Sylhet Today 24 PRINT

শান্তিতে নোবেল: যাদের নিয়ে আলোচনা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৮ অক্টোবর, ২০২১

আজ শুক্রবার এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। গত বছর এই পুরস্কার পেয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংঘাতপূর্ণ বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্বীকৃতি হিসেবে সংস্থাটিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ৩২৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। নরওয়ের আইনপ্রণেতাদের ওপর জরিপ চালিয়ে এবার পুরস্কারের তালিকায় জলবায়ু অ্যাকটিভিস্ট গ্রেটা থুনবার্গ, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী সেভেটলানা টিখানোভসকায়া ও অ্যালেক্সেই নাভালনিকে এগিয়ে রেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
প্রায় দুবছর আগে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এই ভাইরাস আমাদের নিত্যদিনের জীবনকে নতুন রূপ দিয়ে যাচ্ছে আর রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচনায় প্রাধান্য বিস্তার করছে। করোনা ভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রবিন্দুতেই থেকে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত বছর শান্তিতে নোবেল পাওয়ার তালিকায় এগিয়ে ছিল জাতিসংঘের এই সংস্থা। তবে সেটি পেয়েছিল বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।

চলতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হচ্ছে বিশ্বের সব দেশে করোনার টিকার ন্যায্য ও সমান বণ্টন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম টিকার বিতরণ শুরু করে সংস্থাটি। এরপর ১৪৩টি দেশে ৩ কোটি ১০ লাখ ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে কোভ্যাক্স কর্মসূচির মাধ্যমে।

অ্যালেক্সেই নাভালনি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের একজন নাভালনি। দেশটির রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এ বছর শান্তিতে নোবেলের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়েছে।

২০২০ সালের আগস্টে তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি তাকে এই বিষপ্রয়োগ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। জার্মানির হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে গত জানুয়ারিতে তিনি দেশে ফেরেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন। গত আগস্টে নাভালনির বিরুদ্ধে নতুন মামলা করা হয়। ওই মামলায় ২০২৪ সাল পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে নাভালনিকে। এর মানে দাঁড়াচ্ছে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না নাভালনি।

বন্দী নাভালনিকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, যার প্রতিবাদে রাশিয়াজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেও পুতিনের সমালোচনায় অটল রয়েছেন নাভালনি।

গ্রেটা থুনবার্গ
সুইডেনের কিশোরী জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ২০১৯ সালে টাইম সাময়িকীর পার্সন অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাব্য একটি নাম গ্রেটা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চলতি বছর নোবেল পেয়ে যেতে পারেন তিনি।

২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক স্কুল জলবায়ু বিক্ষোভ শুরু করে গ্রেটা থুনবার্গ। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে বৈশ্বিক শক্তিগুলোর প্রতি ক্রমাগত আহ্বান জানিয়ে আসছে এই কিশোরী। গত মাসে ইয়োথ ৪ জলবায়ু সম্মেলনে ফাঁকা প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ নিতে গড়িমসির জন্য বৈশ্বিক শক্তিগুলোর সমালোচনায় সোচ্চার হতে দেখা গেছে তাকে।

এই সময়ে গ্রেটাকে নোবেল দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, আসছে নভেম্বরে জাতিসংঘের আসন্ন জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে (কপ ২৬) অংশগ্রহণকারীদের একটি জোরালো বার্তা দেওয়া।

সেভেটলানা টিখানোভসকায়া
বেলারুশের মানবাধিকার কর্মী সেভেটলানা টিখানোভসকায়া। গত বছর মে মাসে বেলারুশের বিরোধী নেতা সের্গেই টিখানোভসকায়াকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন ইউরোপের সর্বশেষ একনায়কখ্যাত প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেনকো। এরপর স্বামী সের্গেইর বদলে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সেভেটলানা। এভাবেই একজন মা বিশাল গণ-আন্দোলনের নেতৃত্বে নেমে যান।

২০২০ সালের বেলারুশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগের পরেও নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন লুকাশেনকো। পরে দুই শিশুকে নিয়ে সেভেটলানা টিখানোভসকায়া লিথুনিয়ায় পালিয়ে যান।

সেখান থেকে লুকাশেনকোর ২৬ বছর শাসনের অবসানের দাবিতে লড়াইয়ে নির্বাসিত সরকার কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের নেতৃত্ব দেন এই নারী। এ ছাড়া স্বামীর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা রাখছেন তিনি।

জো বাইডেন
২০২১ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন বাইডেন। এরপর তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের রেখে যাওয়া একটি বিভক্ত দেশে বৈশ্বিক মহামারির বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে তাঁকে। দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েক ডজন নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি। এর মধ্যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে আসার সিদ্ধান্তটিও রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় ট্রাম্পের বন্ধ করে দেওয়া তহবিলও ফিরিয়ে দিতে শুরু করেন তিনি। এ ছাড়া মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করেন বাইডেন।

২০২০ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তখনকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এ ছাড়া চলতি বছর নোবেল পাওয়ার তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আর্ডান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আন্দোলনকারী সংস্থা রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডারস, বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচআরসি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.