Sylhet Today 24 PRINT

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট পদে রনিল নয় এগিয়ে সাংবাদিক দুল্লাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ২০ জুলাই, ২০২২

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট পদে রনিল বিক্রমাসিংহেসহ তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক সাংবাদিক ও এমপি দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা।

বুধবার (২০ জুলাই) দেশটির ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে আয়োজিত ভোটে নির্বাচিত করা হবে কে হতে যাচ্ছেন বিপর্যস্ত দেশটির প্রধান। এরই মধ্যে অধিবেশন শুরু হয়ে গেছে।

তৃতীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বামপন্থি নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়াকা। তবে পার্লামেন্টে তার দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনা পার্টির আসন রয়েছে শুধু তিনটি।

পার্লামেন্টে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া হিসেবে এই তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গতকাল মঙ্গলবার সফল ও চূড়ান্তভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

আজ বুধবার শুরু হওয়া অধিবেশনের ভোটে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে। পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবিবর্ধনের উপস্থিতিতে সকাল ১০টায় শুরু হয় অধিবেশন।

‘শ্রীলঙ্কা পোডুজানা পেরামুনা’ (এসএলপিপি) দলের এমপি দুল্লাস বিক্ষোভকারীদের কাছে ব্যাপকমাত্রায় জনপ্রিয়।

যদিও ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের তুলনায় রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ে থাকার অভিজ্ঞতায় যোজন যোজন পিছিয়ে রয়েছেন তিনি।

এদিকে বুধবারের পার্লামেন্ট অধিবেশনে ভোটাভুটির আগেই এসএলপিপি এমপি দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমাকে সমর্থনে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (টিএনএ) এমপি এম এ সুমানথিরানরন।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় টিএনএর এমপি এম এ সুমানথিরানরন এসএলপিপি এমপি দুল্লাসের প্রতি দলের সমর্থনের আশ্বাস দেন।

সেই সঙ্গে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির ৬ এমপি, স্বতন্ত্র দলগুলোর জোট তামিল প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স, শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেস এবং অল সিলন মাক্কাল কংগ্রেসের নির্বাচিত এমপিরা আলাহাপ্পেরুমার জয়ের প্রতি দলীয় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

তীব্র বিক্ষোভের মুখে গেল সপ্তাহে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপ হয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। এর আগে তিনি পদত্যাগপত্রে সইও করেন। এর পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। এর পর থেকে প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ে।

এদিকে বিক্ষোভকারীরা রনিলকে মেনে নেননি। তারা গোতাবায়াসহ রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছেন।

এর আগে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট পদে স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবিবর্ধনের দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিল।

অর্থনৈতিক সংকট ও সামাজিক অস্থিরতায় বিপর্যস্ত দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটিতে গত ১৭ জুলাই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।

শ্রীলঙ্কা সরকারের নোটিশে বলা হয়, জননিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা এবং মানুষের কাছে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেয়া স্বাভাবিক রাখতে রনিল জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে, সরকারবিরোধী টানা বিক্ষোভের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান গোতাবায়া রাজাপাকসে। পরে সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। এর আগেই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রনিল বিক্রমাসিংহে শপথ নেন গত শুক্রবার।

শপথ নেয়ার পরপরই সর্বদলীয় সরকার গঠনে কাজ করতে আইনপ্রণেতাদের নির্দেশ দেন রনিল।

কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।

এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।

বিক্ষোভ দমাতে এপ্রিলের শুরুতে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন মাহিন্দার ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হয়। উল্টো মাত্রা আরও তীব্র হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মে মাসে পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।

এই পর্যায়ে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হন এক এমপি। অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপির বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.