আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ১৯ এপ্রিল, ২০২২
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার (ব্লাসফেমি) দায়ে শ্রীলঙ্কার এক নাগরিককে পিটিয়ে হত্যার অপরাধে সোমবার ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত ডিসেম্বরে সিয়ালকোট শহরের এক কারখানার ম্যানেজার ৪৮ বছর বয়সী প্রিয়ন্তা দিয়াওয়াদানেজকে নির্মমভাবে পিটিয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও দোষী সাব্যস্ত ৮৮ জনের মধ্যে নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকিদের দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একজন বিদেশিকে এভাবে হত্যার ঘটনাটি পাকিস্তানকে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একে ‘লজ্জার দিন’ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত জনতা দিয়াওয়াদানেজকে তার কাজের জায়গা থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে বেদম পেটাচ্ছে। লোকটির মৃত্যু ঘটলে তারা লাশটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ভিড়ের মধ্যে কয়েকজনকে লাশের সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেখা যায়।
এ ঘটনার পরও প্রিয়ন্তা দিয়াওয়াদানেজকে ইন্টারনেটে পাকিস্তানিসহ অনেকে তিক্ত ভাষায় গালমন্দ করেন। তার স্ত্রী নিলুশি দিশানায়েকা একে ‘খুবই অমানবিক’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
শ্রীলঙ্কার নাগরিক দিয়াওয়াদানেজ ইসলামের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নাম লেখা পোস্টার ছিঁড়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরে সহিংসতা শুরু হয়েছিল। তবে একজন সহকর্মী ঘটনার সময়ে স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছিলেন, দিয়াওয়াদানেজ কোনো পোস্টার ছেড়েননি। ভবনটি পরিষ্কার করার কথা ছিল বলে পোস্টারগুলো তুলে ফেলেছিলেন মাত্র ।
শত শত লোকের অংশগ্রহণে নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানিদের হতবাক করে। পাকিস্তানে অনেক সময় ভিত্তিহীন ধর্ম অবমাননার অভিযোগেও অনেকের বিরুদ্ধে নির্মমতার অভিযোগ উঠেছে। মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, অনেক সময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগের শিকার হন।