Sylhet Today 24 PRINT

‘বিশেষ ড্রাগ’ নেয় আইএস সদস্যরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ২৩ নভেম্বর, ২০১৫

সিরিয়ায় আইএস জিহাদিরা প্রচণ্ড নেশা সৃষ্টিকারী ছোট একটি বড়ি খেয়ে দিনরাত যুদ্ধ করছে বলে সন্দেহ করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর ওই বড়ির নাম ক্যাপ্টাগন। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বড়ি শুধুমাত্র সিরিয়াতেই উৎপাদিত হয়। তবে পাওয়া যায় পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার মতো এই ড্রাগের মারাত্মক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্রচণ্ড নেশা সৃষ্টিকারী এই বড়িটি বিক্রি করে পাওয়া কোটি কোটি ডলার চলে যায় যুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার কালো বাজারে। এসব অর্থ দিয়ে জিহাদি যোদ্ধারা নতুন নতুন অস্ত্র কিনে থাকে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ক্যাপ্টাগন নামের শক্তিশালী এই ড্রাগ খুব দ্রুত কাজ করে এবং এটি খেয়েই সিরিয়ার যোদ্ধারা ঘুম বিশ্রাম ফেলে দিনে রাতে সর্বক্ষণ যুদ্ধ করতে পারছে। এছাড়াও নেশা সৃষ্টিকারী এই বড়ি খাওয়ার কারণেই জিহাদিরা কোনো ধরনের বিচার বিবেচনা ছাড়াই নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালাতে পারছে।

এই ট্যাবলেট খেয়েছেন লেবাননের এরকম এক ব্যক্তি বলেন, ড্রাগটি নিলে আপনি ঘুমাতে তো দূরের কথা, চোখও বন্ধ করতে পারবেন না।

বিবিসির একটি তথ্যচিত্রে আরেকজন ওই ট্যাবলেট গ্রহণকারী বলেছেন, এটা একবার খেলে আপনি আর কিছুতেই তা খাওয়া বন্ধ করতে পারবেন না।

তিনি আরো বলেন, ‘মনে হবে আমি পৃথিবীর শীর্ষে অবস্থান করছি। আমার যে ক্ষমতা তা আর কারো নেই।’

অন্য এক ব্যক্তি বলেন, ‘ওই বড়ি খাওয়ার পর মনে হয়েছে এই পৃথিবীর আর কেউ আমাকে আক্রমণ করতে পারবে না’।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের কারণে সিরিয়া এখন এই ড্রাগের সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী ও ভোক্তা দেশে পরিণত হয়েছে।

ষাটের দশক থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতে ক্যাপ্টাগন পাওয়া যায়। বিষণ্ণতা কাটাতে তারা এই ওষুধ গ্রহণ করতো। তবে পরে এটি নেশা সৃষ্টিকারী ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করলে বেশিরভাগ দেশেই এটা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এখনও এই ড্রাগ পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়নি।

পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা এই ড্রাগ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করছে। সৌদি আরবেও এর ব্যাপক ব্যবহার আছে। ধারণা করা হয় যে সৌদি আরবে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ এই নেশার জন্যে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। পরে এই ড্রাগের উৎস হয়ে উঠে সিরিয়া এবং সেখানে থেকে এই ড্রাগটি ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে থাকে।

সিরিয়ায় রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, সশস্ত্র বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়া ও সীমান্ত এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নাজুক হয়ে যাওয়ার পর এই ড্রাগ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

আগে এই ট্যাবলেট উৎপাদিত হতো লেবাননের বেকা উপত্যকায় আর এখন সেটা হচ্ছে সিরিয়ায়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.