Sylhet Today 24 PRINT

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফগানিস্তান, সহায়তা চায় তালেবান

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৩ জুন, ২০২২

আফগানিস্তানে পাকতিকা প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। অনেক বাড়িঘর ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি।

এমন অবস্থায় বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে।

ভূমিকম্পে দক্ষিণ-পূর্ব পাকতিকা প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জরুরি আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য কাজ শুরু করেছে।

ধসে পড়া ভবনের নিচে অনেকেই চাপা পড়েছে। ভারি বৃষ্টিপাত ও পর্যাপ্ত লজিস্টিকের অভাবে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

জীবিত ও উদ্ধারকারীরা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়া গ্রাম, রাস্তাঘাট ও মোবাইল টাওয়ারের কথা জানিয়েছে।
ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফগানিস্তান, সহায়তা চায় তালেবান

দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে হওয়া সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা বর্তমান তালেবান সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভূমিকম্পের আগে আমাদের পর্যাপ্ত জনবল ও সুযোগ-সুবিধা ছিল না, যতটুকু ছিল ভূমিকম্প তাও ধ্বংস করে দিয়েছে। কয়জন চিকিৎসাকর্মী বেঁচে আছে, জানি না।

গত আগস্টে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটি মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে আছে। তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আব্দুল কাহার বলখি আফগান সরকারের সীমাবদ্ধতাও স্বীকার করে নিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আর্থিকভাবে জনগণকে যতটা সহায়তা দেয়া প্রয়োজন ততটা দিতে অক্ষম বর্তমান প্রশাসন।‘

বলখি জানিয়েছেন, সাহায্য সংস্থা, প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বশক্তিগুলো সাহায্য করছে। কিন্তু তার মতে, সহায়তা আরও বাড়ানো দরকার, কারণ এটি একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প, যা কয়েক দশকের মধ্যে হয়নি।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় পুরোপরি সক্রিয় হয়েছে জাতিসংঘ। এরই মধ্যে সংস্থাটি বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার কাছে ১৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছে।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল পাকতিকার খোস্ত শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে, ভূমিকম্প নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইএমএসসি জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পাশাপাশি পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

আর্থিকভাবে জনগণকে যতটা সহায়তা দেয়া প্রয়োজন ততটা দিতে অক্ষম বর্তমান প্রশাসন।

এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে পাকতিকার গায়ন ও বারমাল জেলায়। গায়নের একটি গ্রাম পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে।

পাকতিকার একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসাকর্মীরাও রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের আগে আমাদের পর্যাপ্ত জনবল ও সুযোগ-সুবিধা ছিল না, যতটুকু ছিল ভূমিকম্প তাও ধ্বংস করে দিয়েছে। কয়জন চিকিৎসাকর্মী বেঁচে আছে, জানি না।’

পাকতিকার একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে মোবাইল টাওয়ারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ করা আরও কঠিন হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির অবস্থান টেকটোনিকভাবে সক্রিয় অঞ্চলে।

জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের রিপোর্ট অনুসারে, গত এক দশকে দেশটিতে ভূমিকম্পে ৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। দেশটিতে ভূমিকম্পে বছরে গড়ে মারা যায় ৫৬০ জন।

গত জানুয়ারিতেও দেশটির পশ্চিমে ভূমিকম্পে ২০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় ও শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.