছে বলে নেতারা জানাচ্ছেন।

২০২১ সালের বিধানসভার যা ফলাফল তাতে স্পষ্ট, রাজ্যের বহু আদিবাসী এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস জয় পেয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা আদিবাসী এলাকায় জয়ের জন্য বহু চেষ্টা করলেও আদিবাসীরা বিজেপির ওপর ভরসা রাখেনি।

আদিবাসী নেতা মিলন মান্ডি জানান, এনআরসি-সিএএ থেকে বাঁচতে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে এনআরসি করবে এই ভয় ছিল, তাই পছন্দ না হলেও মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে।

শুধু কি এনআরসির ভয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে আদিবাসীরা নাকি অন্য কারণ আছে? আদিবাসী নেতার জবাব, সারাদেশে বিজেপি দলিত ও আদিবাসীদের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে তা ভালোভাবে নেয়নি। তাছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক পরিশ্রম করেছে হারানো ভোট ফিরে পেতে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.