Sylhet Today 24 PRINT

যেসব দেশে মুসলিম মহিলাদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক |  ২০ নভেম্বর, ২০১৫

জিহাদি হামলা ঠেকাতে সেনেগালের সরকার সেদেশে মহিলাদের বোরকা পড়া নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে। সরকারের যুক্তি হচ্ছে জিহাদি হামলায় যে ধরণের বোমা বা বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয় বোরকার নীচে তা লুকিয়ে রাখা যায় খুব সহজে। খবর সূত্র : বিবিসি।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশে বোরকা নিষিদ্ধ করার এই প্রস্তাবে অনেকেই বিস্মিত। বিষয়টি বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে সেদেশে।

মূলত নাইজেরিয়া ভিত্তিক জঙ্গী গোষ্ঠী বোকো হারামের হুমকির মুখে সেনেগালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুলায়ে দাউদা বোরকা নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। সরকার বলার চেষ্টা করছে, তাদের এই প্রস্তাব কেবলই নিরাপত্তার স্বার্থে, এটাকে ইসলাম বিরোধী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা ঠিক হবে না।

মুসলিম মহিলাদের জন্য বোরকা নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। এর আগে আরও অনেক দেশে বোরকা এবং হিজাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মধ্য আফ্রিকার তিনটি দেশে বোরকা নিষিদ্ধ। এগুলো হচ্ছে শাড, গ্যাবন এবং কঙ্গো ব্রাজাভাইল।

গত জুলাই মাসে ক্যামেরুনের কেবল উত্তরাঞ্চলে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। আর তাদের পথ অনুসরণ করে কঙ্গো এবং গ্যাবন একই সিদ্ধান্ত নেয়।

২০১০ সালে ফ্রান্স যখন প্রথম ‘মুখ ঢাকা পোষাক’ নিষিদ্ধ করে তখন তা ইউরোপে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করে। ইউরোপে ফ্রান্সই ছিল প্রথম দেশ যারা এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়।

ফ্রান্সে কেবল বোরকা নয়, মুখ ঢাকা যে কোন পোশাক, মুখোশ, বালাক্লাভা, হেলমেট বা হুড – যা পরিচয় গোপন রাখতে সহায়তা করে, তা নিষিদ্ধ।

ফ্রান্সে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মুসলিম বসবাস করে। পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম। কিন্তু সেখানে মাত্র দু হাজার মুসলিম মহিলা এই আইন হওয়ার সময় বোরকা পড়তো।

সেসময়কার ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি ঘোষণা করেন যে ফ্রান্সে বোরকা পড়া চলবে না। ফ্রান্সের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের সঙ্গে এটিকে সংঘাতপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন তিনি।

ফ্রান্সে বোরকা পড়লে ৩২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান আছে আইনে।

এর বিরুদ্ধে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত পর্যন্ত গিয়েছিল ফ্রান্সের মুসলিমরা। কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হয়নি।

ফ্রান্সের পথ ধরে ২০১২ সালে বেলিজিয়ামে একই ভাবে নিষিদ্ধ করা হয় বোরকা।

নেদারল্যান্ডসের স্কুলগুলোতে ২০০৭ সালে বোরকা বা মুখ ঢাকা নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা পরে অন্যান্য প্রকাশ্য স্থানেও কার্যকর করা হয়েছে।

স্পেনের বার্সেলোনাতেও মার্কেট বা পাবলিক বিল্ডিংগুলোতে বোরকা নিষিদ্ধ।

তবে পশ্চিম ইউরোপে যখন এরকম পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তখন উল্টো পথে হেঁটেছে আবার অনেক দেশ।

তুরস্কে বহু দশক ধরে বোরকা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে ক্ষমতাসীন এ কে পার্টি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

সিরিয়াতেও বোরকা পড়ার বিরুদ্ধে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু ২০১১ সালে সেখানে শিক্ষকদের নিকাবে মুখ ঢাকার অনুমতি দেয়া হয়।

তিউনিসিয়াও ২০১১ সালে মাথা এবং মুখ ঢাকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

এর আগে পর্যন্ত তিউনিসিয়ায় বোরকা এবং হিজাবের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ছিল বেশ কঠিন। এমনকি রাস্তায় কাউকে হিজাব পরিহিত অবস্থায় দেখলে পুলিশ তাকে থামিয়ে হিজাব খুলে নেয়ার নির্দেশ দিত।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.